মধ্য আমেরিকার ক্যারিবীয় অঞ্চলের দেশ জ্যামাইকা ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। জ্যামাইকা সরকার জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে তারা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের উপপর্যবেক্ষক রাষ্ট্রদূত মাজেদ বামিয়া ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া জ্যামাইকা সরকারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণাপত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করেছেন।

ঘোষণায় বলা হয়, জ্যামাইকা সরকার ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত সোমবার মন্ত্রিসভার আলোচনার পর পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক বাণিজ্যমন্ত্রী সিনেটর কামিনা জনসন স্মিথ এই সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করেছেন।

ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে জ্যামাইকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এই সিদ্ধান্ত জাতিসংঘ সনদের নীতিগুলোর প্রতি জ্যামাইকার দৃঢ় প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পাশাপাশি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের স্বীকৃতি প্রদান করতে চায়।’

বিবৃতিতে মন্ত্রী কামিনা জনসন স্মিথ বলেন, ‘জ্যামাইকা দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের সমাধান হিসেবে ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং ফিলিস্তিনিদের মর্যাদা ও অধিকার সমুন্নত রাখার একমাত্র কার্যকর বিকল্প হিসেবে একটি দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে ওকালতি করে চলেছে। ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়ে জ্যামাইকা একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের দিকে তার সমর্থন জোরদার করল।’

উল্লেখ্য, জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে জ্যামাইকাসহ মোট ১৪০টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এদিকে, স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেছে ইউরোপের দুই দেশ স্পেন ও আয়ারল্যান্ড। দেশ দুটি আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে জোট বাঁধার ঘোষণাও দিয়েছে। এ ছাড়া ইউরোপের দেশ নরওয়েও ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

গত মার্চের শেষ সপ্তাহে বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে এক বৈঠকের পর যৌথ ঘোষণায় ইউরোপের চার দেশ স্পেন, আয়ারল্যান্ড, স্লোভেনিয়া ও মাল্টার প্রধানমন্ত্রীরা জানান, তাঁদের দেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত। তাঁরা সে সময় বলেন, যুদ্ধকবলিত এই অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের একমাত্র উপায় এটি।