বৃষ্টি হলে এমন দৃশ্য নিয়মিত ঘটনা ঢাকায়। ছবি: বিবিসি।

ঢাকার মিরপুর, ধানমন্ডি, শান্তিনগরসহ নানা এলাকার রাস্তায় পানি নিয়ে ব্যঙ্গ আর হাসি তামাশা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

বৃষ্টির কারণে গত দুদিনের মতো বুধবার (২২জুলাই) ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় হাঁটু বা কোমর সমান পানি দেখা গেছে। বিবিসি।

শনির আখড়ার অধিবাসী মনজিদা আখতার বলছেন পানি তাদের দুর্ভোগ চরমে তুলেছে।

“বাসার সিঁড়ির নিচে কক্সবাজারের মতো দৃশ্য। আর উপরে রুমে পানি নেই। মধুবাগে এসেছি সেখানে হাঁটু পানি,” বুধবার বিকেলে বলছিলেন মনজিদা আখতার।

গ্রিন রোডে থাকেন ফেরদৌসি রেজা চৌধুরী। তিনি বলছেন, অল্প বৃষ্টিতেই পানি জমে সেখানে।

আসলে গত পরশু, গতকাল ও আজ ঢাকার বহু সড়কেরই এমন দৃশ্য। মিরপুর, ধানমন্ডি, শান্তিনগরসহ নানা এলাকার রাস্তার পানি নিয়ে ব্যঙ্গ আর হাসি তামশা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।

পরিস্থিতি নিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম আজ বুধবার ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন ঢাকার দুই মেয়র ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সাথে।

ঢাকা দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নুর তাপস বলছেন ওয়াসা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে তাই জলাবদ্ধতার সমাধান চাইলে দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনকেই দিতে হবে।

তিনি বলেন, “ওয়াসা ব্যর্থ হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ব্যর্থ হয়েছে। আইন মোতাবেক জলাবদ্ধতা নিরসনের দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনকে বুঝিয়ে দিতে হবে। অথচ জলাশয়, খাল অন্যদের দিয়ে রাখা হয়েছে। এগুলো সিটি কর্পোরেশনকে বুঝিয়ে দিলে আমরা কার্যকর পরিকল্পনা করে আমাদের যে মহাপরিকল্পনার কাজ চলছে তার অংশ হিসেবে জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করতে পারবো।”

তাহলে এখন আর সিটি কর্পোরেশন কোনো কাজ করতে পারছে না জলাবদ্ধতা নিরসনে- পরিস্থিতি কি এমনই? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “যথার্থই তাই। মানুষের ভোগান্তি আমরা দেখছি কিন্তু কিছু করতে তো পারছি না।”

তবে জলাবদ্ধতা নিয়ে আজ স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ঢাকার মেয়র সহ যাদের নিয়ে বৈঠক করেছেন সেখানে বেশ সোচ্চার ছিলেন দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নুর তাপস।

ওদিকে পানি প্রবাহের যে খালগুলো প্রায় বন্ধ সেগুলোসহ জলাবদ্ধতা নিরসনে ঢাকা ওয়াসার অধীনে পাম্প হাউজগুলো সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ও ঢাকার দুই মেয়রসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কর্মকর্তারা।

মানুষ কবে এই জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবে-এমন প্রশ্নের জবাবে মিস্টার ইসলাম বলছেন, কবে নাগাদ সমস্যার সমাধান হবে সেটি এখনই বলা যাচ্ছে না।

“আমরা সমস্যাগুলো দেখছি। এরপর সমাধানে কি করা যায় সেটি দেখা হবে। কাদের মাধ্যমে সমাধান হলে ভালো হবে সেটি দেখে কাজ করা হবে। হুট করে এখনই বা পনের দিনে সমাধান হবে সেটি বলা যাচ্ছে না। কিন্তু আমি আশ্বস্ত করতে চাই যে এর সমাধান হবে।”

আবার সিটি কর্পোরেশনকে দায়িত্ব দেয়া হবে কিনা তাও চিন্তা ভাবনা করেই চূড়ান্ত করা হবে বলছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী। অর্থাৎ আপাতত জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি মিলছে না নগরবাসীর।

যদিও মন্ত্রী বলছেন দ্রুত পানি অপসারণের যেসব কার্যক্রম আছে সেগুলো জোরদার করা হচ্ছে।