তিনটি দলে ভাগ হয়ে কাজ করেন তারা। একদল থাকে পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের দায়িত্বে। অনুসরণ করে আরেক দল। আর তৃতীয় দলটির দায়িত্ব অপারেশনের। এভাবেই ১০ জনের একটি দল গত ৫ বছর ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে ছিনতাই করে আসছিল।

চক্রের ৭ জনকে গ্রেফতারের পর পুলিশ বলছে, এরা সবাই সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য। আসামি ধরতে পুলিশ ব্যবহার করেছে আরএফআইডি বা রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন প্রযুক্তি।

গত ২২ অক্টোবর সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলিস্তানের হল মার্কেটের বিভিন্ন পাওনাদারদের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা সংগ্রহ করে ফিরছিলেন বেসরকারি এক প্রিন্টিং অ্যান্ড হার্ডওয়্যার প্রতিষ্ঠানের কর্মী বিপ্লব শিকদার। মার্কেটের ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরায় দেখা যায়, তাকে অনুসরণ করছেন একজন। পল্টন এলাকায় তার গাড়িটিকে গতিরোধ করে একটি মাইক্রোবাস। গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে ছিনিয়ে নেওয়া হয় সব টাকা।

এই ঘটনায় মামলা হলে অনুসন্ধানে নামে পুলিশ। সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করে শনাক্ত করা হয় একজনকে। গ্রেফতারও হয় সে। পরে তার দেওয়া তথ্য এবং প্রযুক্তির সহায়তায় আরও ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

ভুক্তভোগী বিল্পব শিকদার জানান, একটি মাইক্রোবাস আমার গাড়ির সামনে থামিয়ে ৭ জন লোক নেমেছে। এরপর আমাকে বলেছে, আমরা ডিবির লোক দরজা খোল। পরে আমাদের ওই গাড়ির মধ্যে তুলে বেধড়ক মারধর করে টাকা ছিনিয়ে নেয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের ৩ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পুলিশ বলছে, ১০ জনের ছিনতাইকারী দলটি তিনটি ভাগে কাজ করে। একটি দল পরিকল্পনা করে। আরেকটি দল অনুসরণ করে। অপর দলটি অপারেশন পরিচালনা করে। নিজেদের পরিচয় দেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য হিসেবে।

ডিএমপি লালবাগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার বিপ্লাব বিজয় তালুকদার জানান, যারা পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনায় থাকে, তারা মূলত এটার নেতৃত্ব দিয়ে থাকছে। তার মধ্যে একজনের নাম হচ্ছে শহীদ। তার বিরুদ্ধে ৭টি মামলার তথ্য পেয়েছি। আরেকজন হচ্ছে নয়ন, তার বিরুদ্ধে ৩টি মামলা রয়েছে।

আসামি শনাক্তে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ ছাড়াও এবারই প্রথম ব্যবহার করেছে আরএফআইডি বা রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন প্রযুক্তি।

সমন্বিত কাজের মাধ্যমে এই প্রযুক্তির আরো সুফল পাওয়া সম্ভব বলে মনে করে পুলিশ।