বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি ওবায়দুল হাসান সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন। হাইকোর্ট বিভাগ থেকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে সদ্য নিয়োগ পাওয়া দুই বিচারপতির শপথবাক্য পাঠ করান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। বৃহস্পতিবার (৩সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় তাদেরকে শপথ বাক্য পাঠ করানো হয়।
হাইকোর্ট বিভাগের দুই বিচারপতিকে আপিল বিভাগে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ।
ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি হাইকোর্ট বিভাগে কর্মরত দুই বিচারককে তাদের শপথের তারিখ থেকে আপিল বিভাগের বিচারক নিয়োগ করেছেন।
সর্বশেষ আপিল বিভাগে তিনজন বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হয় ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর। এই দু’জন নিয়োগের পর আপিল বিভাগের বিচারপতির সংখ্যা এখন আটজন।
এর আগে গত ২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে কর্মরত দু’জন বিচারককে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৫ (১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে কর্মরত দু’জন বিচারককে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারক হিসেবে নিয়োগ করেছেন।
শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে তাদের এ নিয়োগ কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
বিচারপতি তারিক উল হাকিম
১৯৫৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর জন্ম নেওয়া এই বিচারপতির বাবাও ছিলেন বিচারপতি। তার বাবার নাম বিচারপতি মাকসুম উল হাকিম। বিচারপতি তারিক উল হাকিম ইংল্যান্ড থেকে ব্যারিস্টারি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৭ সালে জেলা আদালত এবং ১৯৮৯ সালে হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ২০০২ সালের ২৯ জুলাই তিনি হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি এবং ২০০৪ সালের ২৯ জুলাই স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। তার স্ত্রী নাসিমা কে. হাকিম ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনায় নিয়োজিত আছেন। মেয়ে রাইসা ফাবিয়া তানিশা হাকিম ও ছেলে আসওয়াদ ওয়ারিস হাকিম ইংল্যান্ডে আইন নিয়ে পড়ালেখা করছেন।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসএস, এমএসএস ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জনের পর বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ১৯৮৬ সালে জেলা আদালত, ১৯৮৮ সালে হাইকোর্ট বিভাগ এবং ২০০৫ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
২০০৯ সালের ৩০ জুন তিনি হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি এবং ২০১১ সালের ৬ জুন স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। এই বিচারপতি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এরও চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার ছয়াশী গ্রামের মরহুম আখলাকুল হোসাইন আহমেদের ছেলে তিনি । তার পিতা পেশায় চিকিৎসক ছিলেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। একাত্তরে তিনি ভারতের মেঘালয়ের মহেষখলা ইয়ুথ ক্যাম্পের ইনচার্জ হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে দেশের সংবিধান প্রণয়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।