১৯ জুলাই। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সাজসাজ রব। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখো মানুষের ঢল নেমেছে জামায়াতের জাতীয় সমাবেশে। অন্যদের মত বরিশাল মেহেন্দিগঞ্জ থানার উলাইন্যা ইউনিয়ন থেকে মো. মহিউদ্দিন নামের পঞ্চাশোর্ধ একজন ব্যক্তি ও এসেছিলেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। জামায়াতের দায়িত্বশীল পর্যায়ের কেউ নন। স্রেফ একজন সমর্থক। সংগঠনকে ভালোবেসে চলে এসেছেন।

পুরো সমাবেশের সময় ভালোই ছিলেন। বাধ সাধলো বাড়িতে ফিরে যাওয়ার সময়। সদরঘাট থেকে লঞ্চে উঠার সময় পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা পান। ব্যথা তীব্র হওয়ার কারণে ইবনে সিনা কল্যাণপুর হাসপাতালে যান। সেখানে ডাক্তারদের পরামর্শে হাসপাতালে অ্যাডমিশন নেন। পরবর্তীতে পরীক্ষা নিরিক্ষার পর ডাক্তার জানান অপারেশন করতে হবে।

ঘটনাচক্রে ঐ ব্যক্তির এক আত্মীয় আমাদের ডেমরার বাসিন্দা হওয়ার কারণে তিনি আমাকে ফোন দেন। ইবনে সিনায় কোন ছাড়ের ব্যবস্থা করে দেয়া যায় কিনা সে ব্যাপারে সহযোগিতা চান। আমিও সাথে সাথে কেন্দ্রের একজন দায়িত্বশীলকে বিস্তারিত জানাই। এবং তিনি সাথে সাথেই রেসপন্স করেন।

কিছুক্ষণ পর আমাকে আবার ফোন করে বলেন “ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে ওনাদের চিন্তা করতে না বলেন। স্থানীয় দায়িত্বশীলদের ও জানানো হয়েছে” ইতোমধ্যেই যেই ভাই আমাকে ফোন দিয়েছিলেন ছাড়ের জন্য তিনি আমাকে ফোনে জানালেন বরিশাল জেলা আমির তাকে ফোন দিয়েছিলেন এবং বিস্তারিত খোঁজ খবর নিয়েছেন।

পরেরদিনই তার অপারেশন করা হয় এবং অপারেশন আল্লাহর রহমতে সাকসেসফুল হয়। রিলিজের আগ পর্যন্ত তাদের মোট বিল এসেছিল ৯৫,৮৩৮/- টাকা যার মধ্যে ভর্তির সময় ১০,০০০/- টাকা দেওয়া হয়েছিলো। বকেয়া ছিলো ৮৫,৮৩৮/-। রিলিজের দিন তাদের রিলিজ দিয়ে দেওয়া হয় কোনো টাকা ছাড়াই। বকেয়া বিলের পুরোটাই আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের পক্ষ থেকে দিয়ে দেওয়া হয়।

আমাদের একজন ইমাম, একজন দায়িত্বশীল ডা. শফিকুর রহমান । তিনি নিজেই সেদিন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।তবুও এই লক্ষ লক্ষ লোকের ভিড়ে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আগত একজন সহযোগির বিপদের কথা শুনে তিনি সাথে সাথে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। দায়িত্বশীল হিসেবে তার দায়িত্ব পালন করেছেন।

এমন একজন নেতা পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার। আল্লাহ আমার এই দায়িত্বশীল কে ভালো রাখুক। আরো বেশি বেশি জাতির খেদমত করার তৌফিক দিক।

লেখক: ইঞ্জি. খন্দকার কামারাম মুনীর ফুয়াদ। সেক্রেটারি, ডেমরা পশ্চিম থানা,ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ