ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে বাংলাভাষী মুসলমানদেরকে বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করে শারীরিক নির্যাতন চালাচ্ছে পুলিশ। পশ্চিমবঙ্গের এমন অন্তত ছয়জন ভুক্তভোগীর পরিবার থেকে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ছয়জনই পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার বাসিন্দা এবং তারা মুসলমান। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি বাংলা।

ভোক্তভোগীরা ভাসমান শ্রমিক এবং সাত-আট বছর ধরে হরিয়ানার গুরুগ্রামে আছেন বলে জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ওই শ্রমিকদের একটি সংগঠন। গুরুগ্রাম পুলিশও ওই ছয়জন তাদের কাছে আটক হওয়ার কথা স্বীকার করেছে।

‘পরিযায়ী শ্রমিক ঐক্য মঞ্চ’ নামে ওই সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আসিফ ফারুক বলেন, পুলিশ আমার কাছে মেনে নিয়েছে যে ওই ছয়জনকে তারা আটক করেছে। আমি রোববার বাদশাহপুরের অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনারকে ফোন করেছিলাম। তিনি অবশ্য এটাও বলেছেন যে ওদের গ্রেপ্তার করা হয়নি।

তাছাড়া ছয়জন আটক হওয়ার ব্যাপারে মালদা জেলার যুগ্ম শ্রম কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগও জমা হয়েছে।

হরিয়ানার এ ঘটনা এমন দিনে সামনে এসেছে, যেদিন কলকাতায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী অভিযোগ করেছেন বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষীদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে, গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের এক সমাবেশে মমতা ব্যানার্জী সোমবার (২৩ জুলাই) আবারও অভিযোগ করেন, বিভিন্ন রাজ্যে বাংলায় কথা বললেই ‘বাংলাদেশি’ বলে সন্দেহ করে হেনস্থা করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের অনেক বাসিন্দাকে বিভিন্ন রাজ্যে আটক করা হচ্ছে এবং বেশ কয়েকজনকে ইতোমধ্যে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

সমাবেশে তিনি আরও বলেন, বাংলা ভাষার ওপর সন্ত্রাস চলছে কেন? বাংলার মানুষকে যদি বাংলা বলার জন্য বাইরে গ্রেপ্তার করা হয় এই লড়াই কিন্তু দিল্লিতে হবে। আমি কিন্তু ছাড়ার লোক নেই। মনে আছে, সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের কথা? দরকারে আবার ভাষা আন্দোলন শুরু হবে।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের দিল্লি, উত্তরপ্রদেশে, গুজরাত, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র এবং ওড়িশা রাজ্যে গত কয়েক মাস ধরে ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ সন্দেহে বহু বাংলাভাষীকে আটক করা হচ্ছে, যারা মূলত পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা।

আবার ভারতের বেশ কয়েকজনকে বাংলাদেশে ‘পুশ ইন’ করা হয়েছে এবং পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে –এমন একাধিক ঘটনাও সামনে এসেছে।