চাঁদপুর জেলা

বাংলাদেশে চাঁদপুর জেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৩.২১৩৯° উত্তর ৯০.৬৩৬১° পূর্বস্থানাঙ্ক: ২৩.২১৩৯° উত্তর ৯০.৬৩৬১° পূর্ব

দেশঃ বাংলাদেশ

বিভাগঃ চট্টগ্রাম বিভাগ

আয়তনঃ মোট ১৬৪৫.৩২ কিমি২(৬৩৫.২৬ বর্গমাইল)

জনসংখ্যা (২০১১)

মোটঃ ২৪,১৬,০১৮
ঘনত্বঃ ১৫০০/কিমি২ (৩৮০০/বর্গমাইল)

স্বাক্ষরতার হার
মোটঃ ৬৯.২৯%
সময় অঞ্চলঃ বিএসটি (ইউটিসি+৬)

ওয়েবসাইটঃ অফিসিয়াল ওয়েবসাইট

চাঁদপুর জেলা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল[2]। মেঘনা নদীর তীরে এ জেলা অবস্থিত। চাঁদপুরের মানুষ আতিথেয়তার জন্য বিখ্যাত। ইলিশ মাছের অন্যতম প্রধান অঞ্চল হিসেবে চাঁদপুরকে “ইলিশের দেশ” বা “City Of Hilsha” ডাকা হয়। ১৯৮৪ সালের আগ পর্যন্ত এটি বৃহত্তর কুমিল্লারএকটি অংশ ছিল।

ভৌগোলিক সীমানাঃ
চাঁদপুর জেলা ১৭০৪.০৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে গঠিত। এটি উত্তরে মুন্সিগঞ্জএবং কুমিল্লা, দক্ষিণে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, বরিশাল জেলা, পূর্বে কুমিল্লা জেলা এবং পশ্চিমে মেঘনা নদী ও শরিয়তপুর এবং মুন্সিগঞ্জ জেলা দ্বারা বেষ্টিত। চাঁদপুর জেলা বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য দুটি নদীর মিলনস্থলে অবস্থিত। পদ্মা ও মেঘনা নদী দুটি চাঁদপুর শহরের কাছে এসে মিলেছে। মেঘনা নদী ডাকাতিয়া নদী, ধোনাগোদা নদী ও মতলব নদীর সাথে যুক্ত।

ইতিহাস


নামকরণের ইতিহাস
বার ভূঁইয়াদের আমলে চাঁদপুর অঞ্চল বিক্রমপুরের জমিদার চাঁদরায়ের দখলে ছিল। এ অঞ্চলে তিনি একটি শাসনকেন্দ্র স্থাপন করেছিলেন। ঐতিহাসিক জে. এম. সেনগুপ্তের মতে, চাঁদরায়ের নাম অনুসারে এ অঞ্চলের নাম হয়েছে চাঁদপুর।
অন্যমতে, চাঁদপুর শহরের (কোড়ালিয়া) পুরিন্দপুর মহল্লার চাঁদ ফকিরের নাম অনুসারে এ অঞ্চলের নাম চাঁদপুর। কারো মতে, শাহ আহমেদ চাঁদ নামে একজন প্রশাসক দিল্লী থেকে পঞ্চদশ শতকে এখানে এসে একটি নদীবন্দর স্থাপন করেছিলেন। তার নামানুসারে নাম হয়েছে চাঁদপুর।

জনসংখ্যার উপাত্ত
২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে জেলাটির জনসংখ্যা ছিল প্রায় ২,৪১৬,০১৮।

নদী
চাঁদপুর জেলা নদীর জেলা হিসেবে পরিচিত।এখানে জালের মতো বিস্তৃত আছে অনেক নদী।এখানে ৮ টি নদী আছে যা অন্য যে কোনো জেলা থেকে অনেক বেশি। নদীগুলো হচ্ছে:
• মেঘনা নদী
• পদ্মা নদী
• ডাকাতিয়া নদী
• গোমতী নদী
• ধনাগোদা নদী
• মতলব নদী
• উধামধি নদী
• চারাতভোগ নদী

প্রশাসনিক এলাকাসমূহ
চাঁদপুরে ৮ টি পৌরসভা, ৬০ টি ওয়ার্ড, ২৭৫ টি মহল্লা, ৮ টি উপজেলা, ৮ টি পুলিশ থানা,২ টি নৌ থানা ১ টি কোস্ট গার্ড স্টেশন,১ টি রেল থানা,৮৭ টি ইউনিয়ন পরিষদ এবং ১২২৬ টি গ্রাম রয়েছে।
এই জেলা আটটি উপজেলা নিয়ে গঠিত; এগুলো হচ্ছে:-
• চাঁদপুর সদর উপজেলা
• হাজীগঞ্জ উপজেলা
• কচুয়া উপজেলা
• ফরিদগঞ্জ উপজেলা
• মতলব উত্তর উপজেলা
• মতলব দক্ষিণ উপজেলা
• হাইমচর উপজেলা
• শাহরাস্তি উপজেলা

জেলার ৮টি পৌরসভা হলো:
1. চাঁদপুর পৌরসভা
2. হাজীগঞ্জ পৌরসভা
3. শাহরাস্তি পৌরসভা
4. ফরিদগঞ্জ পৌরসভা
5. কচুয়া পৌরসভা
6. ছেঙ্গারচর পৌরসভা
7. মতলব পৌরসভা
8. নারায়ণপুর পৌরসভা
রেল থানাটি হচ্ছে-
• চাঁদপুর কোর্ট

নৌ থানাগুল স্টেশনগুলো হচ্ছে-
• চাঁদপুর
• হাইমচর
কোস্ট গার্ড স্টেশন-
• চাঁদপুর শহর

সংসদীয় আসন
চাঁদপুর জেলায় ৫ টি সংসদীয় আসন আছে। এগুলো হচ্ছে-
• ২৬০, চাঁদপুর-১, (কচুয়া উপজেলা)
• ২৬১, চাঁদপুর-২, (মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ)
• ২৬২, চাঁদপুর-৩, (চাঁদপুর সদর ও হাইমচর)
• ২৬৩, চাঁদপুর-৪, (ফরিদগঞ্জ)
• ২৬৪, চাঁদপুর-৫, (হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি)

স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাব্যবস্থা
1. ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ১টি
2. উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৮টি
3. আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র (ICDDR,B) ১টি (বিশ্বের একমাত্র)(মতলব দক্ষিণ)
4. মাতৃমঙ্গল কেন্দ্র ৩টি
5. চক্ষু হাসপাতাল ৪টি
6. বক্ষব্যাধী হাসপাতাল ১টি
7. ডায়বেটিক হাসপাতাল ১টি
8. রেডক্রিসেন্ট হাসপাতাল ১টি
9. রেলওয়ে হাসপাতাল ১টি
10. বেসরকারি হাসপাতাল ৭৩টি
11. বেসরকারি ডেন্টাল ক্লিনিক ৭টি
12. ডায়গনস্টিক সেন্টার ১০৭টি।

জনসংখ্যা
মোট: ২৬০০২৬৩ জন, তন্মধ্যে পুরুষ: ৪৮.৬৭%, এবং মহিলা: ৫১.৩৩% জন।
ধর্মের বিচারে এর মধ্যে মুসলমান: ৯২.৫৫%, হিন্দু: ৭.১৮%, বৌদ্ধ: ০.০৬%, খ্রিস্টান: ০.০৭% এবং অন্যান্য: ০.১৪% রয়েছেন।

শিক্ষা
শিক্ষার হার ৬৯.৮%। কলেজ: ৭৫ টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয়: ২৫০ টি, মাদ্রাসা: ১,২৫৭ টি, পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট: ১ টি, টিচার্স ট্রেনিং কলেজ: ১ টি

অর্থনীতি
চাঁদপুর জেলার অর্থনীতি মূলত কৃষিভিত্তিক। নদীতীরবর্তী এলাকা বলে প্রায় ৩০% মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মৎস্য শিল্পের সাথে জড়িত। তাছাড়াও উল্লেখযোগ্যভাবে অনেক ব্যবসায়ী বিদ্যমান। জেলা সদরে অনেক মাছের আড়ত রয়েছে, যা জেলার অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি তাছাড়া শহরের বাবুরহাটে বড়বড় বহু শিল্পকারখানা রয়েছে।এ জায়গাটিকে সরকার বিসিক শিল্প নগরী ঘোষনা করে।এ এলাকাটি শুধু চাঁদপুরের নয় পুরো বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি আশীর্বাদস্বরূপ শিল্প নগরী। মেঘনার ভাঙ্গনে প্রতি বছর চাঁদপুরের আয়তন কমে গেলেও মেঘনা, চাঁদপুরের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। প্রতি বর্ষায় পানিতে ডুবে যায়, ফলে বর্ষাকালে চাঁদপুর মাছের মাতৃভূমি হয়ে যায়। জেলার প্রধান শস্য ধান, পাট, গম,আখ। রপ্তানী পণ্যের মধ্যে রয়েছে নারিকেল, চিংড়ি,আলু,ইলিশ মাছ,সবুজ সবজি,বিসিক নগরীর তৈরি পোশাক শিল্প।
• রূপসা জমিদার বাড়ী

চিত্তাকর্ষক স্থান
• বড়স্টেশন মোলহেড নদীর মোহনা (চাঁদপুর সদর)
• জেলা প্রশাসকের বাংলোয় অবস্থিত দুর্লভ জাতের নাগলিঙ্গম গাছ।
• চাঁদপুর জেলার ঐতিহ্যের প্রতীক ইলিশ চত্বর।
• ভাষ্কর্য(৯টি)
• প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ এলাকা
• মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন মুক্তিযুদ্ধের স্মারক।
• চাঁদপুর চিড়িয়াখানা, সাচার।
• মত্স্য জাদুঘর,চাঁদপুর।
• সরকারী বোটানিকাল গার্ডেন,চাঁদপুর।
• সরকারী শিশু পার্ক
• হাজীগঞ্জ বড় মসজিদ(৬ষ্ঠ বৃহত্তম)
• প্রাচীন স্থানসমূহে উল্লেখিত স্থান
• মেঘনা-পদ্মার চর
• ফাইভ স্টার পার্ক
• গুরুর চর
• রূপসা জমিদার বাড়ী

কৃতী ব্যক্তিত্ব
• মিজানুর রহমান চৌধুরী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী
• লে. কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরী (৮ নং সেক্টর কমান্ডার)
• ডা. দীপু মনি-পররাষ্ট্র মন্ত্রী
• মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম, বীর উত্তম (১ নং সেক্টর কমান্ডার),সংসদ সদস্য
• ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীর, – সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
• হাশেম খান, বরেণ্য চিত্রশিল্পী
• এম বি মানিক চিত্র পরিচালক, (বিএফডিসি)
• নাসির উদ্দিন, সম্পাদক, সওগাত
• নূরজাহান বেগম, সম্পাদক, মাসিক বেগম
• মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া(বীর বিক্রম) মন্ত্রী
• নুরুল হুদা-প্রাক্তন মন্ত্রী
• ঢালী আল মামুন চিত্রশিল্পী
• বোরহান উদ্দিন খান জাহাঙ্গীর
• দিলদার, অভিনেতা
• দিলারা জামান, অভিনেত্রী
• এসডি রুবেল
• শাইখ সিরাজ, গণ মাধ্যম ব্যক্তিত্ব, চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তা প্রধান
• কবির বকুল, গীতিকার ও সাংবাদিক
• সাদেক বাচ্চু (মাহবুব আহমেদ সাদেক বাচ্চু ) বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম খলঅভিনেতা।
• কবির বকুল
• সুজিত রায় নন্দী, সদস্য, আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি
• ড. শামছুল হক ভূঁইয়া, সংসদ সদস্য
• হাশেম খান, শিল্পী
• কারী মাওলানা বেলায়েত হুসাইন (নুরানী শিক্ষা পদ্ধতির আবিস্কারক )

বিবিধ
পত্র-পত্রিকা
• দৈনিক পত্রিকা: ১৩টি; চাঁদপুর কণ্ঠ, চাঁদপুর দর্পণ, চাঁদপুর বার্তা, চাঁদপুর প্রবাহ, ইলশেপাড়, চাঁদপুর সংবাদ, চাঁদপুর দিগন্ত, আলোকিত চাঁদপুর, চাঁদপুর খবর, মেঘনাবার্তা, ইলশেপাড়, চাঁদপুর সময়, সুদীপ্ত চাঁদপুর
• অনলাইন পত্রিকা: ৪টি; চাঁদপুর টাইমস, চাঁদপুর নিউজ, চাঁদপুর ওয়েব, চাঁদপুর রিপোর্ট
• অনলাইন টেলিভশন : ০১টি; চাঁদপুর টেলিভশন।
• সাপ্তাহিক পত্রিকা: ৭টি;
• মাসিক পত্রিকা: ৪টি।