মুহাম্মদ নাঈম: মাদক দেশের যুবসমাজের জন্য একটি বড় অভিশাপ, তাই মাদকের হাত থেকে যুবসমাজকে রক্ষা করতে হবে বলে মনে করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ রতন। বাংলাদেশের সময় ডটকমের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে যুবসমাজকে মাদক থেকে রক্ষা করার এ দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

ফরিদ উদ্দিন আহমেদ রতন বলেন, দেশ থেকে মাদক নির্মূলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সকে পূর্ণ সমর্থন করি। যুব সমাজকে বাঁচাতে হলে এ অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে।

তিনি বলেন, যারা যুবসমাজের হাতে মাদক তুলে দিচ্ছে, তাদেরকে চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা হোক। প্রশাসনের কাছে তালিকা আছে। সেই অনুযায়ী তারা আইনি ব্যাবস্থা গ্রহণ করুন।

আহমেদ রতন প্রশ্ন রেখে বলেন, কারা মাদকের কারবার করে? কাদের হাত ধরে মাদক দেশের যুব সমাজের হাতে পৌঁছায়? কারা এর মাধ্যমে রাতারাতি টাকার পাহাড় করছে? তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনুন। দেখবেন দেশ থেকে মাদক নির্মূল হয়ে গেছে।

কাউন্সিলর ফরিদ বলেন, মাদকের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। প্রয়োজনে নতুন আইন করতে হবে। নির্দিষ্ট একটি সময়ের আগে যেন তারা জামিন না পায় সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। আমরা দেখেছি, মাদক মামলায় আজ গ্রেফতার হয়ে কাল জামিনে বেরিয়ে আসে। আবার তারা সেই কারবারির মাধ্যমে যুবসমাজের হাতে তুলে দিচ্ছে জীবননাশা ইয়াবা, হিরোইনসহ নানা ধরনের মাদক।

প্রশাসনের কাছে জোরালো আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যে সকল ব্যক্তিরা মাদকের কারবারির সঙ্গে জড়িত তাদেরকে কঠোরভাবে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, আপনারা চেষ্টা করলে দেশের যুবসমাজ মাদক মুক্ত হবে।

মা-বাবাদের উদ্দেশ্যে রতন বলেন, আমাদের সমাজে বর্তমানে নৈতিকতার অবক্ষয় দেখা দিয়েছে। এর থেকে বাঁচতে আপনার সন্তান কোথায় যায়, কার সঙ্গে চলাফেরা করে তার প্রতি নজর রাখুন। সন্তান যদি আপনার কথা না শোনে প্রয়োজনে প্রশাসনের সাহায্য নিন। আপনারা সচেতন হলে সচেতন হবে দেশ, বেঁচে যাবে আপনার আমার সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যত।

রতন আরো বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে আমি মাদক কারবারিদের তালিকা প্রকাশ করেছি। সেই তালিকা প্রশাসনের নিকট রয়েছে। প্রশাসন চাইলে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দেশ থেকে মাদক নির্মূল করার একটি দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে পারে। তাদের সদিচ্ছা থাকলে দেশ থেকে মাদক নির্মূল করতে বেশি সময় লাগবে বলে আমার মনে হয় না।

তিনি বলেন, আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিকে পূর্ণ সমর্থন করে আমার নির্বাচনী এলাকায় এ কার্যক্রম অভ্যাহত থাকবে। যদি কোনো ব্যক্তি এই কারবারির সঙ্গে জড়িত থাকে তবে সে যতো বড় ক্ষমতাবান হোক না কেনো প্রশাসনের মাধ্যমে আইনের আওতায় তাকে আনা হবেই।

আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে ফরিদ উদ্দিন বলেন, আপনাদের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, আপনারা মাদক কারবারিদের জামিনের ব্যাপারে আগ্রহ দেখাবেন না। কেননা তারা আজ গ্রেফতার হয়ে কাল জামিনে বেরিয়ে আসছে। তাই তারা বুঝেই যাচ্ছে যে, এটা করলে কোনো ক্ষতি নেই। কারণ কয়েকদিন বাদে তার জমিন হয়েই যাবে। সে কারণে তারা জামিনে মুক্তি পেয়ে আবার একই অপরাধে লিপ্ত হয়। তাই আপনারা তাদের জামিনের ব্যাপারে আগ্রহ না দেখালে হয়তো দেশ থেকে মাদক নির্মূল করা সম্ভব হবে।

তিনি আরো বলেন, আমি বলতে চাই, একটি কথাই বলতে চাই, দেশের যুব সমাজের জন্য মাদক ভয়াবহ অভিশাপ, এই অভিশাপের হাত থেকে দেশকে এবং যুব সমাজকে যেকোনো কিছুর মূল্যেই রক্ষা করতে হবে। অন্যথা আমরা আমাদের সোনার সন্তানদের চিরতরে হারিয়ে ফেলবো।

করোনাকালীন সহায়তার ব্যাপারে একপ্রশ্নের উত্তরে কাউন্সিলর বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশের সবচেয়ে বেশি সহায়তা পেয়েছে আমার নির্বাচনী এলাকা ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০ নং ওয়ার্ড। সরকারি ত্রাণের পাশাপাশি আমার আত্মীয় স্বজন,শুভাকাঙ্খিরা সহায়তা করেছেন।

এলাকাবাসীর সেবার ব্যাপারে তিনি বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০ নং ওয়ার্ড জনগণের কল্যাণে চব্বিশ ঘন্টা সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে। নেত্রীর নির্দেশে আমরা প্রত্যেক ঘরে গিয়ে খাবার দিয়ে এসেছি। যারা যখন ডাকছেন যথা সম্ভব সহায়তা করার চেষ্টা করেছি। আমাদের এই কার্যক্রম সবসময় অব্যাহত থাকবে।

করোনায় আক্রান্ত রোগীর ব্যাপারে ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমার ২০ নং ওয়ার্ডে কোনো ব্যাক্তি করোনায় আক্রান্ত হলে তার চিকিৎসার ব্যাপারে যতোটুকু সম্ভব সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। আমরা আক্রান্ত রোগীর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে আর্থিক সহায়তা করেছি।

জনসচেতনার ব্যাপারে রতন বলেন, আমরা বিভিন্ন কাউন্সিল করে মানুষের মধ্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করার চেষ্টা করেছি। এর ফলে মানুষের মধ্যে সচেতনাতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা শ্রমিক, নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে মাস্ক,হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ নানা দ্রব্য বিতরন করেছি।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০ নং ওয়ার্ড উন্নয়নের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমার ওয়ার্ড যেহেতু চার থানার মধ্যে পড়েছে তাই এই ওয়ার্ডকে মডেল করার দৃঢ় প্রত্যয়ে কাজ করছি। রাস্তা-ঘাটে কোনো ধরনের সমস্যা নেই। কিছু সীমাবদ্ধতা থাকলেও আশা করছি, অচিরেই সেগুলি কাটিয়ে উঠতে পারবে বলে মনে করেন তিনি।