বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী বিদ্যুৎ কোম্পানি বাগেরহাটের রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ করছে। কিন্তু প্রকল্পের বিদ্যুৎ সরবরাহের সঞ্চালন লাইন নির্মাণের কাজ শেষ না করেই বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গেছে ভারতীয় কোম্পানি ইএমসি। ব্যাংকে জমা থাকা পারফরমেন্স গ্যারান্টির টাকাও তুলে নিয়ে গেছে তারা। এ কারণে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ দুই বছরেরও বেশি সময় পিছিয়ে গেছে।
২০১৫ সালের ডিসেম্বরে পিজিসিবি ও ইএমসি-টিবিইএ’র মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী পরবর্তী ১৮ মাস, ২০১৭ সালের জুনে সঞ্চালন লাইনটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা। কেন্দ্র থেকে খুলনার হরিনটানা সাবস্টেশন পর্যন্ত লাইনটির দৈর্ঘ্য ২৪ কিলোমিটার। দুই দফা সময়সীমা বাড়িয়ে ২০১৮সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার কথা ছিল। কিন্তু কাজ শেষ না করে ওই বছরের অক্টোবর মাসে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যায় নির্মাণ কাজের নেতৃত্বে থাকা ইএমসি। পিজিসিবিকে না জানিয়ে ইএমসি তাদের ঢাকা ও খুলনা অফিস বন্ধ করে দেয় এবং তাদের সব কর্মকর্তা-প্রতিনিধি বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যান। ফলে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকে নির্মাণাধীন প্রকল্পটির কাজ। এতে বাংলাদেশের ঠিকাদাররাও পথে বসেছেন। প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরা তাদের বকেয়া পাওনার দাবিতে প্রকল্প এলাকায় মানববন্ধন করেছে।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের, পিজিসিবি, নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, ইএমসি এখন দেউলিয়া হয়ে গেছে।
আর ঠিকাদারদের পাওনার বিষয়টিতে তাদের কিছুই করার নেই বলে জানান পিজিসিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর চন্দ্র দত্ত। সময় সংবাদকে তিনি বলেন, ভারত সরকার ওদের আইন পরিবর্তন করার পর ওরা দেউলিয়া হয়ে গেছে। এখন আইআরপি না কি একটা সংস্থা আছে ওইটা কাজ করছে; ওটা নাকি ওদের সরকারি প্রতিষ্ঠান। ওদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমরা কোন আউটপুট পাইনি।
১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্মাণ প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে একটি খুলনা-মোংলা ২৩০ কেভি ডাবল সার্কিট ট্রান্সমিশন লাইন।কে কাজ বুঝিয়ে দেয়নি ভিয়েতনামী প্রতিষ্ঠান
৫১ কোটি টাকা ব্যয় হলেও অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রকল্প তেমন কোনো কাজে আসছে না। এতে চলতি অর্থবছরের বাজেটে ঘোষিত দুই হাজার টাকা কর ছাড়ের সুযোগ নিতে পারছেন না আয়করদাতারা। এমনকি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড- এনবিআরকে সফটওয়ারের কাজও বুঝিয়ে দেয়নি ভিয়েতনামী প্রতিষ্ঠানটি।
স্বয়ংক্রিয় কর ব্যবস্থা চালুর জন্য ২০১১ সালে স্ট্রেনদেনিং গভর্ন্যান্স ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় এনবিআর। প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ ইন্টিগ্রেটেড ট্যাক্স সিস্টেম’র সফটওয়্যার তৈরির কাজ পায় ভিয়েতনামের এফপিটি ইনফরমেশন সিস্টেম। গত তিনবছর সেবা চালু থাকলেও, প্রকল্পের মেয়াদ শেষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড- এনবিআরকে সফটওয়ারের কাজ বুঝিয়ে না দেয়ায় এ বছর অনলাইনে কর দিতে পারছেন না কেউ। করদাতারা মনে করেন, এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা গেলে করদাতাদের মধ্যে ইতিবাচক একটি প্রভাব ফেলত।
বাংলাদেশ থেকে বছরে ১শ’ কোটি ডলারের বেশি মূল্যের সফটওয়ার রপ্তানি হয়। এ অবস্থায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে এনবিআরের ট্যাক্স রিটার্নের কাজ দেয়াকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন বেসিসের সভাপতি।
সংগঠনটির সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির বলেন, ভিয়েতনামের প্রতিষ্ঠানকে দেয়া এ সফটওয়ারের কাজ স্থানীয় উদ্যোক্তারাই করার সক্ষমতা রাখে। দেশীয় অনেক প্রতিষ্ঠানের এরকম বড় বড় অনেক কাজ করার সক্ষমতা রয়েছে। দেশীয় প্রতিষ্ঠান এ ধরনের কাজ করলে দেশের তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়।
দেশে নিবন্ধিত করদাতার সংখ্যা প্রায় ৫০ লাখ হলেও, করদাতা মাত্র ২২-২৩ লাখ । আর কর জিডিপি অনুপাত মাত্র ১০ শতাংশের মত। এ অবস্থায় অনলাইন সেবার দীর্ঘসূত্রিতাকে দায়ী করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মজিদ। দাতা সংস্থার চাপ উপেক্ষা করে হলেও রাষ্ট্রীয় এমন কাজ দেশীয় প্রতিষ্ঠানকেই দেয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আগামী বছর জুনের মধ্যে অনলাইন ট্যাক্স রিটার্ন সিস্টেম আবারো চালু করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে বলে জানা গেছে।