পৌষের শীতে জবুথবু দেশ, ভোগান্তিতে পড়েছে খেটেখাওয়া সাধারণ মানুষ। শীত উপেক্ষা করে কাজের তাগিদে বের হতে হয়। খেত-খামারে কাজ করতে অনেকটা বেগ পেতে হচ্ছে। রাজধানী ঢাকায়ও রোববার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। গত শনিবারও দিনভর সূর্যের দেখা মেলেনি অধিকাংশ জেলায়। সূর্যের দেখা না পাওয়ায় রাতে তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমেছে। ফলে শীতের তীব্রতা আরও বেড়েছে।
পঞ্চগড়ে আবারও তাপমাত্রা কমে ৯ ডিগ্রির ঘরে নেমেছে। গত তিনদিন পর ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রার পারদ নেমে বাড়িয়েছে শীতের তীব্রতা। রোববার ভোর ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ৯টায় এর থেকে আরও কমে আসার আশঙ্কা রয়েছে। ১০ থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে তাপমাত্রা রেকর্ড হলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ হয়ে থাকে। এটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।
শীতের তীব্রতা আরও বাড়বে সপ্তাহের শেষের দিকে, এমনটাই জানিয়েছে আবহওয়া অধিদপ্তর। আবহওয়া অধিদপ্তর বলছে, নিম্নচাপটি স্থল নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার পর আগামী মঙ্গল বা বুধবারের দিকে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টিপাত ঝরাতে পারে।
মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ প্রসঙ্গে আবহাওয়া অধিদপ্তর চট্টগ্রামের পতেঙ্গা কার্যালয়ের বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য গণমাধ্যমকে বলেছেন, নিম্নচাপের প্রভাবে আকাশে প্রচুর মেঘ তৈরি হয়েছে। এসব মেঘ ওপরের দিকে উঠে যাওয়ায় বৃষ্টি হয়নি। তবে আগামী মঙ্গল বা বুধবারের দিকে নিম্নচাপটি স্থল নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টিপাত হতে পারে।
বৃষ্টিপাতের পর কি শীতের তীব্রতা আরও বাড়বে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বৃষ্টির পর শীতের তীব্রতা স্বাভাবিকভাবেই বাড়বে। তবে এর আগে মেঘের আস্তরণের কারণে সূর্যের তাপমাত্রা স্থলভাগে পৌঁছাতে পারবে না বলে তাপমাত্রা কমতে থাকবে।
আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পশ্চিম মধ্য-বঙ্গোপসাগর ও আশপাশের এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি ধীরগতিতে উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ১ (এক) নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, খুলনা, বরিশাল ও ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।