খেলা ডেস্ক: ব্রাজিল কোচ তিতে বলিভিয়ার বিপক্ষে গোল না পেলেও নেইমারের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন । তিনি মনে করেন, এ মুহূর্তে দলে নেইমারের প্রয়োজন অনেক বেশি এবং দলের একজন সিনিয়র সদস্য হিসেবে সে তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করায় শিষ্যকে নিয়ে মুগ্ধতা ঝরলো কোচের কণ্ঠে।

এদিকে, সেলেসাওদের কোচ হিসেবে নিজের ৫০তম ম্যাচে নামার আগে বড় কিছুর স্বপ্ন দেখছেন বলেও জানান লিওনার্দো বাচ্চি তিতে।

অ্যাডেনর লিওনার্দো বাচ্চি, নামটা কি খুব বেশি অচেনা লাগছে? তাহলে পোশাকি এই নামটা ছেড়ে ডাক নামটা শুনুন, তিতে। মোটামুটি ফুটবল নিয়ে যারা টুকটাক খবরও রাখেন, তাদের কাছে এখন এই লোকটাকে আর অপরিচিত মনে হওয়ার কথা নয়। তিনি ব্রাজিলের কোচ।

দুঙ্গার হাতে পড়ে যখন খেই হারিয়ে ফেলেছিলো, সাম্বার ছন্দ। ঠিক তখনই ত্রাতা হয়ে আসেন সাবেক করিন্থিয়ান্সের গুরু তিতে। হাল ধরেন ভঙ্গুর এক ব্রাজিল দলের। এরপর তার স্পর্শে আমূলে বদলে যায় হলুদ শিবির। যে কোন উপায়ে জয়ের মন্ত্র ছেড়ে, আবারো জোগো বনিতায় ফিরে আসে সেলেসাওরা।

আর বন্ধুর এ পথে, তিতে’কে সবচেয়ে বেশি ভরসা জুগিয়েছেন যিনি, তিনি ব্রাজিল ফুটবলের পোস্টার বয় নেইমার জুনিয়র। দুজনের জুটিতে অধরা অলিম্পিক স্বর্ণ এসেছে সাম্বার শোকেসে। তবে, বিশ্বকাপটা এখনো ছুঁয়ে দেখা হয়নি তাদের। সে লক্ষ্যে এবার আরো একটি বাছাইপর্বের ম্যাচের আগে নেইমার বন্দনায় মাতলেন তিতে।

বলিভিয়ার বিপক্ষের ম্যাচটা বড় ব্যবধানে জিতলেও, গোল পাননি মহাতারকা। সে থেকেই শুরু হয়ে গেছে সমালোচনা। কিন্তু শিষ্যকে সবকিছু থেকে আড়াল করে রাখলেন গুরু। জানালেন, সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন হয়েছে নেইমারের দায়িত্বটাও। এখন শুধু গোল করার জন্য নয়, করানোর কথাটাও ভাবতে হয় ১০ নম্বর জার্সিধারীকে।

ব্রাজিল কোচ তিতে বলেন, ‘সে আমার দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। নেইমার এখন আর ছোট ছেলে নেই, সে এখন ম্যাচিউরড হয়েছে। দলে তার দায়িত্বটাও তাই বদলে গেছে। এখন শুধু গোল করার জন্য আমরা তাকে মাঠে নামাই না। তাকে নেতৃত্বও দিতে হয়। গোল করানোর কথাও ভাবতে হয়। সতীর্থদের কাছ থেকে সেরা খেলাটা বের করে আনতেও তার ভূমি অনস্বীকার্য। দিনকে দিন তার স্কিল আরো উন্নত হয়েছে। আমি আশা করবো ভবিষ্যতে সে আরো ভালো করবে। এক ম্যাচ গোল না পেলেই, তাকে নিয়ে ভাববার কিছু নেই। আমি জানি, সময় মতো সে আবার জ্বলে উঠবে।’

ছন্দে থাকলে নেইমার যে কতটা বিধ্বংসী, তা তো ভালোই জানেন ক্লাব ফুটবলের দর্শকরা। কিন্তু, দীর্ঘদিন ধরেই ইনজুরির সঙ্গে সখ্যতা বেড়েছে এই ফরোয়ার্ডের। যেটা আবার চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে তিতের কপালেও।

তিতে আরো বলেন, ‘ব্রাজিল গত ম্যাচের আগে তাকে নিয়ে শঙ্কায় ছিলাম। তবে, আপাতত কোন ভয় নেই। সে ভালো আছে। স্বাভাবিকভাবেই অনুশীলন করেছে। তবে, ওকে নিয়ে আমার সবসময় ভয় হয়। প্রতিপক্ষ দলগুলো হরহামেশাই ওকে ফাউলের নিশানা বানাচ্ছে। এভাবে টিকে থাকাটা বেশ কঠিন হবে।’

দেখতে দেখতে সময় কেটে গেছে অনেক। সেলেসাওদের ডাগ আউটে এ নিয়ে ৪৯ বার দাঁড়ানোও হয়ে গেছে। পেরুর বিপক্ষের ম্যাচটা তাই মাইলফলক ছোঁয়ারও লড়াই তিতের জন্য।

তিতে জানান, ‘ব্রাজিল ৫০ বা ১০০ এগুলো শুধুই একটা সংখ্যা। আমার কাছে বিশেষ কোন গুরুত্ব বহন করে না। আমার লক্ষ্য, এ দলটাকে নিয়ে অনেক দূরে যাওয়া। আমি অনেক ম্যাচ জিততে চাই। হার আমার একেবারেই পছন্দ নয়।’

বাংলাদেশ সময় বুধবার (১৪ অক্টোবর) ভোরে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে পেরুর বিপক্ষে মাঠে নামবে ব্রাজিল।