১. সুস্থ দাঁতের জন্য নিয়মিত সকালে নাস্তার পরে ও রাতে খাবারের পরে দুই বার সঠিকভাবে দুই মিনিট ধরে দাঁত ব্রাশ করতে হবে। ব্রাশ করার সময় যথাসম্ভব আলতো করে সার্কুলার মোশনে দাঁত ব্রাশ করতে হবে। ব্রাশটি ভালো মানের ও নরম হতে হবে। প্রতি ৩ থেকে ৫ মাস পর পর ব্রাশ পরিবর্তন করতে হবে।
২. টুথপিক ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। টুথপিক ব্যবহারে মাড়িতে ইনফেকশন হতে পারে। এ ছাড়া কয়লা, ছাই, মাটি, গাছের ডাল ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে না।
৩. পান, তামাক, জর্দা খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে, যা দাঁতের স্বাস্থের জন্য ভালো নয়। অনেক সময় মুখে ঘা, ক্ষত বা ক্যান্সারের কারণ হতে পারে এগুলো। তাই এগুলো বাদ দিতে হবে।
৪. ধূমপান করা থেকে বিরত থাকুন। সিগারেটে থাকা নিকোটিনের প্রভাবে দাঁতের অ্যানামেল ক্ষয় হতে থাকে। এতে দাঁতে কালো দাগ তৈরি হয়।
৫. দাঁত নিয়মিত ব্রাশ করার পাশাপাশি ফ্লস বা সুতা দিয়ে প্রতিটি দাঁতের ফাঁকের খাদ্যকণাগুলো বের করে ফেলতে হবে। তাহলে দাঁতের ফাঁকে খাদ্যকণা জমে থেকে মুখে দুর্গন্ধ হবে না।
৬. আরও একটি বিশেষ করণীয় হচ্ছে, জীবাণুনাশক মাউথ ওয়াশ দিয়ে অথবা এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে মুখ কুলিকুচি করা। তাতে দাঁতের ক্ষয় রোগ ও মাড়ির রোগ বেশিরভাগই প্রতিরোধ করা যায়।
৭. বাঁকা দাঁতে বেশি ময়লা জমে। তাই দীর্ঘসময় নিয়ে দাঁত ব্রাশ করতে হবে। খাবারের পরে অবশ্যই কুলি করা উচিত। কারণ দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা চর্বি ও শর্করাযুক্ত খাবার দাঁতকে দ্রুত ক্ষয় করে ও দাঁতের মসৃণতা নষ্ট করে।
৮. দাঁত ব্রাশ করার সময় জিহ্বা ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। টাং স্ক্রেপার অথবা ব্রাশ দিয়েই আস্তে আস্তে জিহ্বা পরিষ্কার করতে হবে।
৯. শরীরের মত মানুষের দাঁত-মুখেরও ব্যায়াম আছে। জাইলোকল জাতীয় চুইংগাম খেলে দাঁত ও মুখের মাসেলের ব্যায়াম হয়।
১০. দাঁতে বা মুখের ভেতরে যেকোনো সমস্যা হলে অবহেলা করা উচিত নয়। মুখের ভেতর কোনো পরিবর্তন দেখা দিলে (যেমন- ঘা, লাম্প ইত্যাদি) অতি দ্রুত ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত।
১১. প্রতি ছয় মাসে অন্তত একবার ডেন্টিস্টের কাছে গিয়ে মুখ ও দাঁতের পরীক্ষা করাবেন। বছরে দু’বার পরীক্ষার ফলে আপনার দাঁত থাকবে সুরক্ষিত ও মজবুত।
দাঁতের যত্নে খাবার: দাঁতের সুস্বাস্থ্যের জন্য যত্নের পাশাপাশি প্রয়োজন হয় খাদ্যের। ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি, আয়োডিন, ফ্লোরিন ইত্যাদি দাঁতের জন্য অপরিহার্য। আর তা খাবারের মাধ্যমেই পূরণ করতে হয়।
১. ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার: ক্যালসিয়াম দাঁত ও মাড়িকে মজবুত করে। যেমন- দুধ, দই, পনির, কাঁটাযুক্ত ছোট মাছ, সয়াবিন, শিমের বিচি।
২. ভিটামিন সি জাতীয় খাবার: এগুলো মাড়ি থেকে রক্তপাত হওয়া কমাতে সাহায্য করে। যেমন- আমলকি, পেয়ারা, লেবুজাতীয় ফল, মাল্টা, টমেটো, কাঁচা মরিচ।
৩. আয়োডিনযুক্ত খাবার: আয়োডিনযুক্ত খাবার হচ্ছে- বাঁধাকপি, ফুলকপি, সামুদ্রিক মাছ ও আয়োডিনযুক্ত লবণ।
৪. ভিটামিন বি১ জাতীয় খাবার: এগুলো দাঁতের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। যেমন- আটা, ডিমের কুসুম, মাছ, চিনাবাদাম।