ঈদ এলেই নাড়ির টানে সড়ক-নৌ ও রেলপথে বাড়ি ফেরার যুদ্ধ শুরু হয়। প্রতি বছর ঈদ উপলক্ষে ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে বিশেষ সার্ভিস দেয়া হলেও এবার তা থাকছে না। করোনাভাইরাসের কারণে লঞ্চ মালিকদের নেই কোনো প্রস্তুতিও।

যাত্রীবাহী নৌ-পরিবহন মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু জানান, এবারই প্রথম ঈদে বিশেষ সার্ভিস বা ডাবল ট্রিপ ছাড়াই যাত্রী পরিবহন করবে ঢাকা-বরিশাল রুটের লঞ্চগুলো। সব লঞ্চ ঈদ সার্ভিসে যুক্ত হবে কিনা তাও নিশ্চিত নয়।

তিনি আরো জানান, করোনাভাইরাসের কারণে দুই মাসের বেশি সময় লঞ্চ বন্ধ ছিল। এতে কোটি টাকা লোকসান গুণতে হয়েছে লঞ্চ মালিকদের। এ কারণে এবারের ঈদে বিশেষ কোনো সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

লঞ্চ মালিকরা জানান, রোজার ঈদে যে ক্ষতি হয়েছে তা কোরবানির ঈদে কিছুটা হলেও কাটিয়ে ওঠার প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু ঈদের ১০ দিন আগেও যাত্রীদের উপস্থিতি আশানুরূপ না হওয়ায় নতুন কোনো উদ্যোগ নেয়া সম্ভব হচ্ছে না।

জানা গেছে, কোরবানির ঈদে লোকসান কমাতে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে লঞ্চ ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব দেয়া হয়েছে মালিক সমিতির পক্ষ থেকে। মঙ্গলবার নৌ প্রতিমন্ত্রী মো. খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে লঞ্চ মালিক সমিতির মতবিনিময়ও হয়েছে। কিন্তু সেখানে ভাড়া বৃদ্ধির প্রস্তাব নাকোচ করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বর্তমান ভাড়ায় ঈদে যাত্রী পরিবহনের নির্দেশ দেন প্রতিমন্ত্রী।

যাত্রীবাহী নৌপরিবহন মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, বিশেষ সার্ভিস তো পরের কথা, মালিকরা নরমাল সার্ভিস নিয়েই চিন্তিত। করোনার কারণে লঞ্চে যাত্রী নেই বললেই চলে। লোকসানের ভয়ে কয়েকটি কোম্পানি তাদের ৭-৮টি লঞ্চ চলাচল বন্ধ রেখেছে। ঈদের আগে ওইসব লঞ্চ পুনরায় চালু হতে পারে। আমরা এখনো নিশ্চিত নই।

তিনি বলেন, করোনার কারণে অনেকে আগেই গ্রামে চলে গেছে। আমাদের মূল টার্গেট থাকে গার্মেন্টস শ্রমিকরা। কিন্তু করোনার প্রভাবে অনেক শ্রমিক চাকরি হারিয়ে বাড়িতে বসে আছেন। সরকারি কর্মকর্তাদেরও এবার ঈদে কর্মস্থলে থাকার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। ঈদ উপলক্ষে টিকেট বিক্রি শুরু হলেও তেমন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে এবার কোরবানির ঈদে নৌ-রুটে বিশেষ সার্ভিস বা ডাবল ট্রিপ হবে না। তবে যাত্রীর চাপ বেশি হলে বিশেষ সার্ভিস দেয়ার প্রস্তুতি রাখা হবে।