রোফিকা রুমা ইতি নামের এক নারীর মরদেহ রাজধানীর নিকুঞ্জে নিজ বাসা থেকে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের সন্দেহ তাকে হত্যা করা হয়েছে। যদিও ইতির স্বামী মৃত্যুর ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে দাবি করেছে। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য ভোর পৌনে ৬ টার দিকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়।

ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ জানান, প্রাথমিকভাবে মৃত ইতির হাতে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তার গলায় অর্ধচন্দ্রাকৃতির দাগও পাওয়া গেছে। শ্বশুড় বাড়ির লোকেরা হত্যা করেছে বলে ইতির পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছে চিকিৎসক।

মৃত রোফিকা রুমা ইতি বেসরকারি টেলিভিশনের ক্রীড়া সাংবাদিক হুমায়ুন কবীরের বোন। সাড়ে পাঁচ বছর আগে তার সাথে জামাল হোসেনের বিয়ে হয়। তাদের পরিবারে চার বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।

ইতির স্বামী জামাল হোসেন দাবি করেন, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাতের খাবার খাওয়ার পরে ইতি খাওয়ার জন্য ফ্রিজ থেকে আইসক্রিম বের করেন। তখন আইসক্রিম কিছুটা কম দেখলে তিনি স্বামীর কাছে জানতে চান, আইসক্রিম কে খেয়েছে। এসব নিয়েই রাতে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তর্কাতর্কির পর ইতি বাসা থেকে বেরিয়ে যেতেও চান। তবে স্বামী জামাল তাকে বাধা দেন।

এরপর রাত ২টার দিকে জামাল ঘুমিয়ে পড়েন। রাত সাড়ে ৩টার দিকে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলে তিনি বিছানায় ইতিকে দেখতে পান না। পরে বারান্দায় গিয়ে গ্রিলের সঙ্গে পরনের হিজাব দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ফ্লোরে হাঁটু গেড়ে বসে থাকতে দেখেন তাকে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

হুমায়ুন কবীর জানান, আমার বোন মানসিকভাবে খুবই শক্ত ছিল। যে কোনো ধরনের সমস্যাকে সে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে পছন্দ করত। স্বামীর বাড়ির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তবে বারান্দায় গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় তার মৃতদেহ হাঁটু গেড়ে ফ্লোরে বসা ছিল, তাদের পারিবারিক কিছু সমস্যা হচ্ছিল। সবকিছু বিবেচনা করে আমাদের কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না সে আত্মহত্যা করেছে। তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে আমাদের সন্দেহ হচ্ছে।