বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় নেতা তাজউদ্দীন আহমদের বড় মেয়ে শারমিন আহমদ বলেছেন, সারাদেশে আওয়ামী লীগ মাফিয়া লীগে পরিণত হয়েছিল। এমন দলের দায়িত্বতো তাজউদ্দীন আহমদের পরিবার নিবে না। এমন পরিণতির জন্য আওয়ামী লীগের দোষী নেতাকর্মীদের বিচারের আওতায় আনা উচিত। গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসবকথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফিরে আসার আর কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে বলেন, “শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরসহ দলের অপকর্মকারীদের বহিষ্কার করে পরিচ্ছন্ন রাজনীতিতি ফিরতে পারলেই আওয়ামী লীগ গণমানুষের দলে পরিণত হতে পারে।”
গত ১৬ বছর ধরে দেশকে দোর্দণ্ড প্রতাপে কুক্ষিগত করে রাখা শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। এরপর পালিয়ে যান ওবায়দুল কাদেরসহ দলের আরও অনেকে। পালানোর সময় গ্রেপ্তার হন অনেক মন্ত্রী-এমপি।
শারমিন আহমদ বলেন, “আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার এমন পরিণতি ছিল অনিবার্য। দলের এই করুণ পরিণতি কষ্ট দিলেও স্মরণ করিয়ে দেয়, ১৯৭৫ আর ২০২৪ সালের পরিস্থিতি ভিন্ন।”
তিনি প্রশ্ন করেন, “ছাত্র-জনতার রক্তে রঞ্জিত আওয়ামী লীগের হাল কেন ধরবে তাজউদ্দীনের পরিবার? এই আওয়াম লীগ কোন আওয়ামী লীগ? যে নৃশংসতা আমরা দেখলাম, যে দলটার হাতে এত এত তরুণের মৃত্যু, জনতার মৃত্যু—তাদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে না? এখন তাহলে কোন আওয়ামী লীগে আমরা যাব? এটা তো স্বাধীনতা-পূর্ববর্তী বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ নয়। এটা হচ্ছে একটা মাফিয়া লীগ। তো এই লীগ কি আমরা করব যাদের মধ্যে অনুশোচনা নেই “
এখন আওয়ামী লীগের কী হবে?
শারমিন আহমদ বলেন, “আওয়ামী লীগের যারা ভালো মানুষ তাদের একত্রিত হতে হবে। তারপর মাফিয়াদের বহিষ্কারের দাবি জানাতে হবে জনতার পাশে থেকে।”
শেখ হাসিনা ও শেখ পরিবার সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমি মনে করি শেখ হাসিনার আর কোনো সম্ভাবনা নেই। শেখ পারবারেরও আর সম্ভাবনা নেই। তবে আওয়ামী লীগের সম্ভাবনা থাকতে পারে, যদি তারা এখন থেকে চিহ্নিত করে দলের সব অপকর্মকারীদের। যদি হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ সব ক্রিমিনালকে বহিষ্কার করা হয়, তাহলে এটা একটা পরিচ্ছন্ন আওয়ামী লীগে পরিণত হবে। যদি আবার তারা গণমানুষের দলে পরিণত হতে পারে তাহলে অবশ্যই তারা ফিরে আসতে পারে।’
জাতির জনক প্রসঙ্গে: জাতির জনক প্রসঙ্গে শারমিন আহমদ বলেন, “জাতির জনক তখনই হবে যখন দেখা যাবে মুক্তিযুদ্ধের সময়, সেই প্রেরণার জায়গায় কী ভূমিকা ছিল। যদি জনগণ মনে করে, শেখ মুজিব আসলেই গণমানুষের নেতা ছিলেন তাহলে হবে। যদি জনগণ মনে করে, তার সেই ভূমিকা ছিল না, তাহলে সেটা হবে না। এটা তো কোনো ব্যক্তি বা দল ঠিক করে দিতে পারে না।”