ক্রিকেট জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচে রান আউট এবং শেষ ম্যাচেও তাই। শুরু আর শেষ এসে মিলে গেল যেন একই বিন্দুতে।

শনিবার (১৫ আগস্ট) স্বাধীনতা দিবসের দিন সন্ধ্যায় ৭টা ২৯ মিনিটে দীর্ঘ ১৫ বছরের ক্রিকেট পরিক্রমায় ইতি টেনে দিয়েছেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। আর তারপর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরপাক খাচ্ছে দুটো ছবি। আনন্দবাজার পত্রিকা ।

ধোনির প্রথম ম্যাচে রান আউটের মুহূর্ত এবং শেষ ম্যাচের সেই হৃদয়বিদারক আউট। যা ধোনি তো বটেই গোটা ভারতের মন ভেঙে দিয়েছিল। আর দুটো আউটের মুহূর্ত কোথায় যেন মিলিয়ে দিচ্ছে শুরু আর শেষের ধোনিকে।

খড়্গপুর স্টেশনের সামান্য টিকিট পরীক্ষক থেকে বিশ্বজয়ী অধিনায়ক। আবার দেশের জার্সিতে জীবনের প্রথম ও শেষ ম্যাচে আউটও একই ভাবে। এমন অদ্ভুত সমাপতন বেশির ভাগ ক্রিকেটারের জীবনেই যে হয় না। কিন্তু ধোনি তো সবার থেকেই আলাদা।

২৩ ডিসেম্বর, ২০০৪। চট্টগ্রামে রান আউট হয়ে ফেরেন মাহি। সেটাই ছিল তার জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ম্যাচ।

২০১৯ সালের ১০ জুলাই। ম্যাঞ্চেস্টারে মার্টিন গাপটিলের অসাধারণ থ্রোয়ে আর ক্রিজে ফেরা হল না মাহির। বাইশ গজে তার গতি প্রশ্নাতীত। রান জাজ করার ক্ষেত্রে যার মুন্সিয়ানা বারবার প্রমাণিত, সেই ধোনিই কিনা ফিরতে পারলেন না ক্রিজে।

গাপটিলের সেই থ্রো ভেঙে দিল উইকেট। তার পরের দৃশ্য হৃদয় ভাঙার, রক্তাক্ত হওয়ার। যন্ত্রণাকাতর ধোনি কাঁদছেন। হাত থেকে বেরিয়ে গেল বিশ্বকাপ ফাইনালে পৌঁছনোর গেট পাস। মাথা নিচু করে ছাড়ছেন মাঠ। সেই ম্যাচটাই যে তার জীবনের শেষ ম্যাচ হয়ে দাঁড়াবে, তখন কি আর কেউ ভেবেছিলেন!

এক বছরেরও বেশি সময় নিজেকে ধরাছোঁয়ার বাইরে রেখে নানা কৌতূহলের জন্ম দিয়েছেন ভারতের অন্যতম সফল অধিনায়ক। এই এক বছরে তাঁর অবসর নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। তাকে নিয়ে চলেছে গবেষণা। কিন্তু তিনি এক বারের জন্যও মুখ খোলেননি। ভারতীয় ক্রিকেট মহলে ধোনি প্রসঙ্গে অনেকেই বলে থাকেন, ‘‘ও তো নিজের চিত্রনাট্য নিজেই লেখে।’’

সেই মতোই নিজের অবসরের সময় নিজেই বেছে নেন দেশের অন্যতম সফল অধিনায়ক। আর তার পরেই ফ্ল্যাশব্যাকে উঠে আসছে পৃথিবীর দুই প্রান্তের দুটো মাঠে রান আউট হওয়ার ছবি। ওই দুটো আউটের মধ্যে ব্যবধান ১৫ বছরের।

ম্যাঞ্চেস্টারে প্রায় হেরে বসা একটা ম্যাচ শুধু তার জন্যই শেষের দিকে জীবন্ত হয়ে উঠেছিল। গাপ্তিল যখন ধোনির উইকেট ভাঙলেন, তখনও ক্রিজে পৌঁছতে পাঁচ সেন্টিমিটারের মতো বাকি ছিল ধোনির।

অবিকল একই দৃশ্য ছিল ১৫ বছর আগের সেই ম্যাচে। বাংলাদেশের ক্রিকেটার তাপস বৈশ্যর ছোড়া বল উইকেটকিপার খালেদ মাসুদের হাতে পড়তেই উইকেট ভেঙে দেন তিনি। ক্রিজে আর ফেরা হয়নি মাহির।