বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৪ লাখ চার হাজারে। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭০ লাখ ১৫ হাজারের বেশি। এর মধ্যে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই মারা গেছেন প্রায় ১ লাখ ১৩ হাজার মানুষ। তালিকায় এর পরই আছে যুক্তরাজ্য ও ব্রাজিলের নাম। এদিকে আক্রান্তের দিক থেকে শীর্ষ পাঁচ দেশের তালিকায় উঠে এসেছে ভারত। এ অবস্থায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশে আক্রান্তে বিস্ফোরণ ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী, গত শনিবার ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ব্রাজিলে। সেখানে করোনায় আক্রান্তে হয়ে মারা যান ৯১০ জন। এর পরের সারিতে থাকা যুক্তরাষ্ট্রে মারা যান ৭০৬ জন, মেক্সিকোতে ৬২৫ জন, ভারতে ২৯৭ জন, যুক্তরাজ্যে ২০৪ জন, রাশিয়ায় ১৯৭ জন, পাকিস্তানে ৯৭ জন। এদিন বিশ্বে নতুন করে মারা যান ৪ হাজার ২৫৩ জন এবং আক্রান্ত হন প্রায় ১ লাখ ২৯ হাজার জন। জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আক্রান্তের তালিকায় এখন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, রাশিয়া ও যুক্তরাজ্যের পরেই অবস্থান করছে ভারত।
আক্রান্তে দক্ষিণ এশিয়ায় বিস্ফোরণের আশঙ্কা : কদিন আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছিল, ভারতে করোনা আগের মতোই বিপজ্জনক। একটুও শক্তিক্ষয় হয়নি ভাইরাসের। কিন্তু এবার তারা বলছে, ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার সবকটি দেশ এখনো ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ এলাকার মধ্যে রয়েছে। দেশগুলোতে এখনো করোনা আক্রান্তের সংখ্যায় বিস্ফোরণ হয়নি, তবে যে কোনো সময় তা হতে পারে। তার কারণ এই দেশগুলো ঘনবসতি। সূত্র : ভারতীয় গণমাধ্যম। সংস্থার জরুরি বিভাগের কর্তা মাইকেল রায়ান বলেন, ভারতে সংক্রমণ দ্বিগুণ হতে এখনো তিন সপ্তাহ সময় লাগছে। এই পরিস্থিতিটা বিস্ফোরক সংক্রমণের ইঙ্গিত এখনো দিচ্ছে না। কিন্তু রোগটা নিয়মিত হারে বাড়ছে। শুধু ভারত নয়, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশেসহ দক্ষিণ এশিয়ার কোনো দেশেই এই রোগটি এখনো ব্যাপক সংক্রমণ শুরু করেনি। কিন্তু ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে। যে কোনো সময় ‘করোনা বিস্ফোরণ’ হতে পারে।
আজ থেকে সচল নিউইয়র্ক সিটি : যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ৮১ দিন পর আজ ৮ জুন থেকে সচল হচ্ছে নিউইয়র্ক সিটি। তবে পুরোপুরি নয়, এটি হবে সচল হওয়ার প্রথম ধাপে আরোহণ। করোনা মহামারীর কারণে মার্চের ১৯ তারিখ থেকেই এই সিটিসহ বহু সিটি লকডাউনে যায়। বিশেষ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাসার বাইরে যেতে পারতেন না। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে এমন ব্যবস্থার সুফল এই সিটির লোকজন পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন স্টেট গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো এবং সিটি মেয়র বিল ডি ব্লাসিয়ো। পুনরায় সচল করার প্রথম ধাপে কনস্ট্রাকশনের কাজ শুরু হবে। লকডাউনে যাবার সময়ে স্থগিত হওয়া ৩২ হাজার প্রকল্পের কাজ আগে শুরু হবে। এ ছাড়া ম্যানুফেকচারিং, কৃষি, বনায়ন, মংস্য উৎপাদনের কাজও করা যাবে। তবে সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। ৬ ফুট অন্তর অবস্থান করতে হবে কর্মক্ষেত্রে। ব্যবহার করতে হবে স্যানিটাইজার। এই ধাপে রাস্তা সংলগ্ন দোকানপাট খোলা যাবে। তবে পণ্য বিক্রি করতে হবে শুধু অনলাইনের অর্ডারে। অর্থাৎ অর্ডারের পর গ্রাহক এসে পণ্য নিয়ে যাবেন। এই ধাপের অগ্রগতি মনিটরিংয়ে থাকবে ১৪ দিন।
সে সময়ের মধ্যে যদি করোনা সংক্রমণের হার এবং মৃত্যুর সংখ্যা না বাড়ে- তাহলে ২২ জুন থেকে দ্বিতীয় ধাপে উন্নীত হবে এই সিটি। সে সময়ে খুলবে দোকান, অফিস, রিয়েল এস্টেট ব্যবসা, সেলুন, ব্যায়ামাগার এবং বার-রেস্টুরেন্ট। তবে সব কর্মচারীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। মাস্ক ছাড়া কাউকে দোকানে ঢুকতে দেওয়া হবে না। সামাজিক দূরত্ব মেনে অফিস চালাতে হবে। সেলুনে চুল কাটার সময়েও বিশেষ ব্যবস্থা অবলম্বন করতে হবে।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন