
আপনার ফুসফুস ঠিক মতো কাজ করছে কি না জানতে চান? তার জন্য কোনও কঠিন বা জটিল পরীক্ষা করানোর প্রয়োজন নেই। এ বার তা জেনে নিতে পারেন মাত্র ১ মিনিটে। শ্বাস নিতে কোনও সমস্যা হচ্ছে না মানেই যে ফুসফুসের স্বাস্থ্য খুবই ভাল আছে তা নয়। তলে তলে হাঁপানির সমস্যা বাসা বাঁধছে কি না, অথবা চুপিসাড়ে অ্যালার্জি মাথাচাড়া দিচ্ছে কি না, তা জানতে নানা রকম মেডিকেল টেস্ট করান চিকিৎসকেরা। কিন্তু যদি প্রাথমিক ভাবে নিজে থেকেই তা জানার ইচ্ছা হয়, তার উপায় আছে। ঘরে বসে বা অফিসে, অথবা যাতায়াত করার সময়ে এক জায়গায় বসে মাত্র ৬০ সেকেন্ড সময় দিলেই হবে। ওই এক মিনিটেই বোঝা যাবে, ফুসফুসের হাল ঠিক কেমন? কোনও ভয়ের কারণ আছে কি না?
ফুসফুসের ক্যানসার নিয়ে চিন্তা বেড়েই চলেছে। আগে মনে করা হত, ধূমপায়ীরাই বুঝি এই ক্যানসারে আক্রান্ত হন। এখন দেখা যাচ্ছে, শুধু তা নয়। যিনি সিগারেট বা তামাকজাত দ্রব্য ছুঁয়েও দেখেননি, তারও হচ্ছে ফুসফুসের ক্যানসার। এর জন্য অনেকটাই দায়ী দূষণ। বাতাসে ধোঁয়া-ধুলো ও দূষিত গ্যাসের মাত্রা যত বাড়ছে, ততই ফুসফুসের নানা রকম সংক্রমণ জনিত রোগ বাসা বাঁধছে। কেউ ভুগছেন হাঁপানিতে, কারও সিওপিডি, তো কারও ফুসফুসে নীরবে বাসা বাঁধছে মারণরোগ। এর থেকে রেহাই পেতে হলে সতর্ক থাকতেই হবে। ফুসফুসের হাল কেমন, তা বাইরে থেকে বোঝা সম্ভব নয়। আবার দূষণের প্রকোপ সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলাও যাবে না। তাই এক মিনিটের ওই পরীক্ষার উপরে ভরসা রাখতে পারেন। যদি বোঝা যায়, যে ভয়ের কারণ সত্যিই আছে, তা হলে চিকিৎসকের কাছে যেতে দেরি করবেন না।
১ মিনিটের পরীক্ষাটি কেমন?
স্থির হয়ে বসে নাক দিয়ে গভীর ভাবে শ্বাস টানতে হবে। এখানে একটা নিয়ম আছে। অনেক ক্ষণ ধরে ধীরে ধীরে শ্বাস টানতে হবে।
শ্বাস নেওয়ার পরে ৬০ সেকেন্ড তা ধরে রাখতে হবে। এর মধ্যে শ্বাস ছাড়লে চলবে না।
৬০ সেকেন্ড পরে একই ভাবে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়তে হবে।
পরীক্ষাটি করার সময়েই কিছু পরিবর্তন লক্ষ করবেন। সাধারণত শ্বাস টেনেই তা ছেড়ে দেওয়া হয়। তাই সেখানে কোনও বদল আলাদা করে বোঝা যায় না। যখন শ্বাস খুব ধীরে ধীরে সময় নিয়ে টানবেন, তখন যদি দেখেন শ্বাস টানার সময়ে নাক বন্ধ হয়ে আসছে, হাঁচি আসছে বা বুকে চাপ লাগছে, তা হলে বুঝতে হবে, ফুসফুস খারাপের দিকে যাচ্ছে।
আরও ভাল বোঝা যাবে শ্বাস ধরে রাখার ওই ৬০ সেকেন্ড সময়টাতে। টানা ১ মিনিট ধরে শ্বাস যদি ধরে রাখতে পারেন, তা হলে বুঝতে হবে, ফুসফুসের তেমন কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু যদি দেখা যায়, শ্বাস ধরে রাখার সময়ে শ্বাসকষ্ট বাড়ছে, বুকে চাপ চাপ ব্যথা লাগছে, ক্রমাগত কাশি আসছে অথবা নাক-গলা দিয়ে শ্লেষ্মা উঠে আসছে, তা হলে বুঝতে হবে, হাঁপানির সমস্যা মাথাচাড়া দিচ্ছে। ফুসফুসে ব্লকেজও রয়েছে।
শ্বাস ছাড়ার সময়েও যদি দেখা যায় সমস্যা হচ্ছে, নাক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, তা হলেও বিষয়টি চিন্তার। সে ক্ষেত্রে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

