বয়সের লাগাম যে ধরে রাখা যায় না সেটা আমরা সবাই জানি। আমাদের যখন বয়স বৃদ্ধি পায় তখন শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমতে থাকে। বয়স বৃদ্ধির সময় রোগব্যাধিতে প্রায় সবাই আক্রান্ত হন।

আর যাদের বয়স ৫০ পেরিয়েছে, তাদের শরীর ও মনে নানা পরিবর্তন দেখা দেয়। বিশেষ করে বয়সের সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরলজনিত সমস্যা, হার্ট ব্লক, হজমের সমস্যা ও স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। অনেকের অল্প বয়সেও ডায়াবেটিস হতে পারে তবে টাইপ-২ ডায়াবেটিস বয়স্ক ব্যক্তিদের বেশি হয়। এছাড়া চোখে কম দেখাসহ হাড়ের নানান সমস্যা শুরু হয়। আর এ সময়ে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হয়। এবার জেনে নিই, কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলো বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত করবেন।

কোলনোস্কপি পরীক্ষা

আপনার ৫০তম জন্মদিন জানিয়ে দেয়, প্রথমবারের মতো কোলনোস্কপি পরীক্ষার সময় হয়েছে। এই পরীক্ষার দারুণ উপকারিতা আছে। বিশেষ করে, এ পরীক্ষায় কোনো ধরনের কষ্ট হয় না। কোলন ক্যানসার প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করতে পারলে তা প্রতিরোধ ও নিরাময় করা সহজ হয়।

উচ্চ রক্তচাপ পরিমাপ

বয়স বাড়লে শরীরের রক্তনালীগুলো নমনীয় হতে শুরু করে। যে কারণে সংবহনতন্ত্রের ওপর চাপ পড়ে। গবেষণায় উঠে এসেছে, ৬০ বছর বয়সীদের প্রতি ৩ জনের মধ্যে ২ জনের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। তাই নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করুন। কেননা রক্তচাপের ওপর শারীরিক সুস্থতা নির্ভর করে। আর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকলে সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ভালোভাবে কাজ করে। বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে খুব সহজেই আপনি এই পরীক্ষা করতে পারবেন।

ডায়াবেটিস পরীক্ষা

অগোছালো জীবনযাপন ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাসের কারণে ছোট-বড় সবাই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছেন। আর বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি যেন সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ডায়াবেটিসের কারণে হার্ট ও কিডনির সমস্যাসহ অন্ধত্বের ঝুঁকি বেড়ে যায়্। তাই একজন্ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থেকে নিয়মিত রক্তের শর্করা পরীক্ষা করুন।

চোখের যত্ন নিন

ছোট লেখা পড়তে যদি কষ্ট বা অস্পষ্ট মনে হয় বুঝতে হবে দৃষ্টিশক্তি কমে গেছে। বয়স বাড়লে চোখের ছানি (লেন্স অস্বচ্ছ বা ঘোলা হয়ে যায়) ও গ্লুকোমার (চোখের অপটিক স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়) মতো সমস্যা দেখা দেয়। তাই আপনার যদি ৫০ বছর বয়স হয়, তাহলে নিয়মিত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে চোখের যত্ন নিন।

মূত্রথলির সমস্যা

বয়স বাড়লে মূত্রথলির সমস্যা হয়। ঘন ঘন বাথরুমে যাওয়ার মতো সমস্যাও হতে পারে। পেশিশক্তির দুর্বলতা, স্নায়বিক সমস্যা, টিস্যু ঘন হয়ে যাওয়া ও প্রোস্টেট বড় হয়ে যাওয়া এর অন্যতম কারণ। তাই বয়স বাড়ার সঙ্গে এমন সমস্যা মনে হলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

এর বাইরে দুই-এক মাস পরপরই আপনার ওজন পরিমাপ করুন। প্রতিদিন সকাল ও বিকালে শারীরিক ব্যায়াম করতে পারেন। এছাড়া ধূমপানের মতো বদভ্যাস আজই বাদ দিন। আর সবসময় মানসিক চাপ সামলে ভালো খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন। তাহলে বয়সের ভার কখনও আপনার অসুস্থতার কারণ হবে না।