কিছুদিন হলো বিএনপি বেশ আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে। পরপর তাদের বেশ কয়েকটি বিভাগীয় কর্মসূচিতে লোকজন হওয়ায় তাদের আনন্দিত হওয়ারই কথা। কিন্তু বিভাগীয় সভা-সমাবেশে প্রচুর লোক হওয়ায় এটা প্রমাণ করে না যে দেশবাসী সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগকে ছেড়ে বিএনপির পক্ষে চলে গেছে। তবে বিএনপির এ কর্মকান্ডসব সময় থাকলে এবং নিজেদের সুশৃঙ্খল রাখতে পারলে দেশের এ অরাজক অবস্থা হতো না।
সরকারের খামখেয়ালি, সাধারণ মানুষের প্রতি কারও কোনো ভ্রূক্ষেপ না করা- এর জন্য ষোল আনা না হলেও বারো আনা বিরোধী দল দায়ী। অন্যরা কে কী বলবেন জানি না, নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি বালুর বাঁধ দিয়ে যেমন ভয়াবহ বন্যা ঠেকানো যায় না, তেমনি গাড়ি-ঘোড়া বন্ধ করে, রাস্তাঘাটে বাধা দিয়ে লাঠিসোঁটা দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে মারধর করে সত্যিকারের কোনো দাবি ঠেকিয়ে রাখা যায় না। আমরা একসময় ছাত্রলীগ করেছি, মানুষের কাছে সম্মান পেয়েছি, গুরুত্ব পেয়েছি, দোয়াও পেয়েছি।
কিন্তু এখন ছাত্রলীগ জনগণের দোয়া পায় না, ভালোবাসা পায় না। আমরা আমাদের ছাত্রাবস্থায় পয়সা উপার্জন কাকে বলে জানতামও না, বুঝতামও না। এখন পদ বেচাকেনা হয়। ছাত্রলীগের কোনো নেতানেত্রীর কোনো সম্মান নেই। সবই কেমন যেন বেপরোয়া। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের চরিত্র স্খলন দেখে বড় মর্মাহত হই। আমাদের সঙ্গে মেয়েরা যারা সক্রিয় ছিল তাদের নিজের বোনের বাইরে আমরা তেমন কিছু ভাবতাম না।
নব্বইয়ের দশকেও দেখেছি ইসহাক আলী খান পান্না, সুভাষ সিংহ রায় আরও অনেকেই প্রেম করে বিয়ে করেছেন। ওদের ভালোবাসা ছিল পূতপবিত্র। ইসহাক আলী খান পান্নার স্ত্রী আইরিন পারভীন বাঁধন মারা গেছেন। সুভাষ আমার স্নেহের লাভলীর সঙ্গে সুন্দরভাবে ঘর-সংসার করছেন। কিন্তু এখন যা শুনি তা শোনার মতো নয়। আমাদের যে উচ্চ চরিত্রের শক্তি ছিল তা এখন ধসে পড়েছে। এখন সব চরিত্রহীনের কারবার। অতি সম্প্রতি বিএনপি চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা ও রংপুরে বিভাগীয় সভা করেছে। এসবের মধ্যে মনে হয় রংপুরের সভা সব থেকে সফল হয়েছে। তাই রংপুর নিয়েই দুই কথা বলছি।
১৬ বছর নির্বাসনে কাটিয়ে ’৯০-এর ১৬ ডিসেম্বর দেশে ফিরেছিলাম। ঢাকা বিমানবন্দরে লোক হয়েছিল স্মরণকালের স্মরণযোগ্য। ১৭ জানুয়ারি ’৯১ ঝিনাইদহ থেকে বিচারপতি সাহাবুদ্দীন সরকার গ্রেফতার করে যশোর জেলে পাঠিয়েছিল। অভিযোগ ছিল, সামরিক আদালতের মিথ্যা একটি মামলা। যে মামলার সব কজন একসময় একত্রে ঢাকা জেলে ছিলেন। তাদের একজনের নাম ঘষেমেজে উঠিয়ে দিয়ে আমার নাম বসিয়েছিল। কথা ছিল সামরিক আদালতের কোনো মামলা-মোকদ্দমা কোর্টে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না। আমাকে প্রথম বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেফতার দেখানো হয়েছিল।
১০-১৫ দিন পর সামরিক আদালতের পুরনো একটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত দেখানো হয়। আমার গ্রেফতারের সঙ্গে সঙ্গে ড. কামাল হোসেন ও ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম হাই কোর্টে রিট করেছিলেন। যেহেতু বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেফতার করা হয়েছিল সেহেতু আমার আবেদন হাই কোর্ট গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু সওয়াল-জওয়াব করতে গেলে হাই কোর্ট সাফ জানিয়ে দেন সামরিক আদালতের কোনো বিচার বিবেচনা করা যাবে না। তখন ড. কামাল হোসেন প্রশ্ন তোলেন হাই কোর্ট যে সামরিক আদালতের কোনো কিছু শুনতে পারবেন না এর বিরুদ্ধেই আমরা সুপ্রিম কোর্টে যেতে চাই। হাই কোর্ট সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার আবেদন মঞ্জুর করেন। যথারীতি সুপ্রিম কোর্টে আমার মামলা নিয়ে আলোচনা হয়। যে কদিন আলোচনা হয়েছে বেশির ভাগ সময় এ যুগের রবীন্দ্রনাথ ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা, তোমাকে পাওয়ার জন্যে/আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায়?’ স্বাধীনতা কবিতার জনক কবি শামসুর রাহমান সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে বসে থেকেছেন।
তখন প্রধান বিচারপতি ছিলেন হাবিবুর রহমান। অনেক দিন সওয়াল-জওয়াব হয়। একপর্যায়ে ড. কামাল হোসেন আমেরিকা থেকে শুধু আমার মামলার সওয়াল-জওয়াব করতে এক দিনের জন্য এসেছিলেন। বাকি দিনগুলো ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম অন্যদের নিয়ে অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে মামলাটির সওয়াল-জওয়াব করেন। শেষে সুপ্রিম কোর্টের ফুল বেঞ্চ আমাকে নিঃশর্ত মুক্তি দেন এবং সামরিক আদালতের সব কটি বিচার বাতিল করে কারারুদ্ধ প্রায় ১৮ হাজার লোককে মুক্তি দেন। ১৭ জানুয়ারি ’৯১ আমি গ্রেফতার হয়েছিলাম। নির্বাচন হয়েছিল ২৭ ফেব্রুয়ারি।
সবাই মনে করেছিল বিএনপি ঠিকভাবে ১০টি আসনেও মনোনয়ন দিতে পারবে না। আওয়ামী লীগ প্রায় সব কটি আসনে জিতবে এবং সরকার গঠন করবে। হ্যাঁ, বিএনপি সে সময় সত্যিই সব কটি আসনে মনোনয়ন দিতে পারেনি। ২৭০-৮০টি আসনে মনোনয়ন দিয়েছিল। ভোটও আওয়ামী লীগের সমান পায়নি। আওয়ামী লীগ ভোট পেয়েছিল ১ কোটি ৫ লাখের মতো, বিএনপি পেয়েছিল ৮০ লাখ। ৮০ লাখ ভোট পেয়ে বিএনপি ১৪২টি আসনে জয়ী হয়েছিল। ১ কোটি ৫ লাখ ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগ আসন পেয়েছিল ৮১টি। বিএনপি সরকার গঠন করেছিল।
আমি গ্রেফতার হয়েছিলাম ১৭ জানুয়ারি ’৯১, মুক্তি পেয়েছিলাম ১৮ আগস্ট ’৯১। মুক্তির পর টুঙ্গিপাড়া পিতার কবরে গিয়েছিলাম। মাননীয় সভানেত্রী বোন হাসিনাও আমার আগেই টুঙ্গিপাড়া গিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর জীবনে প্রথম টুঙ্গিপাড়া পিতার কবর জিয়ারতে গিয়েছিলাম ১৮ ডিসেম্বর ’৯০। ১৮ আগস্ট ’৯১ টুঙ্গিপাড়ায় কয়েক শ সহকর্মী নিয়ে গিয়েছিলাম। আমরা ভালোভাবেই টুঙ্গিপাড়ায় কাটিয়েছিলাম। তখন এত ঘরদুয়ার ছিল না, রাস্তাঘাট ছিল না। কিন্তু মানুষের অন্তর ছিল। বোন হাসিনারও এত শক্তি বা ক্ষমতা ছিল না। কিন্তু বড় ভালো মানুষ ছিলেন। মায়া-মমতা-দরদ ছিল। তিন-চার শ মানুষ স্কুল-কলেজ-মাদরাসা, লোকজনের বাড়িতে আনন্দ করে কাটিয়েছিল।
আমরা পরদিনই ঢাকায় চলে এসেছিলাম। কীভাবে কীভাবে যেন সে সময় রংপুরে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ছেড়ে দেওয়া আসনগুলোয় উপনির্বাচন হচ্ছিল। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জেল থেকে পাঁচটি আসনে দাঁড়িয়ে পাঁচটিতেই জিতেছিলেন। তাঁর ছেড়ে দেওয়া চারটি আসনে উপনির্বাচন। সভানেত্রী শেখ হাসিনা সে উপনির্বাচনে জনসভা করতে গিয়েছিলেন। জাতীয় পার্টির প্রার্থী ছিলেন মিজানুর রহমান চৌধুরী, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন ও আরও দুজন। বিরোধী দলনেত্রী বোন শেখ হাসিনা রংপুর সার্কিট হাউসে উঠেছিলেন। রংপুর সার্কিট হাউসের সঙ্গে আমার ’৭২ সাল থেকে পরিচয়। আগে ছিল এক তলা, তখন দোতলা।
একেবারে বাঁ পাশে ওপরে-নিচে দুটি ভিআইপি রুম। ওপরের রুমে প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, সরাসরি নিচে ভিআইপি রুমে বিরোধী দলনেত্রী শেখ হাসিনা। পাশের রুমে আমি ছিলাম। সাদা কথায় বলতে গেলে নিচের পাঁচ-ছয়টি রুমে বিরোধী দল আওয়ামী লীগ, আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনা ছিলেন। আর দোতলায় সরকারপ্রধান বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তাঁর লোকজন। একবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে রাতের খাবারের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। মোসাদ্দেক আলী ফালু প্রিয় বোন শেখ হাসিনাকে দাওয়াত দিতে এসেছিলেন। নির্বাচনী প্রচারে আমি তখন বাইরে ছিলাম। তিনি ফালুকে পরিষ্কার বলে দিয়েছিলেন, ‘বজ্র প্রচারে বাইরে আছে। ও না আসা পর্যন্ত খাব না।
আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে খাবার দাওয়াত করবেন কেন, আমারই তো তাঁকে দাওয়াত করা উচিত। কারণ আমি তো রংপুরের গৃহবধূ।’ তিনি সেদিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দাওয়াতে যাননি। আমার আলোচনার বিষয় বেগম খালেদা জিয়ার দাওয়াতে না যাওয়া নিয়ে নয়, আমার আলোচনার বিষয়টি অন্যখানে। সে যাত্রায় বোন রংপুরে ছিলেন খুব সম্ভবত আট দিন। অত দীর্ঘ সময় কোনো উপনির্বাচনে রাজধানীর বাইরে নেত্রী শেখ হাসিনা থেকেছেন কি না আমার জানা নেই। আমি প্রায় ১৫-১৬ দিন ছিলাম। আমাদের মিটিংয়ে ভালোই লোক হয়েছে। কোনো কোনো জায়গায় জাতীয় পার্টির সভা-সমাবেশের চেয়েও বেশি লোক হয়েছে। বিএনপি সরকারি দল হয়েও কোনো কোনো জায়গায় মিটিং করতে পেরেছে আবার কোনো কোনো জায়গায় লোকের অভাবে করতেই পারেনি। আমরা সমস্ত রংপুর চষে বেড়িয়ে ছিলাম।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারে যেভাবে সর্বশক্তি প্রয়োগ করতে হয় সেভাবেই করা হয়েছিল। অনেক ক্ষেত্রে তার চেয়ে বেশিও করা হয়েছিল। সে নির্বাচনের চারটি আসনের চারটিই পেয়েছিল জাতীয় পার্টি। আমরা সব কটিতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছিলাম। আর সরকারি দল বিএনপি হয়েছিল তৃতীয়। ভোটের ব্যবধান ছিল মারাত্মক। জাতীয় পার্টি যেখানে লক্ষাধিক ভোট পেয়েছে সেখানে আওয়ামী লীগের নৌকা ৭০-৮০ হাজার। যেখানে জাতীয় পার্টি ৮০-৯০ হাজার পেয়েছে সেখানে বিরোধী দল আওয়ামী লীগ ৬০-৭০ হাজার। কিন্তু যেটা আলোচনার বিষয় সেটা হলো সেবার চারটি আসনের কোনোটিতেই বিএনপি আড়াই-তিন হাজারের বেশি ভোট পায়নি।
’৯১ সালে যেখানে বিএনপির এই অবস্থা, সেখানে সেদিন ২০২২ সালের ২৯ অক্টোবর তাদের যে বিভাগীয় সমাবেশ হয়েছে তা একেবারে ফেলনা নয়। যত কিছুই হোক, মানুষ সরকারের প্রতি অখুশি হয়ে বিএনপির পাশে দাঁড়িয়েছে অথবা বিএনপির প্রতি খুশি হয়ে ওরকম নিদারুণ কষ্ট করে রংপুরের সভা সফল করেছে- এটা খুব একটা জোর দিয়ে এখনই বলা যায় না। একসময় যেটা ছিল জাতীয় পার্টির ঘাঁটি, সেটা যদি বিএনপির হয় তাহলে আওয়ামী লীগ নেত্রীর লাভ কী? যে যা-ই বলুন, রাজনীতির মোকাবিলা রাজনীতি দিয়েই করতে হয়। লাঠিসোঁটা, অস্ত্রশস্ত্র, শক্তি দিয়ে রাজ্য জয় করা যেতে পারে, সম্পদ অর্জন করা যেতে পারে। কিন্তু মানুষের মন জয় করা যায় না। মানুষকে জয় করতে হয় ভালোবাসা দিয়ে, কাজ দিয়ে। একই দিন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছে। নিশ্চয়ই তাতে বিপুল নেতা-কর্মী উপস্থিত হয়েছেন।
কিন্তু তাদের তো গাড়ি দিয়ে আনতে হয়েছে। মিরপুরের রাস্তা গাড়িতে ভরে গিয়েছিল। যতজন নেতা-কর্মী বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রের পাশে পুরনো বাণিজ্য মেলার মাঠে হয়েছিল তার অর্ধেক নেতা-কর্মী তো ঢাকা মিরপুর সড়কেই ছিল। কারণ বাবর রোড থেকে আমি ডাক্তার দেখাতে ধানমন্ডি গিয়েছিলাম। সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা-৫টার মধ্যে না হলেও ২০-২৫ হাজার আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী-সমর্থক রাস্তায় দেখেছি। যেজন্য মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে দারুসসালাম পর্যন্ত এক বিরাট যানজটের সৃষ্টি হয়েছিল। রংপুরে বিএনপির মিটিংয়ে কিন্তু সব যানবাহন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সবকিছু খোলা থাকলে বিএনপির সভায় আর কটা লোক হতো? না হয় দ্বিগুণ- তিন গুণ। বিনা বাধায় সাধারণ মানুষ যারা সভায় যেতে পারতেন তারা অনেকেই মিটিংয়ে বক্তৃতা শুনে হতাশ হতেন। কারণ বিএনপি নেতা-নেত্রীরা সরকারে যাওয়া নিয়ে ব্যস্ত, ক্ষমতার জন্য ব্যস্ত। মানুষের হাসিকান্না তাদের স্পর্শ করে না। চালের দাম, তেলের দাম, নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছুর দাম নাগালের বাইরে। ওসব তাদের স্পর্শ করে না। তাই বিএনপির সভাগুলোয় ইদানীং যত মানুষ হচ্ছে সবই যে তাদের এ কথা জোর দিয়ে বলা যায় না।
কিন্তু সরকার যেভাবে এগোচ্ছে তাতে প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে পদে পদে সুবিধা করে দিচ্ছে। আর এটা খুবই সত্য, দীর্ঘদিন সরকারে থাকলে সরকার ও সরকারি দলের মধ্যে যে দুর্বলতা সৃষ্টি হয় তা বোনের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগেও হয়েছে। কাকের মতো ঠোঁট পুঁছে অস্বীকার করলে খুব একটা কাজের কাজ হবে না। আর অনেক দিন কোনো দল সরকারে থাকলে সে সরকারের বিরুদ্ধে আপনা-আপনিই কিছু মানুষ তৈরি হয়ে যায়। বিষয়গুলো রাজনৈতিকভাবে না ভাবলে শুধু উচ্চৈঃস্বরে চিৎকার করলেই বড় কিছু হাসিল করা যাবে না। সত্যিকার অর্থে দেশের অবস্থা খারাপ।
খেটে খাওয়া মানুষের দারুণ কষ্ট। এসব হৃদয় দিয়ে ভাবতে হবে। খালি খালি গাওজোরামি করলে কোনো কাজের কাজ হবে না। সত্যিকার অর্থেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা চেতনা যারা বলেন তারা অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে খুব একটা হৃদয় দিয়ে চান না। যারা সাধারণ মানুুষের সঙ্গে লেগে আছেন, সাধারণ মানুষের জন্য দিনরাত খাটেন তারা খুব একটা ভালো নেই। সব জায়গায় বিত্তশালীদের আনাগোনা, যেভাবেই হোক পয়সাকড়ি জোগাড় করে সবকিছু কিনে নিতে চাচ্ছে। তাই যারা নেতৃত্বে এবং কর্তৃত্বে আছেন তাদের সাবধান হওয়া উচিত। দেশ এখন দুই শিবিরে বিভক্ত। যেটা হওয়ার কোনো কারণ ছিল না। দুর্ভাগ্যের হলেও কথাটা সত্য। তাই সময় থাকতে সাবধান!
লেখক : বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম