গাইবান্ধায় তিস্তা, যমুনা নদী ও ব্রহ্মপুত্র নদে পানি না থাকায় এখন ধু-ধু মরুভুমির মত বালু চরে পরিণত হয়েছে। জেলার প্রায় চার উপজেলার ২০ ইউনিয়নের চরাঞ্চল প্রায় যোগযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এসব দুর্গম চরাঞ্চলে নেই চলাচলের রাস্তাঘাট। মাইলের পর মাইল বালু পথে পায়ে হেঁটে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত ও উৎপাদিত কৃষি পণ্য কষ্ট করে আনা-নেয়া করতে হয়। সম্প্রতি ঘোড়ার গাড়িতে যাতাযাত ব্যবস্থা চালু হয়েছে। এখন চরাঞ্চল মানুষদের একমাত্র ভরসা হচ্ছে এ বাহন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্ষা মৌসুমে তিস্তা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের চরাঞ্চলে যাতায়াতের মাধ্যম নৌকা আর শুকনো মৌসুমে মালামাল বহনের একমাত্র ভরসা ঘোড়ার গাড়ি। ধুধু বালি চরে সারি সারি ঘোড়ার গাড়ি চলছে চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায়। নৌকার মতো করে দু-পাড়ের মানুষ পাড়ি দিচ্ছে ঘোড়ার গাড়িতে।

আগে চর থেকে বাঁশের খাটলিতে করে অসুস্থ মানুষ চিকিৎসার জন্য নৌ-ঘাটে নিয়ে আসতে হলেও এখন অল্প সময়ে ও স্বাচ্ছন্দ্যে আনতে পারছেন ঘোড়ার গাড়িতে। গাইবান্ধা সদর,ফুলছড়ি, সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা উপজেলার প্রায় ২০টি ইউনিয়নের চরাঞ্চলবাসীদের চিরচেনা সেই দুর্ভোগ বদলে দিয়েছে ঘোড়ার গাড়ি।

স্থানীয় কৃষকরা জানায়,তাদের উৎপাদিত ফসল জমি থেকে তুলে বাড়ি ও উপজেলা সদরসহ হাট-বাজারে বিক্রি করার ঘোড়ার গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছেন তারা। ফলে জেলার শস্য ভাণ্ডার খ্যাত এসব চরের উৎপাদিত কৃষিপণ্য পরিবহনে ঘোড়ার গাড়ি বিশেষ ভূমিকা রাখছে।
চালকরা জানায়, ঘোড়ার গাড়ি যোগাযোগে জনপ্রিয়তা পাওয়ায় এ গাড়ি চালিয়ে প্রায় শতাধিক পরিবার স্বাবলম্বী হয়েছে। একজন চালক প্রতিদিন কমপক্ষে ৫শ থেকে ৭শ টাকা আয় করছেন।

এ বিষয়ে ফুলছড়ি উপজেলার চেয়ারম্যান জিএম পারভেজ সেলিম জানান, চরাঞ্চলে যোগাযোগ ও কৃষিপণ্য আনা-নেয়ায় ঘোড়ার গাড়ি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তাই এ জন্য যে ধরনের সহযোগিতার প্রয়োজন তার পক্ষ থেকে করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।