
বিদেশে শ্রমশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে দালাল চক্র বড় বাধা বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক অভিবাসী ও প্রবাসী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, শ্রমশক্তি রপ্তানির পুরোটাই দালাল বেষ্টিত। পদে পদে দালালদের প্রতারণার জন্য মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এই শ্রমশক্তি রপ্তানি খাতকে দালাল মুক্ত করতে না পারলে উন্নতি সম্ভব না।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে শ্রমিকদের মুক্তির কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তারা অনেক কষ্ট করে বিদেশ গেছেন। সেখানে আইন অমান্য করলে কি শাস্তি হবে সবই জানতো, তারপরও দেশের জন্য আইন ভাঙল। পরবর্তীতে ওই দেশের সরকারকে অনুরোধ করলাম, তিনি তাদের মুক্তি দিলেন।
তিনি বলেন, আমি প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর আনোয়ার ইব্রাহিম এখানে আসলেন। তখন খবর পেলাম ১৭ হাজার শ্রমিক মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে মালেয়েশিয়া যেতে পারেনি। তারা সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। আনোয়ার ইব্রাহিমকে বললাম, এদেরকে নিয়ে যেতে হবে। বন্ধু (আনোয়ার ইব্রাহিম) মানুষ না করতে পারেনি। বলছে, ঠিক আছে নিয়ে যাব। পরবর্তীতে মালয়েশিয়া সফরে গিয়ে এগুলো নিয়ে কাজ করলাম। তখন দেখা গেছে, পুরো জগতটা দালাল-সিন্ডিকেট ভরা। সরকার এখান থেকে অনেকদূরে। এ হলো বিদেশ যারা যেতে চাচ্ছেন, তাদের কপাল।
ড. ইউনূস বলেন, জাপান সফরে গেলাম। তারা বলল, লোক দরকার। আমরা বললাম, আমরা তো লোক নিয়ে বসে আছি। কত লোক লাগবে। বলল, জানাবে। তারা নেপাল থেকে ৭ হাজার লোক নিয়েছে। আমি জানতে চাইলাম, বাংলাদেশ থেকে কত নিয়েছে? বলল, মাত্র ২ হাজার। শুনে অবাক হলাম, নেপাল থেকে এতো হলে, বাংলাদেশ থেকে কম কেন। আমাকে জিজ্ঞেস করল, কত দিতে পারব। আমি বললাম একলাখ লোক দিতে পারব। শুধু ভাষা শিখলে ওখানে যেতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, জাপানের বহু শহরে ট্যাক্সি বন্ধ হয়ে গেছে, ড্রাইভার নেই। মাইলের পর মাইল খালি জমি পড়ে আছে, জনশূন্য। তারা বলল, লোক পাঠাও আমরা যাতে এগুলো চালু করতে পারি। চাষাবাদ করতে পারি।

