
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বাসে আগুন যুবদল কর্মীরাই দিয়েছে মুঠোফোনে দলের ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরীকে জানান দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরিদা ইয়াসমিন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন ফোনালাপ ফাঁসের বিষয়ে কিছুই জানতেন না বলে সময় সংবাদকে জানিয়েছেন নিতাই রায় চৌধুরী। পেশাগত কারণেই মামলার বিষয়ে তাকে ফোন করা হয় বলে জানান তিনি।
ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেন বিএনপির কর্মীরা। এরপরই কার্যালয়ের উত্তর পাশে কর অফিসের সামনে একটি বাসে আগুন দেয়া হয়। এ ঘটনার পরপরই বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরিদা ইয়াসমিন ফোন করে ঘটনার বর্ণনা দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরীকে।
সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ফোনালাপে কি কথা হয়েছে, তা নিচে তুলে ধরা হলো-
দাদা আদাব, আমি ফরিদা বলছি, হ্যাঁ.. পার্টি অফিসে আটকা পড়েছিলাম এতক্ষণ। গাড়ি পোড়াইছে ছেলেপেলে, ১১টার সময় প্রেস কনফারেন্সে আসছিলাম, এখন ওখানে আটকরা পড়ে দেরি হয়ে গেল। গাড়ি পোড়ায় দিসে……? হ্যাঁ হ্যাঁ। গাড়ি কোন জায়গা পোড়াইছে। পুলিশের বাস আছে না, স্টাফ বাস থাকে না….! ওগুলোর মধ্যে আগুন দিছে, কয়টা? যুবদলের ছেলেরা। কয়টা… কোন জায়গায়…….? পার্টি অফিসের সামনেই। একটাই, একটা একটা। এখন দাঙ্গা পুলিশ ও র্যাব আসছে। এই প্রায় ঘণ্টা দেড়েক আমরা এখানে আটকা পড়েছিলাম। এখন এইমাত্র বের হলাম।
বর্ণনায় তিনি বলেন, দলীয় সংবাদ সম্মেলনে এসে বিক্ষোভের কারণে আটকা পড়েন ফরিদা। এরপর যুবদলের কর্মীরা বাসে অগুন দিলে কোনমতে কার্যালয় থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ফোনালাপ ছড়িয়ে পড়লে নিতাই রায় চৌধুরীর কাছে জানতে চায় মূল ঘটনার আদ্যোপান্ত। পেশাগত কারণেই ফরিদা ইয়াসমিন তাকে ফোন করেছিলেন বলে জানান নিতাই। তবে কে বা কারা বাসে আগুন দিয়েছে তা তিনি আগে থেকে কিছুই জানতেন না বলে দাবি করেন তিনি।
নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, আমি তো কোর্টে ছিলাম, ল ইয়ারদের নানান রকম ফোন আসে, আর আমি জানিনা কোথায় কি হয়েছে। এ ব্যাপারে আমার কিছু বলার নেই। ফরিদা ইয়াসমিন কোন কেসের বিষয়ে আমার সঙ্গে কথা বলতে চায়। তার কোন কেস আছে এর আগেরও বলেছিল কথা বলবে। আমি বলেছিলাম আজকে টাইম দিতে পারবো না। আমি অলরেডি কোর্ট থেকে বের হয়ে গেছি বলছিলাম তারে।
এদিকে, গণমাধ্যমে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পুরো ঘটনাকে সরকারের ষড়যন্ত্র দাবি করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপিকে হেয় করে দলীয় কর্মীদের গায়েবী মামলায় ফাঁসাতেই এ চক্রান্ত।
এরপর রাতে নয়াপল্টনে সংবাদ সম্মেলনে দলের দপ্তর সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স দাবি করেন, কার্যালয়ের ভেতর অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে তাদের। বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আশেপাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটা কড়া পাহারা বসিয়ে কার্যত বিএনপি কার্যালয়কে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
৫০২ সদস্যবিশিষ্ট বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে ফরিদা ইয়াসমিন নামে নির্বাহী সদস্যের নাম পাওয়া যায়।
রাজধানীজুড়ে গণপরিবহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনার দাবিও জানিয়েছে বিএনপি।

