নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে চলতি বছরের এপ্রিলে সড়ক দুর্ঘটনায় ৬৩২ জন নিহত হয়েছে, যা গত ১৬ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) দেওয়া হিসাব বিশ্লেষণ করে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
দেশজুড়ে মাসে কতটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে, সেই তথ্য ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে নিয়মিতভাবে প্রকাশ করছে বিআরটিএ। একই সঙ্গে এসব দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত হওয়ার মোট সংখ্যাও প্রকাশ করেছে সরকারি এই সংস্থা।
বিআরটিএ-এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৬ মাসের গত দুই মাসে সড়কে নিহত বেশি হয়েছে। এর মধ্যে গত মার্চে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৫৫০ জন। মার্চের তুলনায় এপ্রিলে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেশি, ৬৩২ জন। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে নিহতের সংখ্যা বেড়েছে ৮২।
বিআরটিএ-এর হিসাব অনুযায়ী, ১৬ মাসের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় এক মাসে নিহতের সংখ্যা ৫০০ ছাড়ায় গত বছরের জুনে। তখন ৫০৪ জনের নিহত হয়। এর পরের মাস জুলাইতে নিহত হয় ৫৩৩ জনের, যা গত ১৬ মাসের মধ্যে নিহতের সংখ্যার দিক থেকে তৃতীয় সর্বোচ্চ।
গত এপ্রিলে দেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হয়। ঈদের সময় মানুষের চলাচল বেড়ে যায়। লাখো মানুষ রাজধানী ঢাকা ছেড়ে যান। অন্য বড় শহরগুলো থেকেও গ্রামের দিকে যাতায়াত অনেক বৃদ্ধি পায়। সড়কে মানুষের চাপ বেড়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনার সংখ্যা ও মৃত্যু বেড়ে যায়।
গত বছরের এপ্রিলেও দেশে ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হয়। আর গত বছরের জুনে উদ্যাপিত হয় ঈদুল আজহা। বিআরটিএর হিসাবে দেখা যায়, গত বছরের এপ্রিল ও জুনে ঈদের সময় মৃত্যুর ঘটনা তুলনামূলক বেশি ছিল। গত বছরের এপ্রিলে সড়কে মৃত্যু হয় ৪৫৯ জনের, জুনে মারা যান ৫০৪ জন। তবে গত বছরের দুই ঈদের সময়ের সঙ্গে তুলনা করলে এ বছরের ঈদুল ফিতরের সময় মৃত্যুর ঘটনা অনেক বেশি।
বেশি মৃত্যু মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়
বিআরটিএর তথ্য অনুযায়ী, গত এপ্রিলে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি মানুষ, ১৯১ জন মারা গেছেন, যা মোট নিহতের৩০ শতাংশ। ২৫২টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার হয় গত মাসে। মোটরসাইকেলের পর বাস দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৬৭ জন, যা দুর্ঘটনায় মোট নিহতের ১০ দশমিক ৬০ শতাংশ। ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৬২ জন, যা মোট মৃত্যুর প্রায় ১০ শতাংশ। এর বাইরে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন দুর্ঘটনায় মানুষের মৃত্যু হয়। গত এপ্রিলে সড়কে সবচেয়ে বেশি নিহত হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে, ১২৩ জন। এর পর ঢাকা বিভাগে, ১১৫ জন। সড়ক দুর্ঘটনায় সবচেয়ে কম নিহত সিলেট বিভাগে, ৩৮ জন।