সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি কাজ শেষ করেছে। তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনার কারণ বর্ণনা বিশ্লেষণ এবং ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়াতে করণীয় উল্লেখ থাকবে। আজ সোমবার মন্ত্রণালয়ে এ প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে। অন্যদিকে হত্যা মামলার তদন্তে আটক ৪ পুলিশ সদস্যকে কারাগার থেকে ফের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে র‌্যাব। দেশটিভি।

মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, সোমবার তারা প্রতিবেদন জমা দিবেন। যাতে ঘটনার উৎস কী, কারণগুলো কী এবং এ ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে তার সুপারিশ করে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। শনিবার কমিটির বৈঠকে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এ বৈঠকের মাধ্যমে তৈরি প্রতিবেদনে স্বাক্ষর করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দিয়েছে যে, আমরা কমিটির সদস্যরা যেন সশরীরে হাজির হয়ে মন্ত্রণালয়ে এ প্রতিবেদন হস্তান্তর করি।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাজাহান আলী, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক জাকির হোসেন খান ও সেনাবাহিনীর রামু ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসির একজন প্রতিনিধি। কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করে গত ৪ আগস্ট। প্রথমে কমিটিকে ৭ কর্মদিবস সময় দেয়া হয়। পরে কয়েক দফায় মেয়াদ বাড়ানো হয়। তদন্ত কমিটির প্রধান জানান, আমরা যেসব ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি, আগে তার সম্ভাব্য একটি তালিকা করেছিলাম। সেই তালিকায় সম্ভাব্য ব্যক্তি ও এরিয়া নির্ধারণ করেছিলাম। সেটি ক্রমবর্ধমান হয়ে ৬৮ জনে রূপান্তর হয়। সংশ্লিষ্ট সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে।

এদিকে সিনহা হত্যা মামলার আসামি ৪ পুলিশ সদস্যকে দ্বিতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে র‌্যাব। গত ২৪ আগস্ট আদালত তাদের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাবের এএসপি খাইরুল ইসলাম জানান, রবিবার বেলা ১১টায় তাদের কক্সবাজার কারাগার থেকে নিয়ে যান তারা। কারাগার থেকে তাদের বেলা সাড়ে ১১টায় স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। পরীক্ষা শেষে আসামিরা র‌্যাবের হেফাজতে রয়েছেন। ৪ আসামি হলেন টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক এএসআই লিটন মিয়া, সদস্য কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল-মামুন।

প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সিনহা। ঘটনা তদন্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ২ আগস্ট ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। পরদিন কমিটি পুনর্গঠন করে ৪ সদস্যের করা হয়। কমিটির প্রধান করা হয় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে। এ ঘটনায় সিনহার বোনের মামলায় ৯ পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে ৭ জন আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠায়। অন্য দুজন পলাতক রয়েছেন।