ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর দেশের অন্যতম বৃহৎ বিজ্ঞাপনী সংস্থা অ্যাডকমের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। পৌনে ছয় কোটি টাকা ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে এ মামলা করা হয়েছে । মামলাটি মঙ্গলবার ঢাকার দক্ষিণ কর কমিশনারেটে করা হয়।

ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক খাজা আহমেদ তালুকদারের নেতৃত্বে গত বছরের ১৪ এপ্রিল অ্যাডকমের তেজগাঁও কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে জব্দ করা ২০১৩-১৪ থেকে ২০১৭-১৮ করবর্ষের নথিপত্রের সঙ্গে অ্যাডকমের দাখিল করা ভ্যাট রিটার্ন মিলিয়ে দেখার পর ফাঁকির বিষয়টি বেরিয়ে আসে।

ভ্যাট গোয়েন্দা সংস্থার হিসাবে দেখা গেছে, সেবা বিক্রির বিপরীতে বিজ্ঞাপন বাবদ ২ কোটি ৩৩ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে অ্যাডকম। এছাড়া স্থাপনার ভাড়ার ওপর ১ লাখ ১১ হাজার টাকা এবং উৎসে কর্তনযোগ্য ৪১ লাখ ৫০ হাজার টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে বিজ্ঞাপনী সংস্থাটি। এভাবে বিভিন্ন খাতে মোট ২ কোটি ৯৬ লাখ টাকার ভ্যাট তারা সরকারের কোষাগারে জমা দেয়নি।

ভ্যাট গোয়েন্দা ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খান জানান, ‘ভ্যাট গোয়েন্দাদের অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করলেও তা যথাযথভাবে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়নি। দীর্ঘদিন ধরে ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি।’

এ বিষয়ে অ্যাডকমের হেড অফ ফাইন্যান্স মাহমুদুল কবির হীরা এক লিখিত বিবৃতিতে বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ (ভ্যাট গোয়েন্দার দল) রুটিন কাজ হিসেবে আমাদের কার্যালয় তদন্তে গিয়েছিল। কিন্তু তারা কী তথ্য পেয়েছে তা আমাদের অবহিত করেনি। এমনকি যে অভিযোগ আমাদের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে তাও আমাদের জানানো হয়নি।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অ্যাডকমে সর্বদা আর্থিক স্বচ্ছতা বজায় রাখা এবং সমস্ত বিধিবিধান প্রতিপালনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এবং তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা কঠোর পরিশ্রম করে আসছি। আমরা বিশ্বাস করি, আজ অবধি নির্দেশিকা অনুসারে সমস্ত ভ্যাট আমরা প্রদান করেছি এবং যদি কোনো বিচ্যুতি আমাদের নজরে আনা হয়, আমরা তা অবিলম্বে সমাধান করব।’

উল্লেখ্য, অ্যাডকমের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান গীতি আরা সাফিয়া চৌধুরী ২০০৭-২০০৮ মেয়াদে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন।