ভারতের মিত্র শেখ হাসিনা গত বছরের আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে দিল্লি ও ঢাকার মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা বাড়ছে। এরমধ্যে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশে ভিসা কার্যক্রম উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিয়েছে। ভিসা না পাওয়ার কারণে প্রতিবেশী দেশটিতে নতুন অ্যাপয়েন্টমেন্ট বা ফলোআপে যেতে না পেরে বিপাকে পড়েছে সাধারণ রোগীরা। খবর আলজাজিরা

লিভারের সমস্যায় ভুগছেন ৩৭ বছর বয়সি মোহাম্মদ নুরি আলম। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক জানান, তার জরুরিভাবে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট প্রয়োজন। কিন্তু এটি এমন একটি পদ্ধতি যা বাংলাদেশে সম্ভব নয়। এরপরই তার স্ত্রী খাদিজা খাতুন সিদ্ধান্ত নেন, হায়দ্রাবাদে অবস্থিত ভারতের এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিতে যাওয়ার। কিন্তু তিন মাস পেরিয়ে গেলেও তারা এখনও ভিসা পাননি।

খাদিজা এবং তার স্বামী এরইমধ্যে ২০ নভেম্বর ও ২০ ডিসেম্বর দুটি হাসপাতালের অ্যাপয়েন্টমেন্ট মিস করেছেন। আর আগামী ১০ জানুয়ারি তাদের পরবর্তী অ্যাপয়েন্টমেন্ট রয়েছে। কিন্তু হায়দ্রাবাদে চিকিৎসার জন্য তারা ঠিকমত ভারতে যেতে পারবেন কিনা তা অনিশ্চিত।

খাদিজা বলেন, আমরা অক্টোবর থেকে সবকিছু চেষ্টা করেছি। ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর কাছে যাওয়া, সরকারি মিত্রদের কাছ থেকে সাহায্য চাওয়া। ভারতই আমাদের একমাত্র ভরসা। থাইল্যান্ড এবং অন্যান্য দেশের চিকিৎসার ব্যয় বেশি হওয়ায় তা তাদের সাধ্যের বাইরে।

তিনি বলেন, খাদিজার এখন আশা, নতুন বছরে তার স্বামীর চিকিৎসার জন্য ভিসা পাওয়া যাবে। আমি অসহায় বোধ করছি, সমাধান ছাড়াই হাসপাতালের মধ্যে দৌড়াচ্ছি।

ভারতের ভিসা সেন্টারের ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, তারা শুধুমাত্র জরুরি মেডিকেল ও স্টুডেন্ট ভিসার জন্য বাংলাদেশি নাগরিকদের সীমিত অ্যাপয়েন্টমেন্ট দিচ্ছে। আর বর্তমানে জরুরি ও মানবিক প্রকৃতির ওপর ভিত্তি করে শুধুমাত্র সীমিত সংখ্যক ভিসা প্রক্রিয়া করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে ভারতীয় ভিসা কেন্দ্রের এককর্মকর্তার মতে, জুলাইয়ের বিক্ষোভে হাসিনার পদত্যাগের পর বাংলাদেশের পাঁচটি ভারতীয় ভিসা কেন্দ্রে দৈনিক অনলাইন ভিসা স্লট প্রায় ৫০০টি কমেছে।

শুধু খাদিজা নন, এরকম অবস্থা হাজার হাজার বাংলাদেশি রোগীর। আর এ কারণে ব্যাপক সংকটের মধ্যে পড়েছেন বাংলাদেশের অনেক রোগী। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের ভিসা বিধিনিষেধের কারণে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা।