ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী ওরফে ডা. সাবরিনা শারমিন হুসাইন জেকেজির ভুয়া স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতেন ।
সরকারি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত জেকেজির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী ওরফে ডা. সাবরিনা শারমিন হুসাইন ভুয়া স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতেন বলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেছেন। তার আগে ১৫ হাজার ৪৬০ জনকে করোনার ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেপ্তার দেখিয়েছে তেজগাঁও থানা পুলিশ।
রোববার (১২ জুলাই) রাজধানীর তেজগাঁও থানায় জিজ্ঞাসাবাদের সময় ডা. সাবরিনা পুলিশকে এসব তথ্য জানান।
তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীমুর রশীদ তালুকদার জানান, আদালতের সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় ভুয়া রিপোর্টের মামলায় ডা. সাবরিনাকে রাতে থানার লকাপেই কাটাতে হয়েছে। আজ সোমবার (১৩ জুলাই) সকালে তাকে রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হবে।
রোববার দুপুরে ডা. সাবরিনা আরিফকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনারের কার্যালয়ে ডেকে আনা হয়। জেকেজির কেলেঙ্কারির বিষয়ে সেখানে প্রায় তিন ঘণ্টা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে তেজগাঁও থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের পর তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘জেকেজি গ্রুপের হিমু ও তার স্ত্রী তানজিনাকে গ্রেপ্তার করার পর তারা জানায়, বাড়িতে গিয়ে তারা স্যাম্পল কালেকশন করেন। তানজিনা নার্স হওয়ায় সে দিনের বেলায় স্যাম্পল কালেকশন করতো। কিন্তু সেই স্যাম্পল আর পরীক্ষাগারে পাঠানো হতো না। সেগুলো তানজিনা ফেলে দিত। আর হিমু একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার হওয়ায় সে সার্টিফিকেট বানিয়ে ওইসব স্যাম্পলের ভুয়া রিপোর্ট সরবরাহ করতো। এর জন্য তারা পাঁচ হাজার টাকা ফি নিত এবং বিদেশি হলে একশ ডলার। হিমু ও তানজিনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে এগুলোর সঙ্গে জেকেজি গ্রুপ জড়িত বলে তারা তথ্য দেয়। তারপর জেকেজির সিইও আরিফুল হকসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকেই জেকেজির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়।’
এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি বলেন, ‘অনেক বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আরও অনেক বিষয়ে জানার বাকি আছে। আদালতের কাছে চার দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে। রিমান্ডে পেলে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’
উল্লেখ্য, জেকেজি হেলথ কেয়ার থেকে ২৭ হাজার রোগীকে করোনা টেস্টের রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১১ হাজার ৫৪০ জনের করোনার নমুনা আইইডিসিআরের মাধ্যমে সঠিক পরীক্ষা করানো হয়েছিল। বাকি ১৫ হাজার ৪৬০ জনের ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করা হয়, যা জব্দ করা ল্যাপটপে পাওয়া গেছে।