ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় দীর্ঘ প্রায় ২৩ মাস ধরে অমানবিক আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। হামাস উৎখাত ও জিম্মি মুক্তির নাম দিয়ে প্রতিদিনই দখলদার বাহিনী ভয়াবহ হামলা ও নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে নিরীহ গাজাবাসীর ওপর। দখলদারদের নারকীয় এ হত্যাযজ্ঞ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত মৃত্যুহীন একটি দিন পার করতে পারেনি ভূখণ্ডটির বাসিন্দারা।

প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজা দখলের পরিকল্পনা নিয়ে প্রকাশ্য ঘোষণা দেওয়ার পর তাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন পেয়ে যেন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ইসরায়েল। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ হলেও সেগুলোকে গ্রাহ্যই করছে না নেতানিয়াহু ও তার প্রশাসন। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক আদালতও অমানবিক এ আগ্রাসনে লাগাম টানতে ব্যর্থ। এরই মধ্যে দখলকৃত পশ্চিম তীর পুরোপুরি ইসরায়েলের মানচিত্রে মিলিয়ে ফেলার পরিকল্পনাও এখন প্রকাশ্যে।

এ অবস্থায় এবার দখলদার রাষ্ট্রটিকে কঠিন হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। ইসরায়েল তার এই দখলনীতিতে অটল থাকলে আমিরাতের সঙ্গে হওয়া তাদের আব্রাহাম চুক্তি ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাবে বলে জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শক্তিশালী দেশটি। মূলত, আরব আমিরাত ও ইসরায়েলের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতেই করা হয়েছিল এই চুক্তি।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরায়েল তার মানচিত্রে অধিকৃত পশ্চিম তীর পুরোপুরি যুক্ত করে নিলে, তা চূড়ান্ত সীমা লঙ্ঘনের শামিল হবে বলে সতর্ক করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)।

দেশটির জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক লানা নুসেইবেহ বলেছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের দ্বি–রাষ্ট্রীয় সমাধানের সম্ভাবনা নস্যাৎ করবে।

আরব আমিরাতের এই অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ)। তবে, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েলের সরকার।

নুসেইবেহ এমন এক সময়ে এ মন্তব্য করেছেন, যখন ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ পশ্চিম তীরের প্রায় চার-পঞ্চমাংশ দেশটির সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন।

১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের সময় পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম দখল করে প্রায় ১৬০টি বসতি গড়ে তুলেছে ইসরায়েল। আন্তর্জাতিক আইনে এসব বসতি অবৈধ।