এবার ঈদে টানা পাঁচদিন ছুটি পাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা। সরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ছুটি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। অনেকই আছেন বছরের এ সময়টার অপেক্ষায় থাকে কেননা সরকারি ছুটির সঙ্গে দুই-একদিন ছুটি নিয়ে ছোট একটা ট্রু দেওয়া যায়। সেই সঙ্গে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা এর অপেক্ষা থাকেন। সামনে ঈদুল ফিতর এ উপলক্ষ পর্যটকদের বরন করতে প্রস্তুত স্পটগুলো।

রমজান মাস কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ছিল সুনসান নীরবতা। এবার ঈদের টানা ছুটিতে সেই নীরবতা ভাঙার তোড়জোর শুরু হয়েছে।

ইতোমধ্যে কুয়াকাটার শতাধিক আবাসিক প্রতিষ্ঠানে রঙ করা ও ধুয়ে-মুছে পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ করছে। ঈদে টানা সাত দিনের জন্য পর্যটকরা ভ্রমণে আসবেন বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। এর সংশ্লিষ্টরা পর্যটকদের বরণ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন।

ইতোমধ্যে পর্যটন স্পট, হোটেল, মোটেল ও গেস্ট হাউসগুলো বুকিং দিতে শুরু করেছেন দর্শনার্থীরা।

কুয়াকাটার হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি মো. শাহআলম বলেন, আমাদের সব প্রস্তুতি শেষের দিকে। এবারে ঈদে ফেডারেশনভুক্ত আবাসিক হোটেল মোটেল গেস্ট হাউসে ২৫-৪০ শতাংশ পর্যন্ত বিশেষ ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এবার ঈদের ছুটির সঙ্গে যোগ হয়েছে পহেলা বৈশাখ।

বৈশাখের উত্তাল সাগর পর্যটকদের দেবে ভিন্ন আমেজ। আশা করছি টানা সাতদিন সাগর কন্যায় পর্যটক থাকবে পরিপূর্ণ। এক্ষেত্রে প্রায় শত কোটি টাকার ব্যবসা হবে বলে আশা করছেন তিনি।

তারকা মানের হোটেলগুলোতে আগাম বুকিং হিসাবে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ বুকিং আছে। ঈদের আগে শতভাগ বুকিং সম্পূর্ণ হবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
এদিকে, পর্যটক টানতে বিশেষ ছাড়ও দিচ্ছেন কেউ কেউ।

কুয়াকাটা সিকদার রিসোর্ট অ্যান্ড ভিলেজের জেনারেল ম্যানেজার মো. আনোয়ারুল আজিম জানান, জাতীয় নির্বাচনের কারণে সিজন টাইমে বিজনেস তেমন সফল হয়নি। আসন্ন ঈদের ছুটিতে আশা করছি প্রচুর গেস্ট আসবে। আমাদের হোটেল সেভাবে প্রস্তুত রেখেছি। এছাড়া সার্ভিসসহ নানা সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

কুয়াকাটার জনপ্রিয় খাবারের রেস্তোরাঁর মালিকরা বলেন, ইতোমধ্যে আমরা রেস্তোরাঁর সবকিছু প্রস্তুতি শেষ করেছি। পর্যটক টানতে দেশি খাবারের আইটেম বাড়িয়েছেন। পর্যটকরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে ফ্রেশ খাবার খেতে পারে সেজন্য প্রাইসটাও সাধ্যের মধ্যে রাখার চেষ্টা করেছেন অনেকে।

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ সুপার আনসার উদ্দিন বলেন, ঈদের ছুটিতে পর্যটক বরণ করতে আমরা প্রস্তুত। ইতোমধ্যে সমুদ্র সৈকতসহ গুরুত্বপূর্ণ বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে টুরিস্ট পুলিশের তৎপরতা শুরু হয়েছে। সৈকতের প্রবেশপথে তল্লাশি চৌকি স্থাপন, সৈকতে পোশাকধারীর পাশাপাশি সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করবে। সৈকতের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। বিচ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, হোটেল মোটেল রেস্তোরাঁ মালিকদের সাথে সমন্বয় করে পর্যটকদের সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা দেয়া হবে। খাবার ও রুমের অতিরিক্ত দাম আদায়ের অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান ট্যুরিস্ট পুলিশ সুপার।

তিনি জানান, বিচে ভাসমান দোকানগুলোতে সব ধরনের খাবারের দাম নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। ফিশ ফ্রাই জোনে কোনো পঁচা কাঁকড়া বা মাছ বিক্রি করা যাবে না। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সবশেষে স্বাচ্ছন্দ্যে সাগর কন্যা কুয়াকাটা ভ্রমণ করার জন্য পর্যটকদের আহ্বান জানান ট্যুরিস্ট পুলিশ সুপার আনসার উদ্দিন।