নেত্রকোনা প্রতিনিধি: নেত্রকোনা জেলার দূর্গাপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী বালু মহাল গুণগত মানের কারনে ইতিমধ্যেই দেশের উন্নয়ন কাজে ব্যাপক চাহিদা । সম্প্রতি এই বালু মহাল থেকে পরিবহন ধর্মঘট নিয়ে নানা আলোচনা সমালোচনার জন্ম দিয়েছে ।

সরেজমিনে দূর্গাপুর ঘুরে প্রতিবেদক সাধারন পরিবহন মালিক ,বালু ব্যবসায়ী ও সাধারন শ্রমিকদের সাথে কথা বললে তারা অভিযোগ করেন , ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলে মিথ্যা দাবিতে তাদেরকে আন্দোলন করার চাপ দেয়া হচ্ছে । তারা বলেন এ আন্দোলন অনৈতিক । তাই আমরা যোগ দিতে চাই না । কিন্তু স্বার্থান্বেষী মহলের প্রতাপে আমরা তটস্থ আছি ।

তারা বলেন ,বালু ব্যবস্থাপনা আইন ও বিধিমালা অনুসারে দূর্গাপুরের বালু ও নুরি বালু ( দূর্গাপুরে লোকমুখে বলে পাথর ) সরকারী কোন ইজারা মূল্য নির্ধারন করা নেই ।মন্ত্রনালয় কর্তৃক বালুর মূল্য ধার্য্য করা নাই । গুনগত মানও নির্ধারণ করা হয়নি আজ পর্যন্ত । ১৪২৫ বাংলা সনে মন্ত্রনালয় বালু রপ্তানীর জন্য ডিসি মহোদয়কে চিঠি লিখে রপ্তানীর জন্য মূল্য প্রস্তাব চেয়েছিল ।

বিগত বছরের চেয়ে প্রায় ৭ গুণ বেশী এবারের ইজারামূল্য । যৌক্তিকভাবে বালুর মূল্য বাড়ানোর কথা কিন্তু তা না করে বালুর মূল্য কমিয়ে ইজারাদার সাধারন পরিবহন মালিক ,বালু ব্যবসায়ী ও সাধারন শ্রমিক মহলে প্রশংসিত । সাধারণত: ২ টা ছোট ড্রাম ট্রাক বালুতে এক ট্রাক হয় । বিগত বছর ডাক ছিল ৫ কোটি ৭ লাখ টাকা ।এক ট্রাক রয়েলিটি করেছিল ৫ হাজার ৭ শত টাকা । এবার ডাক ৩৩ কোটি ১ লাখ টাকা । প্রায় ৭ গুন বেশী রয়েলিটি হওয়া যুক্তিসংগত ছিল। কিন্তু তা না করে রয়েলিটি ৩ হাজার টাকা নিচ্ছে আমাদের কাছ থেকে ।

তারা আরো বলেন , বিগত সময় ঘাটের মালিকরা রয়েলিটি ফ্রি গাড়ী দিত । এসব গাড়ীর বালু কম দামে বিক্রি করে দিত । ফলে বালুর ভারসাম্যহীন মূল্যে আমরা শত শত ব্যবসায়ী রয়েলিটি দিয়ে বালু ক্রয় করে ফ্রির সাথে তাল মিলাতে না পেরে বালুর ব্যবসা ছেড়ে দিতাম ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বালু ব্যবসায়ী জানান, বিশেষ সুবিধা আদায়ের জন্য এক শ্রমিক নেতা সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছে । তার কথোপকথনের রেকর্ডিং করা কথা আমি শুনেছি ।

সাধারন শ্রমিকদের সাথে কথা বললে তারা জানায় ,সিন্ডিকেট করে রয়েলিটি ফ্রির সিস্টেম করে গুটিকয়েক ব্যক্তি লাভবান হয়ে সাধারন গাড়ী মালিক ও শ্রমিকদের আয় ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছে ।তারা জানায় এই ধরনের আন্দোলন গত বছরেও হয়েছে যা ২১ দিন স্থায়ী ছিল ।ফলশ্রুতিতে শ্রমিকদের আয়ের পথেও বাঁধা সৃষ্টি হয়েছিল । আর এবার করোনা সংক্রমনের সময় মরার উপর খড়ার ঘা এই অযৌক্তিক আন্দোলন । আমরা এই আন্দোলনে নাই । এই আন্দোলন পরিবহন গডফাদার ও তাদের মদদপুষ্টরা করছে । তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস শক্তি আমাদের নেই । সুতরাং বিবেকের তাড়নায় এই মিথ্যার সাথে আমরা একমত নই ।

কারন যে অভিযোগ করা হচ্ছে , সরকার নির্ধারিত রয়েলিটি থেকে কয়েক গুন বেশী রয়েলিটি নেয়া হচ্ছে যা সম্পূর্ন মিথ্যা । আমরা দীর্ঘদিন যাবত এই বালুর ব্যবসার সাথে জড়িত । সেই অভিজ্ঞতায় বলবো ইজারাদার অন্যায় অন্যায্য কিছু করেননি । ইজারাদার যদি এমন কিছু করে থাকেন প্রশাসন যাচাই করে অবশ্যই ব্যবস্থা নিবেন ।

এই আন্দোলন প্রশাসনমূলক, আমাদের কথা সঠিক কিনা তা তদন্ত করে বের করার জন্য সরকারের কাছে দাবী জানান তারা ।

সেক্ষেত্রে গোয়েন্দা ভিত্তিক তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ারও জোর দাবী জানান ।