রিয়া, অঙ্কিতা বা সারা নন, সুশান্ত সময় কাটাতে চেয়েছিলেন বলিউডের অন্য এক অভিনেত্রীর সঙ্গে, ছাড়তে চেয়েছিলেন ধূমপানও। বন্ধু মহেশ এবং দিদি প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে চেয়েছিলেন সময় কাটাতে। প্রকাশ্যে এল সুশান্ত সিংহ রাজপুতের বছর দু’য়েক আগে হাতে লেখা কিছু নোট।

‘ইন্ডিয়া টুডে’র একটি রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, ২০১৮-র ২৭ এপ্রিল ওই ‘ডেইলি চার্ট’ তৈরি করেছিলেন সুশান্ত। তাতে প্রথমেই লেখা ছিল রাত আড়াইটের সময় ঘুম থেকে উঠবেন তিনি। খাবেন ‘সুপারম্যান’ চা এবং এর পরেই বেদমন্ত্র জপের পর স্নান করবেন।

তবে ওই পাতার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য জিনিস হল ৮ নম্বর পয়েন্টটি। সেখানে নীল কালিতে লেখা ‘কৃতির সঙ্গে সময় কাটাব’। তাতে লাল টিক করা। তার মানে নেহাতই বন্ধু না, অভিনেত্রী কৃতি শ্যাননের সঙ্গেও সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন সুশান্ত?

আগামী কয়েক দিনে কী কী করতে চলেছেন তা যে সবিস্তার ডায়েরিতে লিখে রাখতেন সুশান্ত সে কথা আগেই জানিয়েছিলেন সুশান্ত ঘনিষ্ঠরা। প্রাক্তন প্রেমিকা অঙ্কিতা তো বলেছিলেন, শুধু কয়েক দিন নয়, আগামী পাঁচ বছরে তাঁর কী কী পরিকল্পনা তা-ও ছকে রাখতেন অভিনেতা।

দু’বছর পর খুঁজে পাওয়া ওই নোটে আরও দেখা যাচ্ছে, সুশান্ত তাঁর ‘টু ডু’ লিস্টে লিখে রেখেছেন ‘কেদারনাথ’ স্ক্রিপ্ট পড়ার কথাও। এখানেই শেষ নয়, ওই পাতারই তিন নম্বর পয়েন্টে লেখা রয়েছে ‘নো স্মোকিং’। তার উপরে লাল কালিতে টিক মার্ক। সুতরাং ধারণা করা যায়, ২০১৮ নাগাদ সিগারেট ছাড়তে চেয়েছিলেন সুশান্ত।

তবে এত সব পয়েন্টের মধ্যেও যে পয়েন্ট আপাতত চর্চার প্রথম সারিতে তা হল সুশান্ত-কৃতির প্রেম, একসঙ্গে সময় কাটানো।

একসঙ্গে প্রথম ছবি ‘রাবতা’র সময়েই দু’জনের সম্পর্কের গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল ইন্ডাস্ট্রিতে। যথারীতি কেউ স্বীকার করেননি। রাবতা মুক্তি পেয়েছিল ২০১৭-তে। এই লিস্ট ২০১৮-র। সে সময় কি তবে সম্পর্কে ছিলেন কৃতি-সুশান্ত? উঠছে প্রশ্ন।

সুশান্ত মারা গেলে যে কয়েক জন বলিস্টার তাঁর অন্তিম যাত্রায় সঙ্গী হয়েছিলেন কৃতি তাঁদের অন্যতম। গত ১৫ জুন তিনি এসেছিলেন ভিলে পার্লের শ্মশানে। চুপ করে দাঁড়িয়েছিলেন এক ধারে। সুশান্তের বাবা জানিয়েছিলেন, কৃতি তাঁর সঙ্গে যেচে কথা বলেছিলেন সে দিন। এর পরের দিনই সুশান্ত এবং তাঁর এক ঘনিষ্ঠ ছবি পোস্ট করে কৃতি লিখেছিলেন, ‘‘সুশ, আমি ভালমতো জানতাম, ক্ষুরধার মন তোমার প্রিয় বন্ধু, আবার সবচেয়ে বড় শত্রুও… আমি যদি তোমার ভেঙে যাওয়া মনটাকে জোড়া দিতে পারতাম… তোমাকে যারা ভালবাসত, তাদের যদি তুমি দূরে না সরিয়ে দিতে…’’,আক্ষেপে মিশে ছিল বিরহবেদনাও।

তিনি আরও লিখেছিলেন, “বাকি আধখানা হৃদয় নিয়েই পুরো জীবন আমায় বেঁচে থাকতে হবে। যেখানে জুড়ে থাকবে শুধুই তুমি।’’

যদি ধরেও নেওয়া যায় ওঁরা সম্পর্কে ছিলেন তবে বিচ্ছেদ হল কেন! সম্পর্কে তৃতীয় ব্যক্তি? কে সেই ব্যক্তি? সারা আলি খান। গত কয়েক দিন যাঁর নাম জড়িয়েছে সুশান্তের সঙ্গে সম্পর্ক এবং মাদকযোগে। প্রশ্ন হাজার, উত্তর অজানা।

শুধু ওই একটি ‘টু ডু’ লিস্টই নয়। পাওয়া গিয়েছে সুশান্তের হাতে লেখা আরও বেশ কয়েকটি পাতা। তাতে কোনওটায় হিজিবিজি। আবার কোনওটায় কবির, রুমির লেখা কিছু উদ্ধৃতি। রয়েছে নীতি আয়োগের কথা, নাসার প্রসঙ্গও। এখানেই শেষ নয়,‘তৃতীয় চক্ষু’র কথারও উল্লেখ আছে।সুশান্ত লিখেছিলেন, পুরাণে যা তৃতীয় চক্ষু, বিজ্ঞানে তাই পিনাল গ্রন্থি। উল্লেখ রয়েছে সোমরস, কৈলাস, তপস্যা ইত্যাদি শব্দেরও।