১৯২১ সালের ১ জুলাই এ দিনেই শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বার। কালের বিবর্তনে আজ দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বুধবার (১ জুলাই) এ বিশ্ববিদ্যালয় পা রাখেছে শতবর্ষে।
সে সময়কার ঢাকার সবচেয়ে অভিজাত ও সৌন্দর্যমণ্ডিত রমনা এলাকায় প্রায় ৬০০ একর জমির উপর পূর্ববঙ্গ এবং আসাম প্রদেশ সরকারের পরিত্যক্ত ভবনসমূহ ও ঢাকা কলেজের (বর্তমান কার্জন হল) ভবনসমূহের সমন্বয়ে মনোরম পরিবেশে গড়ে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তিন অনুষদ ও ১২ বিভাগ নিয়ে আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে এর যাত্রা শুরু হয়।
বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩টি অনুষদ, ১৩টি ইনস্টিটিউট, ৮৪টি বিভাগ, ৬০টি ব্যুরো ও গবেষণা কেন্দ্র এবং ছাত্র-ছাত্রীদের ১৯টি আবাসিক হল, ৪টি হোস্টেল ও ১৩৮টি উপাদানকল্প কলেজ ও ইনস্টিটিউট রয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৪৬ হাজারের অধিক। পাঠদান ও গবেষণায় নিয়োজিত রয়েছেন দুই সহস্রাধিক শিক্ষক।
বুধবার প্রতিষ্ঠার ৯৯তম বার্ষিকী উদযাপনের মধ্য দিয়ে শতবর্ষে পা রাখবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে সীমিত পরিসরে দিবসটি উদযাপিত হবে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সকাল সাড়ে ১০টায় নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন প্রাঙ্গণে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা, বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা উত্তোলন ও বেলুন উড়ানো এবং বেলা ১১টায় অধ্যাপক আবদুল মতিন চৌধুরী ভার্চ্যুয়াল ক্লাসরুমে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনলাইন ভার্চ্যুয়াল মিটিং প্ল্যাটফর্ম জুমের মাধ্যমে আলোচনা সভা। এতে জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম ‘শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রসঙ্গ: আন্দোলন ও সংগ্রাম’ শিরোনামে মূল বক্তব্য প্রদান করবেন।
এ অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন), প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা), কোষাধ্যক্ষ, প্রাক্তন দু’জন উপাচার্য, দু’জন ডিন, একজন প্রভোস্ট, একজন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট, ঢাবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং ঢাবি শিক্ষক সমিতিসহ অন্যান্য সমিতির পক্ষ থেকে নেতারা সংযুক্ত হবেন।
দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান শুভেচ্ছা বাণীতে উল্লেখ করেছেন, ২০২০-এ নিরানব্বই বছর শেষ করে শতবর্ষে পা দিল আমাদের এ চিরতরুণ প্রতিষ্ঠান। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে লোকসমাবেশ এড়িয়ে প্রাণপ্রিয় ছাত্র-ছাত্রীবিহীন স্বল্পপরিসরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আয়োজনে নিঃসন্দেহে আনন্দ, প্রশান্তি ও স্বস্তির ঘাটতি অনস্বীকার্য। তবে মুজিববর্ষের এ অলোকসামান্য কালপর্বে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এবারের বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের তাৎপর্য অত্যন্ত গভীর ও ব্যাপক। প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধু এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ নামক আমাদের প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমির দুই অন্তহীন প্রেরণা-উৎস। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষে পালিত হওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ২০২০ লাভ করেছে এক অনন্য মাত্রা। প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ উদযাপনের বিরল সৌভাগ্য-প্রাপ্তির পূর্বক্ষণে মুজিববর্ষ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য চির অম্লান আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।