প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদফতরের (ডিজিএফআই) সাবেক মহাপরিচালক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) এম ফজলে আকবর বলেছেন, দেশ থেকে জঙ্গিবাদ স্থায়ীভাবে নির্মূল করতে হলে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলোর যেমন ভূমিকা রয়েছে, ঠিক একই ভূমিকা রয়েছে মসজিদের ইমাম ও বুদ্ধিজীবীদের। ভূমিকা রয়েছে গণমাধ্যমেরও। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে উগ্রবাদ বা জঙ্গিবাদের কিছু কিছু প্রভাব আমাদের দেশেও এসে পড়ে। আমাদের দেশের কিছু সংগঠন তাদের অনুসরণ করে কিছু দুঃখজনক ঘটনাও ঘটিয়েছে। এরপরেও আমি মনে করি, ২০০৫ থেকে ২০২০ পর্যন্ত সময়ে সন্ত্রাসবাদ দমনে আমরা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পেরেছি। বিশেষ করে ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত সন্ত্রাসবাদ দমনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা প্রশংসনীয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকেও আমরা অভিনন্দন পেয়েছি। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাসবাদ দমনে আমাদের সাফল্য অনস্বীকার্য। এম ফজলে আকবর বলেন, জেএমবি বা আল কায়দা, এরা কিন্তু বাংলাদেশে ঘাঁটি গাড়তে পারেনি। জেএমবির কিছু কিছু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিভিন্ন জায়গায় রয়ে গেছে, তবে তারা ধরাও পড়ছে। তাদের মনিটরিংও করা হচ্ছে। আমি মনে করি, আইনশৃঙ্খলারক্ষা বাহিনী ও গোয়েন্দারা এ বিষয়ে সাফল্য দেখিয়েছে। জঙ্গিদের বিচার নিশ্চিত হওয়া প্রসঙ্গে এ নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলেন, আমি মনে করি, বিচারের বিষয়ে আমাদের আরও যত্নবান হতে হবে। গোয়েন্দা, তদন্ত সংস্থা ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের নিয়ে একটি মনিটরিং সেল গঠন করতে হবে। সবার সমন্বয়ে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রত্যেকটা মামলা মনিটরিং করে শেষ পর্যন্ত ফলাফল নিয়ে আসতে হবে। তাহলেই দেশ থেকে জঙ্গি দমন সম্ভব হবে। তরুণ প্রজন্মকে জঙ্গিবাদ থেকে দূরে থাকার কৌশল প্রসঙ্গে লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) এম ফজলে আকবর বলেন, তরুণ প্রজন্মকে জঙ্গিবাদ থেকে রক্ষায় সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের যেমন ভূমিকা রয়েছে, একই ভূমিকা রয়েছে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর। ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা যেন না হয়, সে বিষয়ে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে আলোচনা করতে হবে। যে যার কথা শুনবে তাকে দিয়েই চেষ্টা করতে হবে। জুমার খুতবায় বা টেলিভিশনের টকশোতে বুদ্ধিজীবীদের আলোচনা, সব স্থানেই সন্ত্রাসবাদের খারাপ দিকগুলো তুলে ধরতে হবে। সন্ত্রাসবাদ রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য কতটুকু হুমকি, তা বিভিন্ন নাটক বা ফিল্মের মাধ্যমে তুলে ধরা যায় বলেও মনে করেন এ নিরাপত্তা বিশ্লেষক। সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন