করোনাকালে সব ধরনের শিশুর মধ্যে অটিস্টিক শিশুরাই সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে বলে মনে করেন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. গোলাম রাব্বানী। তিনি বলেন, এ ধরনের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন অতিচঞ্চল শিশুদের নিয়েই অভিভাবকরা সবচেয়ে বেশি সংকটে আছে। তারা অভিভাবকদের স্বস্তির নিঃশ্বাসই নিতে দিচ্ছে না। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ডা. গোলাম রাব্বানী বলেন, করোনা এমন একটি মহামারী যে এটি বয়স, লিঙ্গ কিছুই মানছে না। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, শিশু-কিশোরদের মধ্যে করোনার প্রাদুর্ভাব ১০ শতাংশের মতো। সমস্যা শুধু আক্রান্ত হওয়ার বিষয়েই নয়, মানসিক সমস্যাও তৈরি হচ্ছে। করোনার আগে শিশুরা সারা দিন ব্যস্ত থেকেছে স্কুল, কোচিংসহ বিভিন্ন ধরনের চর্চা নিয়ে। কিন্তু এখন শিশুদের জীবনে এরই মধ্যে বেশ বিরক্তি চলে এসেছে। জীবনে কোনো বৈচিত্র্য না থাকায় শিশুরা একটি স্থবির জীবনে আবদ্ধ হয়ে গিয়েছে। আবার লকডাউনের নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা বাইরে যেতে না পেরে এক ধরনের দমবন্ধ অবস্থার মধ্যে আছে। শিশুদের মধ্যে নিউরো ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী এবং অটিস্টিক শিশুদের কোনো কিছুই স্বাভাবিক না হওয়ায় তারা খুব বেশি কষ্টের মধ্যে আছে। তাদের শারীরিক ও মানসিক সমস্যাগুলোও অনেক বেশি বেড়ে গেছে। ডা. গোলাম রাব্বানী বলেন, করোনার সময় শিশুদের বিশেষ সেবা দিতে হবে। তাদের সুস্থ রাখার জন্য সাধারণ যেসব সরকারি-বেসরকারি স্কুল আছে, সেগুলোকে অনলাইনে পঠন-পাঠন কর্মসূচি চালাতে হবে। প্রয়োজনে আলাদা কাঠামো তৈরি করে অভিভাবকদের কাজে লাগাতে হবে। কারণ করোনাকালে মা-বাবা উভয়ে বাসায় থাকায় তারা দেখছেন সন্তান কী করছে। অভিভাবকদের জন্যও বিশেষ এই পঠন-পাঠনের প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে অনলাইনে। এসবের মাধ্যমে আমরা যদি শিশুদের ব্যস্ত রাখতে পারি, তাহলে তাদের মধ্যে যেসব হতাশা, দমবন্ধ ভাব ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে, তা দূর হতে পারে।সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন