ড. সোহেল আহম্মেদ: একশ’ বছর আগে ‘স্প্যানিশ ফ্লু’ মহামারিতে মৃত্যু হয়েছিল অন্তত পাঁচ কোটি মানুষের যা সে সময়ের মোট জনসংখ্যার প্রায় আড়াই শতাংশ। করোনাভাইরাস মহামারিতে মৃত্যুর হার সে পর্যায়ে পৌঁছালে প্রাণ যাবে অন্তত ২০ কোটি মানুষের, আক্রান্ত হবে দুইশ’ কোটি। না, এমন একটা পরিস্থিতির কথা ভাবতে চাই না। ১৯১৮ ও ২০২০ সালের মধ্যে পার্থক্য অনেক। পার্সটুডে।
১৯১৮ সালে মহামারি ছড়িয়ে পড়েছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে,এখন সে ধরণের মহাযুদ্ধের মধ্যে আমরা নেই। অবশ্য করোনা মহামারির মধ্যেও ভ্রাতৃঘাতী যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মতো ঔদ্ধত্য দেখাচ্ছে কোনো কোনো রাষ্ট্র, এখনও প্রাণ হারাচ্ছে অসংখ্য নিরপরাধ মানুষ। নিজেদের ক্ষমতার দম্ভ প্রদর্শন করতেই চলছে এসব ভ্রাতৃঘাতী যুদ্ধ। মহামারির মধ্যেও দম্ভ প্রদর্শন সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে চরম ঔদ্ধত্যের পর্যায়ভুক্ত। ধর্মীয় দৃষ্টিতে করোনাভাইরাসের মতো মহামারি হচ্ছে মানুষের চরম দাম্ভিকতা এবং ঔদ্ধত্যের পরিণাম। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ বাধিয়ে এ ধরণের ঔদ্ধত্য দেখিয়েছিল তৎকালীন কিছু দাম্ভিক শক্তি। কেড়ে নিয়েছিল কোটি কোটি নিরপরাধ মানুষের প্রাণ। এখনও নানা অঙ্গনে এ ধরণের দাম্ভিকতা ও ঔদ্ধত্য বিদ্যমান। এর অবসান না হলে ভবিষ্যতে মানব জাতিকে আরও নতুন নতুন মহামারির মোকাবেলা করতে হবে। শুধু তাই নয়, চলমান মহামারিও আরো ভয়ানক রূপ নিতে পারে।
সৃষ্টিকর্তা মানব জাতিকে নানাভাবে সতর্ক করেন। দম্ভ ও আত্মতৃপ্তির তন্দ্রা থেকে মানুষকে জাগিয়ে তোলার জন্য বর্তমান মহামারিকে আল্লাহর পক্ষ থেকে ছোট্ট একটা চপেটাঘাতও বলা যেতে পারে। মানুষ চাইলেই যে সব কিছু করতে পারে না, এক আণুবীক্ষণিক জীব যে স্বল্প সময়ের মধ্যে মার্কিন সাম্রাজ্যেও মৃত্যুর মহামিছিল বয়ে দিতে পারে তা এখন সবাই বুঝতে পারছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদাহরণ দিচ্ছি কারণ তারা নিজেদেরকে জ্ঞান-বিজ্ঞান, অর্থ-সম্পদ, শক্তি ও ক্ষমতার দিক থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ মনে করে। মার্কিন সরকার বিভিন্ন সময় নানাভাবে এটা বুঝিয়েছে তাদের নাগরিকের জীবনের মূল্য অন্য দেশগুলোর নাগরিকের তুলনায় অনেক বেশি। এমন মনোভাবের কারণেই টুইন টাওয়ারে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের হামলায় কয়েক হাজার মার্কিন নাগরিকের প্রাণহানির বদলা হিসেবে আফগানিস্তানের মতো একটি বিশাল দেশকে প্রায় বধ্যভূমিতে পরিণত করেছে তারা। আণুবীক্ষণিক জীব করোনাভাইরাস গত কয়েক মাসে প্রাণ নিয়েছে প্রায় দেড় লাখ মার্কিন নাগরিকের। কিন্তু এই করোনাভাইরাসের সামনে বিশ্বের অন্যদের মতো মার্কিন প্রশাসনও অসহায়। তারা নীরবে কেবল মৃতের সংখ্যা গণনা ও তা নথিভুক্ত করে চলেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো কিছু দাম্ভিক শক্তির অহংকার ও ঔদ্ধত্যের পরিণতি আজ আমাদের সবাইকে ভোগাচ্ছে। স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসহ নানা ক্ষেত্রে প্রশংসনীয় বৈজ্ঞানিক উৎকর্ষ আমেরিকা ও ইউরোপকে চরমভাবে দাম্ভিক করে তুলেছিল। জ্ঞানবিজ্ঞানের উন্নতিকে হাতিয়ার বানিয়ে এখনও নাস্তিক্যবাদের প্রচার চলছে। তারা অদৃশ্য কোনো কিছুকেই বিশ্বাস করে না। করোনাভাইরাসকে বিশ্বাস করে কারণ মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে সেটাকে দেখা যায়। আজ যদি মাইক্রোস্কোপ আবিষ্কার না হতো তাহলে তারা করোনাভাইরাসের অস্তিত্বকেও অস্বীকার করত। মাইক্রোস্কোপ আবিষ্কৃত হওয়ার আগ পর্যন্ত কোনো ভাইরাসকেই দেখার ক্ষমতা মানুষের ছিল না। সুদূর অতীতেও জ্ঞান-বিজ্ঞানে উন্নতির কারণে মানুষের দাম্ভিক ও অহংকারী হয়ে ওঠার ঘটনা ঘটেছে। পবিত্র কুরআনের সূরা গাফির বা আল-মুমিনের ৮৩ নম্বর আয়াতে এ ধরণের দাম্ভিকতার ইতিহাসের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। এই আয়াতে বলা হচ্ছে,‘যখন তাদের সামনে স্পষ্ট নিদর্শনসহ তাদের রাসূল আসলেন তখন তারা নিজেদের জ্ঞানের দম্ভ করল। কিন্তু তারা যা নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত (সেটাই) তাদেরকে বেষ্টন করল।’
প্রশ্ন উঠতে পারে, দাম্ভিক শক্তিগুলোর অপরাধের পরিণতি কেন অন্যেরা ভোগ করবে? উত্তর একটাই-এসব শক্তির দম্ভ ও ঔদ্ধত্য থামাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছি আমরা। কবির ভাষায় ‘অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে তব ঘৃণা যেন তারে তৃণসম দহে’। অর্থাৎ অন্যায়কারী এবং অন্যায় সহ্যকারী উভয়েই সমান অপরাধী। পবিত্র কুরআনে যেসব বিষয়ে সরাসরি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো-মানুষকে সৎ পথে আহ্বান জানাতে হবে এবং অসৎ কাজে নিষেধ করতে হবে। সূরা আল-ইমরানের ১১০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমাদেরকে উত্তম জাতি হিসেবে সৃষ্টি করা হয়েছে। তোমাদের কাজ হলো মানুষকে সৎ পথে আহবান করবে এবং অন্যায় ও পাপ কাজ থেকে বিরত রাখবে।’ এ কারণে নিজে সৎ থাকার পাশাপাশি অন্যদেরকেও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করা প্রত্যেক মানুষের অবশ্যপালনীয় কর্তব্য। ইসলামি পরিভাষায় এটিও একটি ফরজ কাজ। কিন্তু এই দায়িত্বের বিষয়ে বেশির ভাগ মানুষ উদাসীন। এ কারণে বর্তমান বিশ্বে অন্যায় ও অপকর্মের মাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। চলছে নির্বিচার রক্তপাত, চলছে বেলাল্লাপনা।
গত দুই দশকে ইসলাম ধর্মের অনুসারী হওয়ার কারণে প্রাণ গেছে কোটি কোটি মানুষের। ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার পর নানা কৌশলে কয়েক কোটি মুসলমানকে হত্যা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। অস্ট্রেলিয়ার প্রখ্যাত অধ্যাপক গিডেয়ন পোলিয়া বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করে দেখিয়েছেন, ৯/১১-পরবর্তী বিভিন্ন যুদ্ধে তিন কোটি ২০ লাখ মুসলমানের প্রাণ নিভে গেছে। অস্ত্র ব্যবসা জমজমাট রাখতে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে যুদ্ধ বাধানো হচ্ছে। কোনো কোনো দেশে ভোটের মাধ্যমে এমন ব্যক্তিদেরকে ক্ষমতার শীর্ষে আনা হচ্ছে যারা স্বীকৃত অপরাধী। ফিলিস্তিনে ইহুদিবাদীদের জবর-দখলকে বৈধতা দেওয়া হচ্ছে। অন্যায়ের প্রতিবাদকারী দেশ ও সংস্থার বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধভাবে যুদ্ধ ও অবরোধ চাপিয়ে দিচ্ছে অপরাধী চক্র। এসব কিছু দেখেও প্রতিবাদমুখর হচ্ছে না বিশ্বের বেশির ভাগ মানুষ। কোনো কোনো ক্ষেত্রে উল্টো অন্যায় চালিয়ে যেতে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। হিসাব করলে দেখা যায় বিশ্বে এখনও অপরাধীদের দলই ভারী।
এই মুহূর্তে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যখন গোটা মানবজাতিকে প্রতিনিয়ত লড়াই করতে হচ্ছে,মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় যখন ছন্দপতন ঘটেছে তখনও যুদ্ধের দামামা বাজাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো কয়েকটি দেশ। অচেনা শত্রুর আক্রমণ হলে পশুরাও পারস্পরিক ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে তা মোকাবেলার চেষ্টা চালায়। কিন্তু করোনাভাইরাসের মতো অচেনা শত্রুর আক্রমণের পর মানব সমাজে উল্টো চিত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সমাজ ও রাষ্ট্রে দ্বন্দ্ব-সংঘাত আগের চেয়ে বেড়েছে। গত একশ’ বছরের ইতিহাসে বিশ্ব আর কখনোই স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে এমন চরম সংকটে পড়েনি। এই সংকটে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু মার্কিন সরকার এই প্রতিষ্ঠানকে অকেজো করে দেওয়ার সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে। মানবতার শত্রু না হলে কেউ কি এমন কাজ করতে পারে? এখানেও কাজ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দম্ভ ও ঔদ্ধত্য। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে প্রতিশ্রুত অর্থ দেওয়া বন্ধের মাধ্যমে সবাইকে বুঝাতে চেয়েছেন, তার কথায় ওঠবস না করলে কাউকে টিকে থাকতে দেওয়া হবে না, এমনকি কোনো বিশ্ব সংস্থাকেও না। মার্কিন এই দাম্ভিকতার বিরুদ্ধেও বিশ্বকে খুব একটা সোচ্চার হতে দেখা যায়নি।
যারা ধর্মকে খুব একটা গুরুত্ব দিতে চান না তারাও এখন এ কথা স্বীকার করছেন যে,করোনা মহামারি মানুষেরই কর্মফল। কেউ কেউ এটাকে প্রকৃতির প্রতিশোধ হিসেবেও গণ্য করছেন। তারা বলছেন, বর্তমান মানবজাতি প্রকৃতির জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে। এ কারণে প্রকৃতিই মানবজাতিকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিতে চাইছে। যুগে যুগে বহু প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেছে, কারণ তারা প্রকৃতির জন্য কোনো কল্যাণ বয়ে আনতে পারে নি বরং হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এ ক্ষেত্রে ডাইনোসরের উদাহরণ তুলে ধরা হচ্ছে। ডাইনোসর প্রকৃতির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ানোয় প্রকৃতিই তাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিয়েছে বলে তারা মনে করেন। এসব বক্তব্যেরও গভীরতা রয়েছে। প্রকৃতির সঙ্গে যে অবিচার তারও উৎস মানুষের দম্ভ ও অহংকার তথা কোনো কিছুকেই পরোয়া না করার মানসিকতা। বর্তমানে প্রাণ-প্রকৃতির জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর কার্বন নিঃসরণকারীদের তালিকার শীর্ষে রয়েছে উন্নত দেশগুলো। নানা দেশে সমকামিতার মতো প্রকৃতি বিরোধী কাজেরও স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে রাষ্ট্রীয়ভাবে।
পৃথিবী হচ্ছে প্রতিটি মানুষের জন্য পরীক্ষা ক্ষেত্র। করোনা পরিস্থিতিও আমাদের জন্য এক ধরণের পরীক্ষা। স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মেনে নিজেকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি অন্যদেরকে সুস্থ থাকার সুযোগ দিয়ে এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। এর পাশাপাশি তওবা করে এই মহামারি থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা উচিৎ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে অনেকের মধ্যেই অনীহা লক্ষ্য করা যাচ্ছে যা কোনো ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মনে রাখতে হবে, আপনার বা আমার অবহেলার কারণে কেউ যদি এই রোগে আক্রান্ত হন তাহলে আমাদেরকে এর জন্য পরকালে জবাবদিহি করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এখন হাক্কুল ইবাদ বা বান্দার অধিকার বাস্তবায়নের পর্যায়ভুক্ত। আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য বড় শক্তিকে নানা অপরাধ থেকে বিরত রাখতে না পেরে যে পাপ করছি তা হয়তো আল্লাহ মাফ করে দিতে পারেন। কিন্তু সরাসরি অন্যের অধিকার নষ্ট করলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ক্ষমা না করা পর্যন্ত আল্লাহ তা মাফ করবেন না। অনেকে বান্দার হক আদায় বলতে কেবল আর্থিক ঋণ পরিশোধকে বুঝে থাকেন। আসলে নানা ক্ষেত্রে অন্যের অধিকার লঙ্ঘন করে আমরা ঋণী হতে পারি। এই ঋণ থেকে মুক্তি পাওয়া অনেক বেশি কঠিন।
ইসলামি বর্ণনায় এসেছে,বিশ্ব মানবতার আদর্শ হজরত মুহাম্মাদ (স.) তখন খুব অসুস্থ। এ অবস্থাতেও অন্যদের সহযোগিতায় অনেক কষ্টে একবার মসজিদে গেলেন। সেখানে সব মুসল্লির কাছে জানতে চাইলেন, উনার কাছে কারো কোনো দাবি বা পাওনা আছে কিনা। তিনি বললেন, আমি যদি কখনো অন্যায়ভাবে কারো পিঠে চাবুকের আঘাত করে থাকি সেই ব্যক্তিও পাল্টা আঘাতের দাবি তুলতে পারে এবং এখনই এসে আমার পিঠে আঘাত করতে পারে। এই কথা শুনে একজন মুসল্লি উঠে দাঁড়ালেন। বললেন- আমি এ ক্ষেত্রে পাওনাদার। এই বলে লোকটি চাবুক হাতে রাসূলের কাছে চলে গেলেন। তবে কাছে গিয়েই দ্রুত চাবুকটি পাশে রেখে নিচু হয়ে রাসূলের ঘাড়ে চুমু খেলেন এবং কাঁদতে শুরু করলেন। মৃত্যুর কয়েক দিন আগে রাসূল (স.)’র এই আহ্বান প্রমাণ করে অন্যের অধিকার লঙ্ঘিত হলে মৃত্যুর আগেই এ বিষয়ে ফয়সালা করতে হবে। কারণ আল্লাহ কোনো ভাবেই অন্যের অধিকার লঙ্ঘনকারীকে মাফ করবেন না।
করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরও অনেকের দেহে উপসর্গ দেখা দেয় না। কিন্তু এ ধরণের ব্যক্তির মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়াতে পারে। এমনও হতে পারে আমি বা আপনি উপসর্গহীন করোনা রোগী। এ অবস্থায় আমরা যদি মাস্ক না পড়ি এবং সামাজিক দূরত্ব না মানি তাহলে অন্যেরা আক্রান্ত হবে। আর এমনটি হলে আক্রান্ত ব্যক্তির যে ক্ষতি হলো তার দায় আমাদেরকেও বহন করতে হবে। সুস্থ ব্যক্তিকে আক্রান্ত করে তার যে ক্ষতি করা হবে সে বিষয়ে ফয়সালা হতে হবে ওই ব্যক্তির সঙ্গেই, নইলে আল্লাহও তা মাফ করবেন না। আমাদের অবহেলায় ওই ব্যক্তির সুস্থ থাকার অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে, এ কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিই কেবল মাফ করার অধিকার রাখেন।
আশা করছি করোনা (কোভিড-১৯) সংকটে আমরা মুসলিম-অমুসলিম সবাই সৃষ্টিকর্তার শক্তি ও ক্ষমতাকে আরও বেশি উপলব্ধি করতে সক্ষম হব এবং অপরিহার্য দায়িত্ব ও কর্তব্য মেনে নিজেকে রক্ষার পাশাপাশি গোটা মানব জাতিকে রক্ষায় সচেষ্ট হব।
লেখক: রেডিও তেহরানের সিনিয়র সাংবাদিক।