রমজানে বাজারে ব্যাপক চাহিদা কাঁচা মরিচের। দামও ভালো। এ জন্য আগেভাগেই ক্ষেত থেকে কাঁচা মরিচ বিক্রি শুরু করেছেন ভোলার লালমোহন উপজেলার কৃষকরা। ফলন ভালো হওয়ায় ও বাজারে দাম সন্তুষ্ট পরিমাণ থাকায় খুশি এ উপজেলার মরিচ চাষিরা। গত কয়েক দিন ধরে ক্ষেত থেকে মরিচ তুলে বিভিন্ন হাট-বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন কৃষকরা। অনেক সময় পাইকাররা এসে ক্ষেত থেকে মরিচ কিনছেন।
লালমোহন উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় এক হাজার ৬৯০ হেক্টর জমিতে মরিচের চাষ হয়েছে। যেখানে রয়েছে হট ফায়ার, ক্যাপ্টিন, পিকনিক প্লাস, দেবগীরি, বিজলী প্লাস ও স্থানীয় জাতের মরিচ। সবচেয়ে বেশি মরিচের আবাদ করেছেন উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ, কালমা, ফরাজগঞ্জ, ধলীগৌরনগর, রমাগঞ্জ ও লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের চাষিরা।
উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের পাঙাশিয়া গ্রামের মরিচ চাষি মো. তোফায়েল বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরেই বিভিন্ন ধরণের কৃষি চাষাবাদ করছি। গত বছর মরিচের অনেক ভালো ফলন পেয়েছি। বাজারে দামও ভালো। তাই এ বছর জমির পরিমাণ বাড়িয়ে ৮০ শতাংশ জমিতে মরিচের চাষ করেছি। ইতোমধ্যে ক্ষেত থেকে কাঁচা মরিচ বিক্রি শুরু করেছি। কারণ রোজায় কাঁচা মরিচের অনেক চাহিদা। পাইকারি বিক্রি করি এসব মরিচ। লালমোহন, চরফ্যাশন, ভোলা ও বরিশালের আড়তদাররা অনেক সময় ক্ষেত থেকেই মরিচ কিনে নেন। আবার কখনও আমরা আড়তে পাঠাই। বর্তমানে আমরা প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ পাইকারি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা করে বিক্রি করছি। এ বছর অন্তত তিন লাখ টাকার মতো মরিচ বিক্রি করতে পারব। আশা করছি বিক্রি শেষে মোটামুটি ভালোই লাভবান হব।
ওই গ্রামের আরেক মরিচ চাষী মো. রুহুল আমিন বলেন, গত বছর মাত্র ৪৮ শতাংশ জমিতে মরিচের চাষ করেছিলাম। ওই বছর ফলন খুবই ভালো হয়েছে। যার জন্য এ বছর জমির পরিমাণ বাড়িয়েছি। এ বছর ১৬০ শতাংশ জমিতে মরিচের চাষ করেছি। জমি লিজ, জমি প্রস্তুত, সার-কীটনাশক, বীজ, সেচ ও শ্রমিকসহ এই মরিচ চাষে প্রায় তিন লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। এরইমধ্যে ক্ষেত থেকে কাঁচা মরিচ বিক্রি শুরু করেছি। মৌসুম শেষে ক্ষেত থেকে অন্তত ছয় লাখ টাকার মরিচ বিক্রি করতে পারব। যাতে করে খরচ বাদে মৌসুম শেষে তিন লাখ টাকার মতো আয় হওয়ার আশা করছি।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা টুটুল চন্দ্র সাহা বলেন, উপজেলার পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের পাঙাশিয়া গ্রামের কৃষকরা এ বছর সবচেয়ে বেশি মরিচের চাষ করেছেন। ওই গ্রামে এখন গেলে মনে হবে এ যেন মরিচের রাজ্য। এছাড়া উপজেলার অন্যান্য এলাকাতেও মরিচের চাষ হয়েছে। আমরা নিয়মিত ওইসব মরিচ চাষিদের খোঁজ-খবর নিচ্ছি। একইসঙ্গে চাষিদের যেকোনো সমস্যায় প্রয়োজনীয় পরামর্শও দিচ্ছি।