করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, জীবন স্থবির থাকতে পারে না। জীবন চলতে থাকবে। শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত এই সভার সঙ্গে সংযুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী এবং একনেকের চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা সংক্ষিপ্ত ভাষণে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশবাসীর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর পুনরায় গুরুত্বারোপ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে এরই মধ্যে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্যসহ অনেককে হারিয়েছি। দেশবাসীর কাছে বলব, আসুন সবাই মিলে দোয়া করি, আল্লাহ যেন এই করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি দেন। এটি শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্বব্যাপী সমস্যা। মানুষ যেন করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পেয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে, সেটিই আমরা চাই। প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে অংশগ্রহণকারী মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে আমাদের উন্নয়ন কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। কিন্তু তারপরও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি, ধারাবাহিকতা বজায় রেখে যতটুকু সম্ভব উন্নয়নের গতিটা ধরে রাখতে। শেখ হাসিনা বলেন, দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ, সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন।
৯ হাজার কোটি টাকার ১০ প্রকল্প অনুমোদন : জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৯ হাজার ৪৬০ কোটি ৯ লাখ টাকার ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। গতকাল একনেক সভা শেষে এক ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান তিনি।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, একনেক সভায় অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ৩টি প্রকল্প যথাক্রমে ‘অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-৩’ প্রকল্প। ‘বৃহত্তর পটুয়াখালী জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলা) (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প এবং ‘হাওর অঞ্চলে টেকসই পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন ও হাইজিন ব্যবস্থার উন্নয়ন’ প্রকল্প। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘জামালপুর জেলা কারাগার পুনর্নির্মাণ’ প্রকল্প। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘জলাশয় সংস্কারের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প; পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘মনু নদীর ভাঙন থেকে মৌলভীবাজার জেলা সদর, রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলা রক্ষা’ প্রকল্প। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ২টি প্রকল্প যথাক্রমে ‘গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (চট্টগ্রাম জোন) (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প এবং ‘টেকেরহাট-গোপালগঞ্জ (হরিদাসপুর)-মোল্লাহাট (ঘোনাপাড়া) আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ প্রকল্প। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের ১০০টি মিটার গেজ যাত্রীবাহী ক্যারেজ পুনর্বাসন (২য় পর্যায়)’ প্রকল্প এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘বিএএফও বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স নির্মাণ, যশোর (৩য় সংশোধিত)’ প্রকল্পটি ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে মেয়াদ বৃদ্ধির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সভায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, কৃষিমন্ত্রী মো. আবদুর রাজ্জাক, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা অংশ নেন।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন