আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্বের ৫ জন প্রধানমন্ত্রী ও একজন প্রেসিডেন্ট বিভিন্ন কারণে গত ৩ মাসে পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগের কারণ হিসেবে তারা ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখা দিয়েছেন। ব্যক্তিগত, রাজনৈতিক ও নারী ঘটিত কারণে তারা পদত্যাগ করেছেন।

২০ মার্চ পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন ৪৫ বছর বয়সী আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকার। ভারাদকর ২০১৭ সালে আয়ারল্যান্ডের প্রথম সমকামী এবং কম বয়সী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার মা আইরিশ এবং বাবা ভারতীয়। ডাবলিনে সাংবাদিকদের লিও বলেন, আমি ফাইন গেইল পার্টির সভাপতিত্ব ও নেতৃত্ব থেকে পদত্যাগ করছি এবং আমার পদে নতুন কেউ দায়িত্বপ্রাপ্ত হওয়ার পরপরই আমি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

২০ মার্চ মাত্র এক বছর দায়িত্ব পালনের পর পদত্যাগ করেছেন ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট ভো ভ্যান থুং। ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় দেশটির সরকার। দলীয় নীতি ভঙ্গ এবং তার কর্মকাণ্ডের কারণে জনমতে নেতিবাচক প্রভাবে দলের পাশাপাশি দেশ ও তার নিজেরও সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে কমিউনিস্ট পার্টি।

১১ মার্চ হাইতির প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেছেন। ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের দেশটিতে কয়েক সপ্তাহ ধরে সহিংসতার পাশাপাশি চাপ বেড়ে চলার প্রেক্ষাপটে হেনরি পদত্যাগ করলেন। গায়ানার প্রেসিডেন্ট ও ক্যারিবিয়ান কমিউনিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইরফান আলী এ তথ্য জানিয়েছেন। হাইতির রাজনৈতিক অস্থিরতার সমাধান নিয়ে আলোচনার জন্য জ্যামাইকায় বৈঠক করেন আঞ্চলিক নেতারা। এ বৈঠকের পর হেনরির পদত্যাগের তথ্য জানালেন ক্যারিবিয়ান কমিউনিটির চেয়ারম্যান।

৬ মার্চ পদত্যাগ করেছেন পেরুর প্রধানমন্ত্রী আলবার্তো ওতারোলা। প্রভাব খাটিয়ে এক নারীকে সরকারি লাভজনক চুক্তি পাইয়ে দেওয়ার অডিও ফাঁসের পর পদত্যাগ করেছেন। আলবার্তোর সঙ্গে কথোপকথন ফাঁস হওয়া ওই নারীর নাম পিনেডো। তাকে ২০২৩ সালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুটি কাজের চুক্তি দেওয়া হয়। এ চুক্তি থেকে তার ১৪ হাজার ডলার উপার্জন হয়।

২৬ ফেব্রুয়ারি পদত্যাগ করেছেন ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ এশতায়েহ। গাজায় যুদ্ধ, গণহত্যা ও পশ্চিম তীরে সহিংসতা বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে তিনি তার সরকারের পদত্যাগ ঘোষণা করেছেন। এশতায়েহ বলেন, ‘পশ্চিম তীর ও জেরুজালেমে নজিরবিহীন মাত্রায় সহিংসতা বৃদ্ধি এবং গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ, গণহত্যা ও খাদ্যাভাবকে কেন্দ্র করে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

এছাড়া ৯ জানুয়ারি পদত্যাগ করেছেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বোর্ন। ইউরোপের এই দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে দেখা করার পর পদত্যাগ করেন তিনি। এছাড়া ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ‘অনুকরণীয়’ প্রচেষ্টা রাখায় বোর্নকে ধন্যবাদও দিয়েছেন ম্যাক্রোঁ। এলিজাবেথ বোর্নকে ২০২২ সালের মে মাসে ফরাসি প্রধানমন্ত্রী পদে নিযুক্ত করা হয় এবং গত বছরের শেষের দিকে কট্টরপন্থি, বিতর্কিত অভিবাসন বিল পাসের পরিপ্রেক্ষিতে তার প্রস্থান ঘটল।