রাজধানীর পল্টন থানায় করা লিবিয়ায় মানব পাচার মামলায় গ্রেফতার হওয়া আরও দুই আসামিকে তিন দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত। গতকাল ঢাকা মহানগর হাকিম জিয়াউর রহমান রিমান্ডের এ আদেশ দেন।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক এস এম গফফারুল আলম জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসামি কবির হোসেন ও নাছির উদ্দিনকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন।
এর আগে মহসিন হাওলাদার, জাহাঙ্গীর হোসেন ও বাদশা ফকির নামে এ মামলার আরও তিন আসামিকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এদের মধ্যে আসামি মহসিন হাওলাদার দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। মানব পাচারের ঘটনায় রাকিবের বাবা মান্নান মুন্সি ৫ জুন পল্টন থানায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আসামিরা হলেন- মনির হাওলাদার, মহসিন হাওলাদার, খোকন হাওলাদার, জাহাঙ্গীর, বাদশা ফকির, কবীর, শরীফ, লিবিয়ায় অবস্থানকারী মুন্না, রহিম বেঙ্গলি, আলামিন, রুবেল, আরিফ, শাকিল, সাইফুল, মানিক, আবদুল্লাহ। মামলায় অভিযোগ করা হয়, মনির হাওলাদার লিবিয়ায় থাকতেন। তিনি বিভিন্ন সময় লিবিয়ায় লোক নিয়েছেন। মান্নান মুন্সি তার ছেলে রাকিবকে লিবিয়ায় পাঠানোর প্রস্তাব দিলে মনির হাওলাদার রাজি হয়। গত বছর জুন বা জুলাই মাসের দিকে মনির হাওলাদার রাকিবকে লিবিয়ায় পাঠায়। প্রথমে সাড়ে তিন লাখ টাকায় লিবিয়ায় নেওয়ার কথা হলেও আসামিরা পরে আরও সাড়ে তিন লাখ টাকা দাবি করে। টাকার জন্য তারা রাকিবের ওপর নির্যাতন চালায়। ভিটেবাড়ি বিক্রি করে আরও সাড়ে তিন লাখ টাকা পাঠায় তার পরিবার। সাত লাখ পাঁচ হাজার টাকা দেওয়ার পরও আসামিরা রাকিবকে ছাড়ে না। তারা আরও ৩০ হাজার টাকা দাবি করে। রাকিবের ওপর নির্যাতন চালিয়ে মান্নান মুন্সির সঙ্গে কথা বলতে দিত আসামিরা। তখন রাকিব চিৎকার-চেঁচামেচি করে বাঁচার আকুতি জানাত। টাকা দিতে না পারায় রাকিবকে মারধর করে আসামিরা। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ পাচ্ছে না পরিবার। ২৮ মে লিবিয়ায় মানব পাচারকারীদের হাতে ২৬ বাংলাদেশি নিহত ও ১২ জন আহত হন। ১৫ দিন আগে লিবিয়ার বেনগাজি থেকে মরুভূমি পাড়ি দিয়ে ত্রিপলিতে নেওয়া হচ্ছিল ৩৮ বাংলাদেশিকে। পথেই তাদের জিম্মি করে সন্ত্রাসীরা। এর মধ্যে ২৬ জনকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়। এরপর এ বিষয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন থানায় ২২টি মামলা দায়ের করা হয়।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন