দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবার রিজেন্ট হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ও রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, দুদকের বিশেষ তদন্ত অনুবিভাগের মাধ্যমে এ অনুসন্ধান করা হবে। এ লক্ষ্যে দুদকের উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়েছে। অনুসন্ধান দলের অন্য সদস্যরা হলেন- মো.নেয়ামুল হাসান গাজী ও শেখ মো. গোলাম মাওলা।
এর আগে কমিশনের সংশ্লিষ্ট অনুবিভাগগুলো বিভিন্ন ব্যক্তি, গণমাধ্যম, ভার্চুয়াল মাধ্যমসহ বিভিন্ন উৎস হতে মো. সাহেদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সংগ্রহ করা হয়। এসব তথ্য-উপাত্ত ও অভিযোগ কমিশনের দৈনিক এবং সাম্প্রতিক অভিযোগ সেলে উপস্থাপন করলে দুদক এ সিদ্ধান্ত নেয়।
সাহেদের বিরুদ্ধে মাইক্রোক্রেডিট ও এমএলএম ব্যবসার নামে জনসাধারণের সঙ্গে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা সংগ্রহ, বহুমাত্রিক জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে পরস্পর যোগসাজশে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, আয়কর ফাঁকি, ভুয়া নাম ও পরিচয়ে ব্যাংক ঋণ গ্রহণ করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতপূর্বক অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এসব বিষয়ে অনুসন্ধান করবে দুদক।
এদিকে সাহেদের রিজেন্ট গ্রুপের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগীরা। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অফিস দখলে রাখা, আর মাসের পর মাস ভাড়া বকেয়া রাখার অভিযোগ রয়েছে। মিরপুরে রিজেন্ট হাসপাতালের বিরুদ্ধে এখনো অর্ধকোটি টাকা পাওনা রয়েছে বলে দাবি ভবন মালিকের। আর উত্তরায় রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ের ভাড়া বকেয়া রয়েছে ৮ মাসের। উত্তরা শাখা সিলগালা করে দেয়ার পর রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর শাখাও এখন বন্ধ।
এর আগে উত্তরা রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযানের পর র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম বলেন, আমরা শুরুতে ভুয়া টেস্টের বিষয়টিকে সামনে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করেছি। কিন্তু এখন দিন যতই যাচ্ছে দেখছি অসংখ্য জঘন্য অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল সাহেদ। যাদের সঙ্গে তার ব্যবসা ছিল, তাদের সঙ্গেই প্রতারণা করেছে। অভিযানের পর অসংখ্য মানুষ আমাকে কল করে তার প্রতারণার ফিরিস্তি তুলে ধরছে। পুরান ঢাকার এক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, তার থেকে পদ্মাসেতু প্রকল্পের জন্য নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে সাপ্লাই দিয়ে আর টাকা দেয়নি। সিলেটের জৈন্তাপুর থেকে একজন কল করে জানিয়েছে, তার থেকে বালু এনে সাপ্লাই দিয়ে সে টাকা আর পরিশোধ করেনি। এছাড়া বিভিন্ন নিয়োগ ও বদলির কথা বলে কোটি কোটি টাকা সে হাতিয়ে নিয়েছে।
এছাড়া সাহেদের বিরুদ্ধে সুন্দরী তরুণীদের ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। তরুণীদের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে কাজ বাগিয়ে নিত সাহেদ। অনেক সময় সরবরাহকারীদের দিয়ে কাজ করিয়ে বিলও দিতেন না।