বিশ্বে মশা থেকে ২০টির মতো রোগ ছড়ায়। প্রায় ১০০ প্রজাতির মশা এসব রোগ ছড়ানোর জন্য দায়ী। বাংলাদেশে মশাবাহিত বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রোগ বিরাজমান। বিশেষভাবে ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও জিকাভাইরাস- মশাবাহিত এই পাঁচটি রোগ দেশে বেশি দেখা দেয়।

কীভাবে এই ৫ রোগ থেকে সুস্থ থাকবেন মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগেই সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, আক্রান্ত হওয়ার পর সঠিক সময়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন না হলে, মৃত্যুসহ নানা ধরনের জটিলতার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই মশার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষা করার কোনো বিকল্প নেই।

পানি জমিয়ে রাখা যাবে না স্যাঁতসেঁতে জায়গা ও স্থির জলযুক্ত স্থানগুলো মশার প্রজননক্ষেত্র হিসেবে সুপরিচিত, বিশেষ করে এডিস মশা। মশার বংশবৃদ্ধি এড়াতে আশপাশের সব এলাকা শুষ্ক ও পরিষ্কার রাখা দরকার। ছোটবড় কোনো গর্তেই যেন পানি জমতে না পারে, তা নজর রাখা প্রয়োজন। বাড়ির ছাদে বা বারান্দার ফুলের টবে, নির্মাণাধীন ভবনে, বাতিল টায়ার কিংবা প্লাস্টিক কন্টেইনার—কোথাও যাতে তিন দিনের বেশি পানি জমা না থাকে, সে ব্যবস্থা করতে হবে।

মশার কামড় থেকে সতর্ক থাকা সংক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য সব সময় ফুল শার্ট ও প্যান্ট পরতে হবে। হালকা রঙের কাপড় পরুন। ‘মসকুইটো রেপেলেন্ট’ ক্রিম বা স্প্রে ব্যবহার করতে হবে। পায়ে মোজা পরিধান করতে হবে। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া দুই রোগের জন্যই দায়ী এডিস মশা সাধারণত সকালের দিকে এবং সন্ধ্যার আগে কামড়ায়। ফলে এই দুই সময় ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ রাখতে হবে।

ঘরের মধ্যে মশা যাতে প্রবেশ করতে না পারে মশাসহ বিভিন্ন পোকামাকড় অন্ধকার ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বেশি আকৃষ্ট হয়। বাড়িতে বসবাসের জায়গাগুলোয় যেন বায়ু চলাচল করে, পরিষ্কার থাকে তা বিশেষভাবে লক্ষ রাখা দরকার। মশার উৎপাত যে সময় বেশি থাকে, সেই সময় বাড়ির জানলা, দরজা বন্ধ রাখুন। জানলা-দরজায় নেট ব্যবহার করে মশার প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করতে পারেন।

ঘুম নিরাপদে হোক দিনে ও রাতে ঘুমের সময় মশার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষা করতে অবশ্যই মশারি ব্যবহার করা উচিত। খোলা ও স্যাঁতসেঁতে জায়গায় ঘুমানো এড়িয়ে চলুন।

ঘরোয়া উপায়ে মশার কামড় থেকে নিজেকে বাঁচান ইউক্যালিপটাস তেল, ল্যাভেন্ডার অয়েল, দারুচিনি তেল, তুলসীপাতার তেল, থাইম অয়েল কয়েক ফোঁটা ময়েশ্চারাইজারের সঙ্গে মিশিয়ে ত্বকের অনাবৃত অংশে ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে বাইরে বের হলেও মশার কামড় থেকে বাঁচবেন।