নাসিম আনোয়ার: করিতে পারি না কাজ,সদা ভয়- সদা লাজ। সংশয়ে সংকল্প সদা টলে।পাছে লোকে কিছু বলে। কালজয়ী কবি কামিনী রায়, এ কথা তাঁর কবিতায় বলেছেন। ঝালকাঠি সদরের বাসন্ডায় এ কবি’ র বাড়ি। আমি গর্বিত আমার বাড়ি ঝালকাঠি সদরের শেখের হাটে। হয়তো আমি হতে পারিনি কিছুই!

একটি সময় একই হাউজে ফরিদা আপার সামনা সামনি বসতাম। সে ভাবেই যতোটা চেনা। তবে কোনো মানুষ,কোনো মানুষের সান্নিধ্যে পেলে কিছুটা হলেও তাঁর প্রতি অধিকার জন্মে। আমি এতোটাই দুর্ভাগা যে, কেউ কোনোদিন আমাকে কাছে টানেনি! অধিকার জন্মাবে কি ভাবে? সম্ভবত আমার মধ্যে মানুষের কিছু নেই,হয়তোবা? আমি সংকীর্ণ মানসিকতার বলেই, খুব সম্ভব আমাকে কেহ মানুষ হিসেবে, মনে করেন না।

আসলে আমরা নিজেই নিজেরটা ভালো বুঝি।অন্যেরটা বোঝার কি প্রয়োজন? নিজের জন্য যুদ্ধ করি। কেনো কারো চিন্তা করবো?

আমাকে আর কে মিশন রোডস্থ আমার কর্মস্থল ইত্তেফাক পত্রিকা অফিসে আবুল খায়ের গং নির্মম,নিষ্ঠুরভাবে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে ছিলো। সে দিন ফরিদা ইয়াসমিন তা দেখেও, না দেখার ভান করে ছিলেন। কর্মরত সাংবাদিক ভাইয়েরা ছিলেন,হিজরার ভূমিকায়। ক্যাব সভাপতি আবুল খায়েরের ভয়ে সবাই আতংকিত।

আমরা আজ কোথায় পৌঁছে গেছি! আমি একজন মানুষ হলে আমার ভুল, দোষ ত্রুটি হতেই পারে ।অপরাধ আমি করতেই পারি। হতেই পারে আমার অপরাধ। প্রচলিত আইনে আমার বিচার হবে। আমার জেল হতে পারে,ফাঁসি হতে পারে। আইন সবার জন্য সমান,কোনো মানুষই আইনের উর্দ্ধে নয়।

মানুষ যদি মানুষের জন্য হয়,তা হলে কেনো হবে মানবাধিকার লঙ্ঘন? আমার ওপর অবিচার,নির্যাতন করে আমাকে না হয় মেরেই ফেললেন। কি হবে তাতে?

তবে আপনি পার পেয়ে যাবেন! মনে রাখবেন, ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করেনি,কোনো দিন। করবেও না। আপনি ক্ষমতাবান,আজীবনই আপনার ক্ষমতা, স্বাধীনতার পর থেকে সব সরকারের আমলে মন্ত্রী ছিলেন। ক্ষমতার মোহে আপনি পাগল প্রায়।

নিয়ন্ত্রণ করছেন,ক্যাব। প্রেসক্লাব,সাংবাদিক ইউনিয়ন সহ সকল মিডিয়া। ২১ আগস্ট কোথায় ছিলেন? কি ভূমিকা ছিলো আপনার? কোন পরিকল্পনা আবার করছেন?
আমি বিষধর সাপের লেজ দিয়ে কান চুলকাচ্ছি। জানি এর পরিনাম ভয়াবহ। আমাকে না-হয় মেরেই ফেলবেন!মারেন না! মরতে তো হবেই, একদিন।

এ পৃথিবীতে পাঁচশত বছরতো আর বাঁচবো না! তবে একটি কথা, আমাকে মারার পর, মাদক ব্যবসায়ি। অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীর নাটক সাজানোর কি দরকার? গোয়েন্দা সংস্থা গুলো তো আপনাদের হাতের মুঠোয়। আগেই চিনহিত করে জাতির সামনে আমাকে উপস্থাপন করুন। আগে করলে জাতির কাছে বাহ্ বাহ্ পাবেন। মরার পরে যে নাটক সাজাবেন,এসব জাতি জেনে গেছে।

এ সব পুরানো নাটক জাতি বুঝে গেছেন। দেশের গোয়েন্দা সংস্থা গুলো আপনাদের হাতের মুঠোয় না থাকলে কক্সবাজার সহ সারা দেশে এমন ঘটনা ঘটতো না। আমাকে মারার পর খতিয়ে দেখবেন আগে একটু খতিয়ে দেখা যায় না?

মহামারি, বানের পানিতে ভাসছেন দেশের হতদরিদ্র জনগোষ্ঠী, যাদের বরাদ্দের অর্থ ত্রাণ লুট হয়, বাতাসে উড়ে টাকা! প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে গেছে ইয়াবা। উদ্যোমি যুব সমাজ ক্রমাগত আসক্ত হচ্ছে। এ ভাবে চলতে থাকলে,আগামী পনের বছরে,নিশ্চিত জাতি হবে মেরুদণ্ড হীন!

মিডিয়ায় এখন তরুণ- তরুণী সৃষ্টির উল্লাসে মেতেছেন,তাঁদের অভিনন্দন তবে যে, মিডিয়ার দস্যুরা তাদের করছে বিপথগামী! সেদিকে দৃষ্টি আছে তো? কথায় কথায় ছাটাই। প্রতিষ্ঠানে ঝুলিয়ে দিচ্ছেন তালা। তৃণমূলে নেই বেতন/ ভাতা ফলে আপনাদের দেয়া এ নিয়োগ ও পরিচয় পত্র ব্যবহার হচ্ছে নানান অপকর্মে। গোটা জাতি আজ দিশেহারা। ভূত ছাড়াবে ওঝা। ওঝাকেই এখন ভূতে ধরে। ওঝাকে ভূতে ধরে কেনো, জানেন তো? এখানে ওঝার কোনোই দোষ নেই।

ভিটেমাটি, গরুছাগল বিক্রি করে, তিনি মন্ত্র শিখেছেন এবং ওঝাও হয়েছেন। ঐ যে মন্ত্র শেখার আগেই তো,ভিটেমাটি বিক্রি শেষ। আগে ওঝার চদ্দো গোষ্ঠীরটা সুদে আসলে তুলে ফেললে না হয়,আসল ভূতটা ছাড়াবে!

লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট