ফরিদপুরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সামাদ মৃধা, যিনি হাসিনা সরকারের একজন ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত এবং দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকায় প্রবাসী, বর্তমানে কানাডার নাগরিক। তিনি দ্বৈত নাগরিক হওয়ায়, সরকারি প্রতিষ্ঠানে উচ্চপদে কর্মরত থাকার নিয়ম নেই। তবে তিনি বাংলাদেশের সরকারি প্রতিষ্ঠান, এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল)-এর এমডি (ব্যবস্থাপনা পরিচালক) পদে নিজেকে পরিচিত করার অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং বিভিন্ন প্রোগ্রামে সরকারের উচ্চ মহলের সঙ্গে ছবি তুলে, নিজেকে এমডি হিসেবে প্রচার করছেন। কিন্তু সরকারিভাবে এখনও এই নিয়োগের জন্য কোনো প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি।
গত জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট সরকারের ছায়াতলে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মাধ্যমে সামাদ মৃধা ফ্যাসিস্ট সরকারের সহায়ক হিসেবে ভূমিকা পালন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে দেশে ফিরে তিনি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নিজের অবস্থান তৈরি করার চেষ্টা করছেন, যা দেশের ছাত্রজনতা মেনে নেবে না।
বিভিন্নভাবে তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও, তাকে পাওয়া যায়নি। এই অপপ্রচারের ফলে ইডিসিএল-এর মতো একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান হেয় প্রতিপন্ন হতে পারে, যা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। প্রজ্ঞাপন না হওয়া সত্ত্বেও, তার অপপ্রচারের দায়ভার কে নেবে, তা সংশ্লিষ্ট মহলের প্রশ্ন।
বর্তমানে এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড-এর পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছেন মো. আব্দুল হালিম খাঁন, যিনি এক সময় প্রতিষ্ঠানটির কর্মী ছিলেন।
তিনি বর্তমানে অপারেশন পরিচালনা করছেন এবং এমডি পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন।
মো. আব্দুল হালিম খাঁন বর্তমানে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অপকর্মের কারণে বিভাগীয় তদন্তের সম্মুখীন , এবং গত ১৭ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ডেপুটি ম্যানেজার থেকে এমডি (ভারপ্রাপ্ত) পদে উন্নীত হয়েছেন। তিনি বিভিন্ন সিবিএ’র মাধ্যমে সুবিধা নিয়ে তার পদোন্নতি ঘটিয়েছেন। এই মো. আব্দুল হালিম খাঁনের দুর্নীতি ও অপকর্ম ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু সামাদ মৃধাকে নিয়োগ প্রাপ্তির জন্য অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এছাড়া, সামাদ মৃধা বর্তমানে ফেসবুকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বড় বড় ব্যক্তিত্বদের সাথে ছবি প্রকাশ করে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছেন এবং আওয়ামী দুঃশাসনের সময়ের রাঘব বোয়াল আওয়ামী ব্যবসায়ীও তার নিয়োগের কলকাঠি নাড়ছেন । এমনকি তার নিয়োগের পিছনে তারেক রহমানের ফোন কল কাজ করেছে বলে জানিয়েছেন। মো. আব্দুল হালিম খাঁন কিছু লোককে জানাচ্ছেন যে, মৃধা সাহেবের নিয়োগ হয়ে গেছে, এবং তার জন্য নানা ধরনের ওয়েলকাম আয়োজন করা হচ্ছে।
বিগত এমডি, ডা. এহসানুল কবির জগলুল-এর আমলে প্রতিষ্ঠানটি ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। প্যাকেজিং মেটেরিয়াল সরবরাহের সমস্যা, কাজের অর্ডার না থাকা এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন প্রদান করতে অসুবিধা সৃষ্টি হয়েছে। এসব কারণে ইডিসিএল-এর সঠিক ও দক্ষ নেতৃত্ব প্রয়োজন, যাতে প্রতিষ্ঠানটি সঠিক পথে এগিয়ে যেতে পারে।
এছাড়া, সামাদ মৃধা জুলাই আগস্ট মাসের ছাত্র জনতার বিপ্লবের সময়ে কানাডায় ছিলেন। এ আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান করে শেখ হাসিনার সহযোগী হাত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। হঠাৎ করে উড়ে এসে জুড়ে বসার মত করে কানাডা থেকে বাংলাদেশে ফিরে এসে এমডি পদে নিয়োগ পাওয়ার অপচেষ্টা করছেন। যার পিছনে অনেক অর্থ লেনদেনের কাহিনী শোনা যাচ্ছে। এই নিয়োগ পদ্ধতি এবং এর পেছনে কার প্ররোচনা রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
উল্লেখ্য, বিষয়টি নিয়ে সামাদ মৃধার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।