ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:পৌরসভা ও সড়ক বিভাগের সমন্বয়হীনতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাতের বেলা জ্বলে না উড়াল সেতুর বাতি। রাতের বেলায় বাতি না জ্বলার কারণে সেতুর উপর দিয়ে পথচারীদের চলাচল অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া আলো স্বল্পতার কারণে যে কোনো সময় দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে। পবিত্র ইদুল ফিতরকে সামনে রেখে উড়াল সেতুতে ছিনতাইকারীদের উৎপাত বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা শহরবাসীর।

এদিকে সড়কবাতি জ্বালানোর দায়িত্ব নিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাথে পৌরসভার রশি টানাটানি চলছে। তবে পুলিশ বলছে, জনস্বার্থ বিবেচনা করে কার্যকরী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের যানজট নিরসনের জন্য ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে শহরের দক্ষিণ মৌড়াইল খ্রিস্টীয় মিশন এলাকা থেকে টিএ রোডের আশিক প্লাজা পর্যন্ত ৭৬০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৭.৬ মিটার প্রস্থের রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এরপর ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রায় ৭৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ওভারপাসটির উদ্বোধন করেন। এরপর থেকেই সেতুটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এতে করে শহরবাসীর যানজটের ভোগান্তি অনেকাংশে কমে আসে।

উড়াল সেতুটি চালুর পর গত সাত বছর ধরে স্বাভাবিকভাবেই এর উপর দিয়ে যানবাহন চলাচল করে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি এই উড়াল সেতুর উপরে থাকা অর্ধশতাধিক বাতি জ্বলছে না। ফলে পথচারীদের চলাচলে অনেকটাই সমস্যা হচ্ছে।

জেলা নাগরিক ফোরামের সহ-সভাপতি নিহার রঞ্জন সরকার জানান, শহরের গুরুত্বপূর্ণ এই উড়াল সেতুতে দীর্ঘদিন ধরে সড়কবাতিগুলো জ্বলছে না। যার কারণে রাতের বেলা সেতুর উপর অপরাধ প্রবণতা বাড়বে। তিনি অবিলম্বে রাতের বেলা উড়াল সেতুর বাতিগুলো জ্বালানোর ব্যবস্থা করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ফ্লাইওভারটি পৌরসভার ভেতরে হওয়ায় আমরা এটি পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছি। তারাও নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আমাদের পক্ষে এ বাতিগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না। পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিলও আমাদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কারণ মন্ত্রণালয় থেকে তেমন কোনো বরাদ্দ আসছে না।

পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী সবুজ কাজী জানান, সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে দেওয়া চিঠি আমরা গ্রহণ করিনি। আমাদের পর্যাপ্ত এবং প্রয়োজনীয় লোকবল আর যন্ত্রপাতি নেই। বিষয়টি আমরা সড়ক বিভাগকে জানিয়ে দিয়েছি। এ ছাড়া সড়কবাতি মেরামতের জন্যে পৌরসভার কাছে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই।

তিনি আরও বলেন, বাতির প্রতিটি পিলারের উচ্চতা ৩০ফুট। আমাদের কাছে মই আছে ২৫ ফুটের। এছাড়া প্রতিটি বাতি রক্ষণাবেক্ষণ করতে গেলে খরচ হয় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। পৌরসভার পক্ষে এই ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই দায়িত্ব এখনো সড়ক বিভাগের হাতেই রয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন বলেন, ঝুঁকি বিবেচনায় আপাতত উড়াল সেতু এলাকায় পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।