রাজধানীর সদরঘাটে বুড়িগঙ্গা নদীতে লঞ্চের ধাক্কায় লঞ্চ ডুবির ঘটনায় আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ধার অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এখনো নদীতে টহল দিচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম। লঞ্চ ডুবির এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে নিখোঁজের কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।
মঙ্গলবার বিকেলে নৌপরিবহন খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআইডব্লিউটিএ এর যুগ্ম পরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিন উদ্ধার অভিযান সমাপ্তির এ কথা জানান। তিনি বলেন, ডুবে যাওয়া লঞ্চ এমএল মর্নিং বার্ডকে টেনে সদরঘাটের কুমিল্লা ডকইয়ার্ডের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ভেতরে আর কোনো মৃতদেহ পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তা রাসেল হোসেন জানান,বিআইডব্লিউটিএ তাদের উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেছে। তবে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালকের নির্দেশক্রমে ফায়ার সার্ভিসের একটি স্পিড বোট টিম বুড়িগঙ্গায় টহল দিচ্ছে, যদি কোনো লাশ ভেসে উঠে তা উদ্ধারের জন্য। তিনি আরো জানান, ডুবে যাওয়া লঞ্চটিকে এখনো উপরে তোলা সম্ভব হয়নি। তবে ডুবন্ত লঞ্চটিকে টেনে নিরাপদ স্থানে নিয়ে রাখা হয়েছে।
গতকাল সোমবার সকালে এমএল ‘মর্নিং বার্ড’ নামে লঞ্চটিকে সদরঘাটের কাছে বুড়িগঙ্গায় ‘ময়ূর-২’নামের আরেকটি বড় লঞ্চ ধাক্কা দিলে মুহূর্তেই তা ডুবে যায়। এ ঘটনায় সোমবার উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে ৩০টি মরদেহ উদ্ধার করেন। এছাড়া স্থানীয়রা আরো দুটি মরদেহ উদ্ধার করেন। মঙ্গলবার দুপুরে নদীতে ডুবে থাকা লঞ্চটির ভেতরে মর্নিং বার্ডের ইঞ্জিন গ্রিজার আশিক হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা। আবদুর রহমান বেপারী (৪৫) নামে আরো একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
আবদুর রহমান বেপারী মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ির আবদুল্লাহপুরের মৃত শমসের বেপারীর ছেলে।
এর আগে লঞ্চডুবির প্রায় ১৩ ঘণ্টা পর রাত সোয়া ১০টার দিকে সুমন বেপারী নামে একজনকে জীবিত উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।
এদিকে এ দুর্ঘটনায় ‘অবহেলাজনিত মৃত্যু’ ঘটানোর অভিযোগ এনে ময়ূর-২ লঞ্চের মালিক, মাস্টারসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে নৌপুলিশ। তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং বিআইডব্লিউটিএ-এর পক্ষ থেকে।