কয়েক বছরেই নারীদের ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা হয়েছে দ্বিগুণ। জাতীয় ক্যানসার ইনস্টিটিউটের গবেষণা বলছে, পরিবারে ধূমপায়ী পুরুষের উপস্থিতি, কাঁচা তামাক ও ধূমপানে নারীদের আসক্তি এবং চুলোয় কাঠপাতা পোড়ানোর ধোঁয়া এর প্রধান কারণ। সমস্যা সমাধানে রান্নায় ধোঁয়াহীন জ্বালানি ব্যবহার, ধূমপান ও তামাকের আসক্তি কমানোর পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। তবে বংশে ক্যানসার থাকলে এখনই আর না থাকলে ৪০ বছরের পর প্রত্যেক নারীকে ক্যানসারের পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। সময়টিভি।

জীবনের শেষ সময়ে এসে ফুসফুস ক্যানসার সঙ্গী হয়েছে ষাটোর্ধ্ব এ নারীর। চিকিৎসক বলছেন, ক্যানসারের সুনির্দিষ্ট কারণ জানা না গেলেও জীবনের একটি সময় ধূমপানের প্রতি আসক্ত ছিলেন তিনি। ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত অপর আরেক নারী জানান, এক যুগ ধরে চুলোয় রান্নার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। এমন নারীর সংখ্যা দেশে অসংখ্য।

মাটির চুলোয় কাঠ বা পাতা পোড়ানোর ধোয়া নারীদের ক্যানসারের দিকে এগিয়ে নেওয়ার প্রমাণ মিলছে বিভিন্ন গবেষণায়। ২০১৮-১৯ সালের জরিপ বলছে, ক্যানসার ইনস্টিটিউটে ভর্তি হওয়া সাড়ে ৪ হাজার নারীর প্রায় ১২ শতাংশ ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত। এ আক্রান্তের ২৩ ভাগ আবার ধূমপায়ী। বাকি ৭৭ ভাগের কাঁচা তামাক সেবন এবং দীর্ঘদিন মাটির চুলায় রান্নার অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন নারী। আছে বংশগত কারণও।

জাতীয় ক্যানসার ইনস্টিটিউটের মেডিকেল অনকোলজির সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ধোঁয়ার মধ্যে ক্যানসার তৈরি উপাদান পর্যাপ্ত আছে, পুরুষের চেয়ে নারীরা ধোঁয়ার মধ্যে বেশি সময় থাকে সে ক্ষেত্রে তারা ক্যানসার ঝুঁকির মধ্যে থাকে।

ক্রমবর্ধমান হারে বাড়তে থাকা এসব রোগীদের জন্য সেবার সুযোগ সামান্য থাকায় প্রতিরোধের দিকেই বেশি জোর দিয়েছেন জাতীয় ক্যানসার ইনস্টিটিউটের পরিচালক।

কোনো নারী যদি ধূমপান নাও করেন তার পাশে যদি কেউ করেন তাহলেও সে আক্রান্ত হতে পারেন।

জাতীয় ক্যানসার ইনস্টিটিউটের গবেষণা বলছে, আক্রান্ত এ নারীদের ৮০ ভাগের ক্যানসার ধরা পড়ছে চূড়ান্ত ধাপে এসে, যাদের অনেকেই মাঝপথে চিকিৎসা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন নানা কারণে। তাই সুস্থ জীবনে ফেরার সংখ্যাটা নিতান্তই কম।