পানীয় হিসেবে বাঙালিদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে ঘোল ও মাঠা। রোজার মাসে এর ব্যাপক চাহিদা থাকে। তবে সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী সলপের ঘোল ও মাঠার খ্যাতি রয়েছে অনেক। এই মাঠা কিনতে প্রতিদিন সকাল থেকেই ঘোল ও মাঠা কিনতে ভিড় করছেন দূর-দুরান্ত থেকে আসা ক্রেতারা। গুনে ও মানে ভালো হওয়ার কারণে এ মাঠার চাগিদা অনেক।

জেলার উল্লাপাড়ার সলপ স্টেশন এলাকায় উৎপাদিত ঘোল ও মাঠার সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। সুস্বাদু এই পানীয় সুপরিচিত ‘সলপের ঘোল’ নামে।

কারিগর আবদুল মালেক জানান, সকালে গাভীর খাটি দুধ সংগ্রহ, বড়পাত্রে চার থেকে পাচ ঘণ্টা সংগৃহীত দুধ জ্বাল করা, জ্বাল করা দুধ অন্তত ৬ ঘণ্টা ঠান্ডা করে মেশিনে ভাঙ্গিয়ে তৈরি হচ্ছে ঘোল ও মাঠা। উৎপাদিত ঘোল ও মাঠায় কিছুটা বরফ মিশিয়ে তুলে দেওয়া হচ্ছে ক্রেতাদের হাতে।

খুচরা ক্রেতা লুৎফর রহমান বলেন, সারাদিন রোজা রেখে তৃষ্ণা মেটাতে ইফতারে ঘোল পান করতে পছন্দ করে তার পরিবার। তাছাড়া এতে সারাদিনের ক্লান্তিও দূর হয়। প্রায় এখানে এস তিনি ঘোল কিনে নিয়ে যান।

উৎপাদনকারি আবদুল খালেক জানান, এই ঘোলের স্বাদ নিতে সারাবছরেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসলেও রমজান মাসেই এর চাহিদা থাকে বেশি। বর্তমানে সলপের প্রতিটি দোকান থেকে প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে চারশো থেকে পাঁচশো মণ ঘোল ও মাঠা।

পাইকার খলিল মিয়া জানান, প্রথম রমজান থেকে প্রতিদিনই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ক্রেতা ও পাইকারেরা ছুটে আসেন সলপে, চাহিদামত ঘোল ও মাঠা সংগ্রহে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সু-স্বাদু এই ঘোলের সুনাম ছড়িয়েছে সারাদেশেই।

সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের নেতা জিহাদ আল ইসলাম জানান, সলপের ঘোল উৎপাদনকারীরা এখনো উৎপাদিত ঘোলে গুনগতমানের প্রশ্নে আপস না করা ও সততা ধরে রাখায় এর সুনাম বাড়ছে। তাই ঐতিহ্যবাহী এই পণ্যটি উৎপাদন টিকিয়ে রাখতে সকল প্রকার উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।