মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে দেশটিতে। এরপর থেকেই পুরোদেশ জুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। দেশটির মানুষ ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় এবং উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে। মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ আজ জরুরি বৈঠকে বসতে যাচ্ছে।

তবে এরই মধ্যে জাতি সংঘ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা সঙ্কট আরও প্রকট আকার ধারণ করতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে মিয়ানমারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে।

সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে মিয়ানমার। দিনে জরুরি অবস্থা ও রাতে কারফিউয়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করে দেশজুড়ে। তবে ইয়াঙ্গুনের পার্শ্ববর্তী চায়না টাউনে মানুষজনের চলাচল থাকলেও স্বাভাবিকের তুলনায় তা একেবারেই কম।

ইন্টারনেট সেবা সীমিত করায় বহির্বিশ্ব থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন মিয়ানমার। জরুরি অবস্থার মধ্যে কোনমতে যারা ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিয়ানমারকে রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

সামরিক শাসনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে হুমকিতে ফেলায় মিয়ানমারের সেনা শাসকদের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।

হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জেন সাকি বলেন, মিয়ানমার ও ওই অঞ্চলের সবার জন্য একই বার্তা প্রযোজ্য। অং সান সু চিসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে আটক, সেনাবাহিনীর ক্ষমতাগ্রহণ সবই গণতান্ত্রিক ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতি চরম অপমান। অং সান সু চিকে আটক ও সেনাবাহিনীর দখলের রোহিঙ্গা সঙ্কট তীব্রতর হওয়ার পাশাপাশি রাখাইনে থাকা ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক বলেন, রাখাইনে ছয় লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা বিভিন্ন শিবিরে মানবেতর জীবন যাপন করছে। আমাদের আশঙ্কা মিয়ানমার সেনাবাহিনী তাদের ওপর আরো অত্যাচার নির্যাতন চালাতে পারে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফেরাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

এরমধ্যেই, মিয়ানমারের সবশেষ পরিস্থিতি নিয়ে করণীয় ঠিক করতে জরুরি বৈঠক ডেকেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।

এদিকে, অং সান সু চিকে আটক ও জরুরি অবস্থা জারির প্রতিবাদে থাইল্যান্ড, জাপানসহ বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভ করেছেন মিয়ানমারের নাগরিকরা।