একটি খুব প্রচলিত ধাঁধা হিসেবে পরিচিত ডিম আগে না মুরগি আগে? এই প্রশ্নটির ধাঁধার সমাধান করতে গিয়ে রীতিমত বহু বিজ্ঞানী থেকে সমাজতত্ত্ববিদ হিমশিম খেয়েছেন । কারণ যুক্তি দিয়ে এই রহস্যের সমাধান করা অসম্ভব।
অনেকেই এই প্রসঙ্গে দার্শনিক ভঙ্গিতে জানিয়েছেন, এই প্রশ্ন আসলে অনেকটা বৃত্তের মতো, যার কোনো শুরুই নেই আসলে।
তবে সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই ধাঁধার সমাধান মিলেছে। এক ওয়েবসাইটে প্রকাশ পেয়েছে আসল সত্য। মার্কিন সাংবাদিক রবার্ট ক্রুলউইচ এই জটিল ধারণার তথ্য জানার জন্য রীতিমত গবেষণাই করে ফেলেছেন। তারপরেই মিলেছে এর উত্তর। এনপিআর নামক মার্কিন ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে সেই ফলাফল।
সেখানেই বলা হয়েছে, কয়েক সহস্রাব্দ আগে পৃথিবীতে বাস ছিল মুরগি সদৃশ এক বড় পাখির। প্রাগৈতিহাসিক সেই পাখি জিনগতভাবে অনেকটাই মুরগিদের কাছাকাছি হলেও তা মোটেও মুরগি ছিল না।
বিজ্ঞানীদের বক্তব্য- সেটি আসলে ছিল এক ধরনের ‘প্রোটো-চিকেন’। মুরগির সেই প্রাচীনতম পূর্বসূরী এক ডিম পেড়েছিল। সেই ডিমেই পুরুষ সঙ্গী বেশ কিছু নতুন বৈশিষ্ট্য যোগ করে। এরপর আরো কয়েকবার বেশ কিছু মিউটেশনগত পরিবর্তন ঘটে। যা তখনকার সেই পুরুষ কিংবা নারী মুরগির জিন থেকে বেশ কিছুটা আলাদা। নতুন প্রজাতির সেই উৎপন্ন পাখিই হলো আজকের মুরগির আদি এবং প্রকৃত পূর্বপুরুষ। এরপর কয়েক হাজার বছর ধরে পৃথিবীর সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার জন্য আরো বহুবার মিউটেশনগত রদবদল ঘটে।
প্রথম যে মুরগি সৃষ্টি হয়েছিল, সেই মুরগির সঙ্গে হয়তো আজকের এই মুরগির প্রচুর অমিল। মিউটেশনটি ডিমের মধ্যে ঘটে যাওয়ার ফলে সেই আদি মুরগিটির উৎপত্তি হয়েছিল, তার মানে ডিমটির আগে কোনো মুরগি ছিল না। অর্থাৎ পুরো ঘটনাটি সংক্ষেপে বলতে হলে, প্রাগৌতিহাসিক মুরগি-সদৃশ এক পাখি ভিন্নধর্মী ডিম পাড়ার ফলে উদ্ভব ঘটে আদিতম মুরগির। তাই মুরগির আগেই ডিম এসেছে। তাই ডিম-ই আগে আর মুরগি পরে। সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।